বিদেশে শিক্ষা চিকিৎসা ফি পাঠানো সহজ করলো বাংলাদেশ ব্যাংক
Published: 4th, May 2025 GMT
দেশের ব্যাংকগুলোকে আন্তর্জাতিক কার্ড প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠানোর অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে করে বিদেশে পড়াশোনা, চিকিৎসা, ভিসা ফিসহ নির্দিষ্ট কিছু খাতে টাকা পাঠানো এখন আরো সহজ হবে।
রবিবার (৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করে।
এর আগে শুধুমাত্র নিজস্ব নামে ইস্যুকৃত আন্তর্জাতিক কার্ড ব্যবহার করে ব্যাংকগুলো এ ধরনের রেমিট্যান্স পাঠাতে পারত। নতুন নির্দেশনায় এই সুযোগকে আরো সম্প্রসারিত করা হয়েছে। এখন থেকে ব্যাংকগুলো আন্তর্জাতিক কার্ড নেটওয়ার্ক-যেমন ভিসা, মাস্টারকার্ড বা ইউনিয়নপের মতো প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে গ্রাহকদের নির্ধারিত খাতে রেমিট্যান্স পাঠানোর সুযোগ দেবে।
আরো পড়ুন:
এবি ব্যাংকের চেয়ারম্যান খায়রুল আলমের পদত্যাগ
অর্থ আত্মসাৎ: খুলনায় নারী ব্যাংক কর্মকর্তা গ্রেপ্তার
বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা সার্কুলারে বলা হয়েছে, এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে সদস্যপদ ফি, তথ্যপ্রযুক্তি-সংক্রান্ত ব্যয়, বিদেশে শিক্ষার খরচ, ভিসা ফি, প্রশিক্ষণের নিবন্ধন ফি, চিকিৎসা খরচসহ কিছু নির্দিষ্ট খাতে বৈধভাবে রেমিট্যান্স পাঠানো যাবে।
ব্যবসায়ী ও প্রযুক্তি খাত সংশ্লিষ্টরা এই উদ্যোগকে সময়োপযোগী হিসেবে উল্লেখ করে জানান, এতে রেমিট্যান্স পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ ও কম খরচে সম্পন্ন করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি এটি একটি বিকল্প চ্যানেল হিসেবে কাজ করবে। এর ফলে বৈদেশিক লেনদেন ব্যবস্থায় স্বচ্ছতার সঙ্গে সহজ ও দ্রুত হবে, যা ব্যাংকিং খাতকে আরও গতিশীল এবং আধুনিক করে তুলবে।
ঢাকা/এনএফ/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যন্ত্রের কাছে মানব পরীক্ষা!
সময়ের বদলে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যেন কিছুতেই ছাড় দেবে না। নিজেকে যন্ত্রের কাছে প্রতিনিয়ত প্রমাণ করতে হবে– আমরা মানুষ, এআই নই। বলতে গেলে অদৃশ্য যুদ্ধে নেমেছে সব এআই। আর কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি মানবসভ্যতা। ব্যক্তি থেকে দপ্তর, উৎপাদন, উন্নয়ন– সবখানে যন্ত্রের কাছে নির্ভরতা এখন দৃশ্যমান। লিখেছেন সাব্বিন হাসান
বিশেষ কিছু তথ্য জানতে চাইলে প্রধান মাধ্যম এখন সার্চ ইঞ্জিন। আগ্রহী অনেকের খুঁতখুঁতে স্বভাবের কারণে গবেষণাকেন্দ্রিক বিশেষ কিছু সাইটে ঢুঁ না দিলে যেন সঠিক তথ্যের খোঁজ মেলে না। অনেক সাইটে গিয়ে প্রথমেই থমকে যেতে হয় প্রবেশাধিকারে। দৃশ্যমান ছোট চেকবক্সে ভাসমান হয়, আপনি যে রোবট নন, তা প্রমাণ করতে বক্সে ক্লিক করুন। অনেক সময় সাইট ভাইরাস আক্রান্ত হলে নিরাপত্তা নিশ্চিতে এমন অপশন জুড়ে দেয় সাইট কর্তৃপক্ষ। তখনও যন্ত্রের কাছে মানুষকে প্রমাণ দিতে হয় যে সত্যিকার অর্থেই মানব বুদ্ধির অংশ, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নয়।
