ট্রেনের গতি ১০০ কিলোমিটারের নিচে নামলেই ফাটবে বোমা...
Published: 3rd, May 2025 GMT
মুম্বাই থেকে নয়াদিল্লিতে নতুন দ্রুতগতির ট্রেন চালু হবে। মাত্র ১৪ ঘণ্টায় এই পথ পাড়ি দেওয়া যাবে। রেলকর্মী, যাত্রী—সবার কাছেই এ যেন স্বপ্নের মতো। কিন্তু স্বপ্ন দ্রুতই পরিণত হয় দুঃস্বপ্নে, ট্রেনে নাশকতার চেষ্টা করে দুষ্কৃতকারী। ১৯৮০ সালে মুক্তি পাওয়া ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ সিনেমার গল্প। রবি চোপড়া পরিচালিত সিনেমাটিতে ছিলেন ধর্মেন্দ্র, বিনোদ খান্না আর জিতেন্দ্র। ট্রেনকে কেন্দ্র করে নির্মিত জমজমাট অ্যাকশন থ্রিলারটি দর্শক টেনেছিল। সে বছরের সপ্তম ব্যবসাসফল হিন্দি সিনেমা ছিল এটি। ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’ অবশ্য পুরোপুরি মৌলিক সিনেমা নয়।
একনজরেসিনেমা: ‘বুলেট ট্রেন এক্সপ্লোশন’
ধরন: অ্যাকশন-থ্রিলার
পরিচালনা: শিনজি হিগুচি
অভিনয়: সুয়োশি কুসানাগি, কানাতা হোসোডা, নন তাকুমি সাইতো
স্ট্রিমিং: নেটফ্লিক্স
রানটাইম: ১৩৪ মিনিট
১৯৭৪ সালের হলিউড ডিজাস্টার সিনেমা ‘দ্য টাওয়ারিং ইনফার্নো’ থেকে প্রবলভাবে অনুপ্রাণিত ছিল এটি। তবে সে যা–ই হোক, ট্রেন সিনেমা নিয়ে দর্শকের আলাদা আগ্রহ আছে, ঠিকঠাক বানাতে পারলে সাধারণ গল্পের সিনেমাও উপভোগ্য হয়ে ওঠে। ট্রেন সিনেমার কথা বলতে গত বছরের হিন্দি সিনেমা ‘কিল’-এর স্মৃতি এখনো টাটকা। নিখিল নাগেশ ভাটের সিনেমাটি দুর্দান্ত অ্যাকশনের জন্য মনে রেখেছেন ভক্তরা। এবার আলাপ করা যাক জাপানি সিনেমা ‘বুলেট ট্রেন এক্সপ্লোশন’ নিয়ে। শিনজি হিগুচি পরিচালিত সিনেমাটি গত ২৩ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছে নেটফ্লিক্সে।
বুলেট ট্রেন ছুটছে। হঠাৎই উড়োফোনে জানা গেল, ট্রেনে বোমা রাখা আছে। গতি ১০০ কিলোমিটারের নিচে নামলেই বিস্ফোরিত হবে সেটি। এ–ই হলো মোটাদাগে সিনেমার গল্প। আরও বিশদে বললে সিনেমার শুরু হয় জাপানের হায়াবুসা স্টেশন থেকে। ৬০ নম্বর ট্রেনটি ছাড়বে টোকিওর উদ্দেশে। যাত্রীদের মধ্যে আছে একদল স্কুলশিক্ষার্থী, ইনফ্লুয়েন্সার, স্ক্যান্ডাল থেকে পালিয়ে বেড়ানো রাজনীতিবিদ। ট্রেন ছাড়ার পরই জানা যায় বোমার খবর। এরপরই রুদ্ধশ্বাস যাত্রার শুরু। এর মধ্যে উড়োফোনে দুষ্কৃতকারী আবার দাবি করে, ১০০ বিলিয়ন ইয়েন দিতে হবে। তবে সেটা সরকার নয়, আসতে হবে সাধারণ জনগণের পকেট থেকে। খবর শুনে ট্রেনে থাকা এক অতি উৎসাহী ইনফ্লুয়েন্সার নেমে পড়েন তহবিল সংগ্রহের কাজে।
`বুলেট ট্রেন এক্সপ্লোশন' সিনেমার দৃশ্য। নেটফ্লিক্স.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্ব সংগীত দিবস উদযাপনে দুই আয়োজন
একটাই দিন। একটি বিশেষ উপলক্ষ। কিন্তু দুইটি ভিন্ন ভেন্যুতে আয়োজনের ভাবনা ছিল একই- ‘সুরের ছোঁয়ায় শান্তি ও সুস্থতা’। ২১ জুন ছিল বিশ্ব সংগীত দিবস। সংগীতের মাধ্যমে বিশ্বজনীন সংহতি, সাম্য ও মানবতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ায় ছিল দিবসের লক্ষ্য।
