হায়দরাবাদ দেখাল আইপিএলে এক মৌসুমের রাজা পরেরবার ফকির
Published: 3rd, May 2025 GMT
টি-টোয়েন্টি খেলাটাই এমন। এই মৌসুমে অপরাজেয় তো পরের মৌসুমে অসহায়। আর যদি আইপিএল হয়, তাহলে উপরের তত্ব তো শতভাগ সঠিক। এই ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগটির প্রথম আসরে চ্যাম্পিয়ন ছিল রাজস্থান র্যায়েলস আর টেবিলের শেষ দুই দল ছিল র্যায়াল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ও ডেকেন চার্জার্স হায়দরাবাদ। দ্বিতীয় মৌসুমে ফাইনাল খেলল আগেরবারের তলানির দুই দল, আর সবচেয়ে হতশ্রী খেলে টেবিলে সবার নিচে ছিল রাজস্থান! নেই মৌসুমে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ আবারও সেই তত্বের সত্যতা দিল।
গত মৌসুমের সবচেয়ে ‘এন্টারটেইনিং ক্রিকেট’ খেলা ও রানার্সআপ হায়দরাবাদ এবার ৪ ম্যাচ বাকি থাতেই প্লে’অফ থেকে বাদ পড়ার দ্বারপ্রান্তে। গুজরাট টাইটানসের বিপক্ষে শুক্রবার (২ মে) রাতে ৩৮ রানে হারে প্যাট কামিন্সের হায়দরাবাদ। তারা প্লে’অফের দৌড়ে কাজে-কলমে এখনো টিকে থাকলেও কার্যত বাদ পড়ে গিয়েছে।
শুক্রবার ঘরের মাঠ নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে শুবমান গিল আর জস বাটলারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৬ উইকেটে ২২৪ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করায় গুজরাট। জবাবে ৬ উইকেটে ১৮৬ রান তুলতে পারে হায়দরাবাদ। ম্যাচে দুই ইনিংস মিলিয়ে মোট রান হয়েছে ৪১০। যা আইপিএলের ইতিহাসে এই দুই দলের মধ্যকার কোনো ম্যাচে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড।
আরো পড়ুন:
সুরিয়াবানশি দেখে ফেললেন ক্রিকেট বাস্তবতা
আইপিএলে ম্যাক্সওয়েল অধ্যায়ের ইতি, সুযোগ পাচ্ছেন নতুন মুখ
এই জয়ে ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে গুজরাট। অন্যদিকে সমান ম্যাচে হায়দরাবাদের পয়েন্ট মাত্র ৬। কামিন্সের দলের অবস্থান নিচের দিক থেকে দুই নম্বরে।
টস হেরে ব্যাট করতে নামা গুজরাটের উদ্বোধনী জুটিতে ৮৭ রান তোলেন দুই ওপেনার শুবমান গিল ও সাই সুদর্শন। ফিফটি থেকে মাত্র ২ রান দূরে থাকতে আউট হন সুদর্শন (৪৩ বলে ৪৮)। পার্টনার হতাশ হয়ে ফিরলেও গিল ঠিকই ফিফটি তুলে নেন। ৩৮ বলে ১০ চার ২ ছক্কায় ৭৬ রানের অসাধারণ এক ইনিংস খেলেন। অপ্রত্যাশিত রানআউটের শিকার হন তিনি। ডানহাতি এই ব্যাটারের ফেরায় গুজরাটের দ্বিতীয় উইকেটে ৬২ রানের জুটি ভাঙে।
ইনিংসের মাঝের ওভারগুলোতে ঝড় তোলেন জস বাটলার। ৩৭ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৬৪ রানের মারকুটে ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন তিনি। দলের স্কোর ২০০ পেরিয়ে গেলে ১৯তম ওভারে আউট হন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। জয়দেব উনাদকাতের করা শেষ ওভারে ৩ উইকেট হারায় তারা, এরপরও আসে বিনিময়ে ১২ রান। গুজরাটের দলীয় সংগ্রহ দাঁড়ায় ২২৪ রান।
রান তাড়ায় নেমে শুরুতে ব্যর্থ হায়দরাবাদের ওপেনার ট্রাভিস হেড। ১৬ বলে ২০ রান করে প্রসিধ কৃষ্ণার বলে রশিদ খানের হাতে ক্যাচ হন হেড। এরপর হায়দরাবাদকে আশার আলো দেখান অভিষেক ও অভিষেক শর্মা। ৪১ বলে ৭৪ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেন। যদিও সেটি হায়দরাবাদের কোনো কাজে আসেনি।
অভিষেক আউট হওয়ার পর নিচের দিকে আর কেউ লড়াই করতে পারেননি। সর্বোচ্চ ২৩ রান (১৮) করেন হেনরিখ ক্লাসেন। নিতিশ কুমার রেড্ডি অপরাজিত থাকেন ২১ রানে। বাকিদের কেউ ২০ রানের ঘর স্পর্শ করতে পারেননি। গুজরাটের হয়ে ২টি করে উইকেট দখল করেন মোহাম্মদ সিরাজ ও প্রসিধ কৃষ্ণা।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হ য়দর ব দ উইক ট
এছাড়াও পড়ুন:
দাফনফেরত স্বজনের ওপর ককটেল হামলা
