কানাডার অর্থনীতিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় পরিবর্তন আনার ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার পর গত শুক্রবার প্রথম সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ঘোষণা দেন।

মার্ক কার্নি বলেন, ‘বড় কিছু করার জন্য আমি রাজনীতি করছি, বড় কিছু হওয়ার জন্য নয়। কানাডাবাসী আমাকে দ্রুত বড় পরিবর্তন আনার অধিকার দিয়েছেন, আমি নিরলসভাবে সেই আস্থার মর্যাদা রক্ষা করব।’

গত সোমবার (২৮ এপ্রিল) কানাডার পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে লিবারেল পার্টির মার্ক কার্নি প্রধানমন্ত্রী হন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোও একই পার্টির। এই নিয়ে টানা চারবার দলটি কানাডা শাসন করছে।

নির্বাচনে লিবারেল পার্টি ১৬৯টি আসন পায়। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য দরকার ছিল ১৭২টি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলেও কার্নি সরকার পার্লামেন্টে যেকোনো আইন সহজে পাস করতে পারবে। দুটি হাড্ডাহাড্ডি নির্বাচনী এলাকায় ভোট পুনর্গণনা করা হয়। এর মধ্যে কুইবেকে হারলেও অন্টারিওতে আরেকটি নতুন আসন পায় লিবারেল পার্টি।

নির্বাচনী প্রচারণায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে শক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন কার্নি। এটা তাঁকে জয় পেতে সহায়তা করেছে।

শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নিজেদের ‘অচলাবস্থাকে তাৎক্ষণিক অগ্রাধিকার’ বলে উল্লেখ করেন কার্নি। তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য ও নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আলোচনার জন্য আগামী মঙ্গলবার আমি ওয়াশিংটনে যাচ্ছি। ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনা করে বিভিন্ন বিষয় ফয়সালা করার চেষ্টা করব।’

কার্নি বলেন, ‘কানাডার নাগরিকেরা আমাকে নির্বাচিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মুখোমুখি দাঁড়ানোর জন্য। আমি মনোযোগ ও দৃঢ় সংকল্প নিয়ে কাজ করব। আমাদের মনোযোগ থাকবে তাৎক্ষণিক বাণিজ্য চাপ মোকাবিলার ওপর। একই সঙ্গে দুটি সার্বভৌম দেশের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সম্পর্কের দিকেও আমরা মনোযোগ দেব।’

তবে ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথম বৈঠক করেই বড় ধরনের পরিবর্তন সম্ভব হবে না বলেও মন্তব্য করেন কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত নেতার অনুসারীদের সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে বিএনপির স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সোহরাব উদ্দিন দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন তাঁর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার রাত ৯টার দিকে শহরের মজমপুর রেলগেটে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে এ বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

সেখানে বিক্ষোভকারীরা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভের পাশাপাশি প্রতিবাদ মিছিলও করেন। এ ছাড়া সদর উপজেলার মধুপুর-লক্ষীপুর এলাকাতেও সোহরাব উদ্দিনের সমর্থকেরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।

বিক্ষোভকারী নেতা-কর্মীদের দাবি, সোহরাব উদ্দিন কুষ্টিয়া-৩ আসনের তিনবারের সংসদ সদস্য। তিনি দীর্ঘদিন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বদলে এখানে অন্য কাউকে প্রার্থী হিসেবে মেনে নেওয়া হবে না। তাই অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সোহরাব উদ্দিনকে পুনরায় মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।

এর আগে সোমবার বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব জাকির হোসেন সরকার।

এ বিষয়ে মনোনয়নবঞ্চিত সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘শুনেছি আমার সমর্থকেরা বিক্ষোভ করছেন। আমি শহরের বাইরে আছি।’ এর বেশি কথা বলেননি তিনি।

জানতে চাইলে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী জাকির হোসেন সরকার বলেন, কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যিনি মনোনয়ন পাবেন, তাঁর পক্ষে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তবে এ নির্দেশনা যদি কেউ না মানেন, তাহলে কেন্দ্র ব্যবস্থা নেবে।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশারফ হাসেন বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থতি নিয়ন্ত্রণ করেছি।’

কুষ্টিয়ার অন্য তিনটি সংসদীয় আসনে বিএনপির প্রার্থীরা হলেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজা আহম্মেদ বাচ্চু মোল্লা, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভোড়ামারা) আসনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী, কুষ্টিয়া-৪ (খোকসা-কুমারখালী) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