জাতীয় নাট্যশালায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যানারে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, অন্যদিকে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সৃষ্টি বিশ্বময়’-এর নিবেদনে এক মরমি পরিবেশনা। দুই মঞ্চে দুই রকম সুর, তবে চেতনায় অভিন্ন।
বিশ্ব সংগীত দিবস উপলক্ষে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে শুক্রবার বিকেলে এক আন্তরিক আয়োজন করে ‘সৃষ্টি বিশ্বময়’। যার শিরোনাম ছিল ‘সুরের ছোঁয়ায় শান্তি’। মূল উদ্দেশ্য, সংগীতকে মানুষের কাছে একটি নিরাময় শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা, যাকে ঘিরে গড়ে উঠতে পারে যুদ্ধহীন এক মানবিক সমাজ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব খায়রুল আলম সবুজ। তিনি বলেন, ‘সংগীতের শক্তি এমনই যে, তা হৃদয়ের অন্ধকার দূর করে মননে আলোক ছড়াতে পারে। সংগীতই পারে হানাহানিমুক্ত পৃথিবীর পথে মানুষকে নিয়ে যেতে।’
অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন উদযাপন পর্ষদের আহ্বায়ক সাংবাদিক বাসুদেব ধর ও সদস্যসচিব অলক দাশগুপ্ত। আয়োজনের সূচনায় চর্যাপদের পদ, আবৃত্তি ও আধুনিক বাদ্যযন্ত্রের এক ব্যতিক্রমধর্মী কম্পোজিশন পরিবেশন করেন লাইসা বিনতে কামাল, রত্না দত্ত, সন্দীপা বিশ্বাসসহ একঝাঁক তরুণ শিল্পী। নৃত্য পরিবেশন করেন অংকিতা অথৈ। এছাড়া একক সংগীত, দলীয় পরিবেশনা ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন বর্ষা রাহা, রজত শুভ্র, ফয়সাল আহমেদ, সানোয়ারা জাহান নিতু, ব্যান্ডদল ‘ব্রেথলেস’সহ অনেকেই।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে জাতীয় নাট্যশালায় অনুষ্ঠিত হয় আরেক আয়োজন-‘সুরের সম্মিলন’। সন্ধ্যায় নাট্যশালার সম্মুখে জাতীয় সংগীতের সুর ও বেলুন উড়িয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন। সঙ্গে ছিলেন একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান ও বিশিষ্ট সংগীতশিল্পীরা।
সভাপতির বক্তব্যে ওয়ারেছ হোসেন বলেন, ‘যে দেশে যত বেশি সাংস্কৃতিক চর্চা হয়, সে দেশে যুদ্ধ ও সহিংসতা টিকে থাকতে পারে না। সংগীত মানুষের হৃদয়ের কালো দাগ মুছে দিতে পারে।’
শোভাযাত্রার পর মূল মিলনায়তনে শুরু হয় সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। প্রথমে ছিল যন্ত্রসঙ্গীত ও কণ্ঠসংগীতের কোলাজ পরিবেশনা। এরপর মঞ্চে আসে আদিবাসী ব্যান্ড ‘চিম্বুক’ ও ‘বম শিল্পীগোষ্ঠী’। পরে জনপ্রিয় তারকা শিল্পীদের সমবেত পরিবেশনায় মুখর হয় মিলনায়তন। শেষ পর্বে কোলাজ ব্যান্ডের পরিবেশনায় জমে ওঠে সমাপ্তি অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, বিশ্ব সংগীত দিবসের সূচনা হয় ১৯৮২ সালে ফ্রান্সে, তৎকালীন সংস্কৃতি মন্ত্রী জ্যাক ল্যাং ও সংগীত পরিচালক মরিস ফ্লেয়োরে’র উদ্যোগে। ২১ জুন, গ্রীষ্মের দীর্ঘতম দিনে, সংগীতকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করতে এই দিবস উদযাপন শুরু হয়, যা এখন বিশ্বব্যাপী পালিত হয়।