গাজায় এখন একবেলার খাবার খুঁজে পাওয়া অসম্ভব
Published: 3rd, May 2025 GMT
গাজায় মানবিক সাহায্যের উপর ইসরায়েলি অবরোধ ৬২ দিন ধরে চলছে। ফিলিস্তিনিরা কমিউনিটি রান্নাঘরের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়লেও সেখানে সরবরাহ ফুরিয়ে আসছে। পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে, একবেলার খাবার খুঁজে পাওয়া এখন অসম্ভব হয়ে উঠেছে। শনিবার স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আল-জাজিরা অনলাইন এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজা সিটির বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি আহমেদ আল-নাজ্জার আল জাজিরাকে বলেন, “একবার খাবার খুঁজে পাওয়া এখন অসম্ভব হয়ে উঠেছে। এখানকার মানুষ একের পর এক দাতব্য সংস্থাকে ঘোষণা করতে দেখেছে যে তাদের সরবরাহ শেষ হয়ে গেছে, তারা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দিচ্ছে কারণ তারা .
তিনি বলেন, “মজুদ কমে যাওয়ার ফলে বাজারের দোকানগুলিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যের দাম আকাশছোঁয়া হয়ে গেছে। যদি আপনার টাকা থাকে, তাহলে আপনি সঠিক কিছু খুঁজে পেতে পারেন। তবে বেশিরভাগ মানুষেরই সেই সামর্থ্য নেই।”
নাজ্জার বলেন, “এটা হতাশাজনক এবং ক্ষোভজনক যে বেড়ার ওপারে ট্রাক দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। অথচ মানুষ, এমনকি শিশুরাও ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে রয়েছে।”
গাজা সিটি থেকে আল-জাজিরার সংবাদদাতা বলেছেন, “আমরা এখানে ধ্বংসস্তূপে ভরা রাস্তায় মানুষদের ঘোরাফেরা করতে দেখি, আর গাজা শহরে আবর্জনার মধ্য দিয়ে শিশুদের যাতায়াত, টিনজাত খাবারের অবশিষ্টাংশ অথবা আগুন লাগানোর জন্য কার্ডবোর্ডের সন্ধান করা খুবই দুঃখজনক ও হৃদয়বিদারক। এখানে মানুষের জন্য খাবার সরবরাহের কোনো লাইন নেই। তারা অতীতে যা কিছু সংগ্রহ করেছে তা দিয়েই জীবনযাপন করছে।”
ঢাকা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বোরো ধানে নামছে চালের দর, উত্তাপ সবজির বাজারে
বোরো মৌসুমের ধান কাটা শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে বাজারে এ জাতের চাল আসতে শুরু করায় সরু বা মিনিকেট চালের দাম কিছুটা কমতির দিকে। গত সপ্তাহের তুলনায় কেজিতে কমেছে সর্বোচ্চ ৪ টাকা পর্যন্ত। তবে গ্রীষ্ম মৌসুমে সরবরাহ কম থাকায় বেশিরভাগ সবজির দর তুলনামূলক বেশি। ফলে দীর্ঘ সময় পর নিত্যপণ্যের বাজারে চালের দাম কিছুটা কমলেও ক্রেতাকে ভোগাচ্ছে সবজি।
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, রামপুরা ও নাখালপাড়া সমিতির বাজার ঘুরে এসব তথ্য জানা যায়।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার ফলন ভালো হয়েছে বোরো ধানের। সরবরাহ বাড়ায় নতুন সরু বা মিনিকেট চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৪ থেকে ৮২ টাকায়। তবে এ মানের পুরোনো চালের কেজি এখনও ৭৮ থেকে ৮৬ টাকা। মোটা চালের দর কেজিতে দুই টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। মাঝারি চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫৭ থেকে ৬৫ টাকায়। এ মানের চালের কেজিতেও এক-দুই টাকা করে কমেছে।
বেশ কয়েক মাস স্থির থাকার পর চালের দর কমছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কারওয়ান বাজারের নোয়াখালী রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. শাওন সমকালকে বলেন, নতুন চালের দাম প্রতি বস্তায় (২৫ কেজি) ১০০ থেকে ২০০ টাকা কমেছে। ফলে খুচরা বাজারেও দাম কমছে। সরবরাহ বাড়লে আরও কমতে পারে দাম। তবে পুরোনো মিনিকেটের দাম এখনও কিছুটা বেশি।
তবে সবজি কিনতে গেলে ক্রেতাকে হতাশ হতে হচ্ছে। বেশিরভাগ সবজি কিনতে খরচ করতে হচ্ছে কেজিতে অন্তত ৬০ টাকা। কোনোটির দর শতক পার হয়েছে। মাসখানেক ধরে সবজির বাজার চড়া।
বিক্রেতারা বলছেন, শীতকালীন সবজির মৌসুম শেষ হয়ে যাওয়ায় সরবরাহ কমে গেছে। গ্রীষ্মের সবজি আসা শুরু হয়েছে। তবে এসব সবজির দর এ সময় কিছুটা বেশি থাকে।
খুচরা বাজার ঘুরে দেখা যায়, পেঁপে, পটল, ঢ্যাঁড়শ, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল ও ঝিঙার কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। উচ্ছে ও বেগুনের কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা। তবে বরবটি ও কাঁকরোলের মতো গ্রীষ্মকালীন সবজি কিনতে ক্রেতাকে কেজিপ্রতি খরচ করতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। এছাড়া টমেটো ৩০ থেকে ৪০, শসা ৬০ থেকে ৭০ ও গাজর ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
কাঁচামরিচের দরও কিছুটা বেড়েছে। মানভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা। আলুর দর কমেছে। প্রতি কেজি কেনা যাচ্ছে ১৭ থেকে ২০ টাকায়। গত সপ্তাহে কেজি ছিল ২০ থেকে ২২ টাকা। সেই হিসাবে কেজিতে কমেছে দুই থেকে তিন টাকা।
গত সপ্তাহের তুলনায় মাছের বাজারে কিছুটা চড়াভাব দেখা যায়। চাষের রুই, তেলাপিয়া ও পাঙাশ কেজিতে বেড়েছে ২০ থেকে ৫০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের রুই ও কাতলা ৩২০ থেকে ৩৬০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ থেকে ২৪০ টাকা ও পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি চাষের চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা এবং নদীর চিংড়ি ৯০০ থেকে এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা যায়। যা গত সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি।
মাসখানেক ধরে পেঁয়াজের বাজারও চড়া। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা।
ডিম-মুরগির দামে অনেকটা স্বস্তি আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ থেকে ১৮০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দর দুই সপ্তাহ আগের তুলনায় কেজিতে অন্তত ৪০ টাকা কম।
প্রায় দুই মাস ধরে ডিমের বাজার ঠান্ডা। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকা। তবে ভ্যানে করে কিছুটা ছোট আকারের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।