মুন্সীগঞ্জে পুরোনো বিরোধের জেরে নিহত শ্রমিক লীগ কর্মী সানা মাঝির (৪২) লাশ দাফনের পরপরই তাঁর স্বজনদের লক্ষ্য করে ককটেল হামলা হয়েছে। শনিবার বিকেল ৩টার দিকে সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের মধ্য মাকহাটি গ্রামে এ হামলা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, ককটেল হামলার সময় ঘটনাস্থলের অদূরে রজতরেখা নদীর অন্য প্রান্তে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা।
সানা মাঝি মাকহাটি গ্রামের প্রয়াত মোহাম্মদ মাঝির ছেলে। তিনি মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন শ্রমিক লীগ কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্টের পর গ্রাম ছেড়ে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে একই উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের ডেকরাপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে চলে যান।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে মাকহাটি গ্রামের মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়ার ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে সানা মাঝিকে মারধর করে প্রতিপক্ষ। সংবাদ পেয়ে পুলিশ অচেতন অবস্থায় রাত ৩টার দিকে তাঁকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাকহাটি গ্রামের মোহাম্মদ মাঝির পরিবারের সঙ্গে বিরোধ চলছিল শামসুল মাঝির পরিবারের। এর জের ধরে ১৯৯৭ সালে হত্যার শিকার হন মোহাম্মদ মাঝি। এ হত্যার প্রতিক্রিয়ায় ২০০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে খুন হন শামসুল মাঝির ছেলে বিএনপি কর্মী শিপন মাঝি। এ হত্যা মামলায় ২০০৪ সালে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৩ প্রয়াত মোহাম্মদ মাঝির ছেলে খলিল মাঝিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। সানা মাঝি ও তাঁর চার ভাই দীর্ঘদিন কারাগারে ছিলেন। ২০১৬ সালে কারামুক্ত হয়ে গ্রামে ফেরেন তারা। পরে দুই পক্ষের মধ্যে মীমাংসা হয়। তবে শিপন হত্যার ঘটনায় তাঁর ছোট ভাই বাবু মাঝির মনে ক্ষোভ রয়ে যায়। বাবু ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি প্রার্থী। তিনিই বড় ভাই হত্যার প্রতিশোধ নিতে বৃহস্পতিবার রাতে সানা মাঝিকে ডেকে এনে হত্যা করেন বলে এলাকাবাসীর দাবি।
সানা মাঝির পরিবার জানায়, শনিবার সকালে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে লাশের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। দুপুরে লাশ নেওয়া হয় মধ্য মাকহাটি গ্রামের বাড়িতে। জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে গ্রামের সামাজিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়। সেখান থেকে বিকেল ৩টার দিকে স্বজনরা ফেরার সময় তাদের ওপর অর্ধশতাধিক ককটেল ছুড়ে মারা হয়। এতে পুরো গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
নিহত সানার ছোট ভাই আসাদ মাঝির দাবি করেন, বাবু মাঝির সন্ত্রাসী বাহিনী অর্ধশতাধিক ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, এ ঘটনায় সানা মাঝির বড় ভাই হাবু মাঝি বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে শনিবার হত্যা মামলা করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয়েছে বাবু মাঝিকে।
মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফিরোজ কবীর বলেন, স্বজনরা লাশ দাফন শেষে কবরস্থান থেকে ফিরছিলেন। এ সময় তাদের পেছন থেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। কবরস্থানের অদূরে জমিতে প্রতিপক্ষের লোকজন ককটেল ছোড়ে। সেখানে অতিরিক্ত পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।