আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সব থানায় স্বচ্ছ কাচের ঘর নির্মাণের সুপারিশ করেছে পুলিশ সংস্কার কমিশন। এই সুপারিশ বাস্তবায়িত হলে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নির্যাতন বন্ধ হবে। এছাড়া বেআইনি সমাবেশ ও শোভাযাত্রা নিয়ন্ত্রণে পুলিশের শক্তি প্রয়োগের সীমা নির্ধারণ, পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার ও আসামিকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের ক্ষেত্রে কিছু নির্দেশনা চেয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ সংস্কার কমিশন।

সফর রাজ হোসেনের নেতৃত্বাধীন পুলিশ সংস্কার কমিশন আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে তাদের সংস্কারের সুপারিশসংবলিত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। সেই প্রতিবেদনে এসব সুপারিশ রয়েছে।

পুলিশ বাহিনী সংস্কারের জন্য ২২টি আইনের সংশোধন ও পরিমার্জন চেয়েছে এই কমিশন। এ বিষয়ে কমিশন প্রধান বলেন, ২ লাখ ২০ হাজারের বেশি পুলিশকে তিন হাজারের বেশি আইন নিয়ে কাজ করতে হয়। সব আইন খুঁটিয়ে দেখা সম্ভব হয়নি। তবে ২২টি আইনের হয় সংশোধন, পরিমার্জন বা কোনো ক্ষেত্রে পরিবর্তন করতে হবে। ওই ২২টি আইনের কোন কোন ক্ষেত্র আমাদের আপত্তি আছে, বলে দিয়েছি; বলে সুপারিশ করেছি।

প্রসঙ্গত, সংস্কার কমিশনের সুপারিশগুলো নিয়ে এখন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। সেই আলোচনার মাধ্যমে যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে, সেসব সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা হবে। ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে এই আলোচনা হবে বলে আজ এক সংবাদ ব্রিফিংয়ের সরকারের দুজন উপদেষ্টা জানিয়েছেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াশিংটনে আলোচনার পর শুল্ক কমতে পারে, আশা অর্থ উপদেষ্টার

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পরে শুল্ক কমে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেন। 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক এখনো চূড়ান্ত নয়, ওয়ান-টু-ওয়ান আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এ লক্ষ্যে আগামীকাল ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের  সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা ৩ দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। আজই বাংলাদেশের কমার্স টিমও রওনা দিচ্ছে। আগামীকাল সকালে বৈঠক। বৈঠকের পর বোঝা যাবে বিষয়টি কোন পর্যায়ে আছে।” 

তিনি আরো বলেন, “এই যে প্রেসিডেন্টের চিঠি এসেছে, এটি এখনো অফিসিয়ালভাবে চূড়ান্ত নয়। ওয়ান-টু-ওয়ান আলোচনা হবে, তারপরই সিদ্ধান্ত হবে। এটি শুধু আমাদের নয়, ১৪টি দেশকে একই ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছে।” 

ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনায় বাংলাদেশের মাত্র ২ শতাংশ শুল্ক হ্রাস পাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেশি— ১২৫ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আমাদের মাত্র ৫ বিলিয়ন। তাই তারা বেশি ছাড় পেয়েছে। আমাদের চেষ্টা থাকবে যুক্তি দেখিয়ে কম শুল্ক আদায়ে সফল হওয়া।”

তিনি আরো জানান, ৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা মোটামুটি ইতিবাচক ছিল বলে জানা গেছে। আগামীকালকের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন নেতৃত্ব দেবেন।

চিঠিতে উল্লিখিত শর্তগুলো পূরণ করা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা সরাসরি মন্তব্য না করলেও বলেন, আলোচনা শেষে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আহরণ মোটামুটি সন্তোষজনক। আগামী বছর শুধু ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়িয়ে নয়, পুরো সিস্টেম পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমাদের ট্যাক্স ক্যাপাসিটি ভালো, কিন্তু তা এখনো পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি।”

ঢাকা/ হাসনাত/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