যান্ত্রিক নির্দেশনা মেনে বা আরও স্পষ্ট কথায় যন্ত্রের কাছে নিজের মনুষ্যত্বের প্রমাণ দেওয়ার পরই ওই ধরনের সাইটে প্রবেশের অনুমতি পাওয়া যায়। কিছুদিন আগে এমন পরীক্ষার কাজ আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাঁধে দায়িত্ব দিয়ে নির্ভার ছিল বহু ওয়েবসাইট নির্মাতারা। ভবিষ্যতে এমন দায়িত্বের পরিধি আরও বহুমাত্রিক হতে চলেছে, তা প্রায় নিশ্চিত করেই বলেছেন গবেষকরা। চাকরি বা নিয়োগের পরিসরে হাজারো পদে আবেদনকারীর মধ্যে কোন ব্যক্তি নির্দিষ্ট পদের জন্য বিশেষ যোগ্য, অফিস পরিচালনার জন্য কোন পদ্ধতি মেনে চলা উচিত, কর্মীদের নিজেদের কাজে কেমন প্রশিক্ষণ দিলে তা অফিসের সহায়ক হয়– এমন সবকিছুই যেন এবার নিয়ন্ত্রণ করবে যন্ত্র। সাধারণত এগুলো হিউম্যান রিসোর্স (এইচআর) বিভাগের কাজের মধ্যে পড়ে। ইতোমধ্যে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কিছু সংস্থা এমন কাজে এআই প্রযুক্তির পূর্ণ সহায়তা নিতে শুরু করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যে ক্রমান্বয়ে মানুষের কাজের নিয়ন্ত্রক হবে– এমন ভাবনা থেকে গল্প লিখেছেন অনেকে। এর আগে হলিউডের বেশ কিছু সায়েন্স ফিকশন ছবিতে সেসব কর্মযজ্ঞের দৃশ্যায়ন অনেকে দেখেছেন। গল্পই যে এত দ্রুত বাস্তবে জায়গা করে নেবে, তা হয়তো ভাবনায় আসেনি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার গবেষকরা বলছেন, এআই অ্যান্ড জেনারেল লার্নিং, জেনারেটিভ এআই, রোবটিক প্রসেস অটোমেশন (আরপিআই), অ্যাডভান্সড অ্যানালাইসিস অ্যান্ড ডেটা সায়েন্স– এমন ঘরানার প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোনো সংস্থা তার কর্মী নিয়োগে নেওয়া সাক্ষাৎকারের প্রশ্ন ও সদুত্তরের ভিত্তিতে কর্মীর মানসিকতা বিশ্লেষণের কাজ সহজে করতে পারবে। অন্যদিকে, কর্মীর পেরোল হিসাব, অফিসের দাপ্তরিক পরিচালন পদ্ধতি ও অন্যসব নৈমিত্তিক কাজ নির্বিঘ্নে এবং দ্রুত করে দেবে এআই। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসছে, তবে কি এবার ফুরিয়ে যাবে হিউম্যান রিসোর্স বিভাগের প্রয়োজন। অনেকে আগে থেকেই প্রযুক্তি ঘরানার দাপ্তরিক কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সহায়ক শক্তি হিসেবে বেছে নিয়েছে। অ্যাপল, মাইক্রোসফট, স্পেসএক্স, মেটা, গুগল ও ফেসবুক এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। জনসম্পদ বিভাগের প্রধানরা বলছেন, ইতোমধ্যে আমরা দাপ্তরিক কাজে কৃত্রিম প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। যার মাধ্যমে কর্মীদের নিয়োগ ও কর্মপদ্ধতি ঠিকঠাক যাচাই-বাছাই করা আগের তুলনায় সহজ হয়েছে। মানবসম্পদ বিভাগের অনেকের মতে, পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে মানুষ সব সময়ই প্রশ্নবিদ্ধ। কিন্তু যন্ত্র এমন দোষে দুষ্ট নয়, যদি না তাকে ভুল কমান্ড দেওয়া হয়। সে অর্থে এআই প্রযুক্তির নিরপেক্ষ ব্যবহারে নিয়োগের সাক্ষাৎকার নিলে তা প্রশ্নবিদ্ধ হয় না। আমরা এখন অনেকাংশে যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল। তাতে ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে এআই শুধু প্রযুক্তি নয়, বরং মানদণ্ড প্রকাশে নির্ভরযোগ্য ও নিরপেক্ষ মাধ্যম। অদূর ভবিষ্যতে মানবসম্পদ (এইচআর) বিভাগের কাজ হবে শুধু কৌশলগত দিকনির্দেশনা দেওয়া। বাকি কাজ সব যন্ত্রই সম্পাদনা করবে।