রাউজানে এবার তিনতলা বাড়ির কক্ষে গুলিবিদ্ধ হলেন যুবদল কর্মীর স্ত্রী
Published: 5th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের রাউজানে তিনতলা বাড়ির কক্ষে এবার গুলিবিদ্ধ হয়েছেন জাহানারা বেগম নামের (৩৫) একজন নারী। আজ সোমবার সকালে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নিরামিষ পাড়া এলাকার স্বামীর বাড়িটির তিনতলার একটি কক্ষে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। গুলিবিদ্ধ জাহানারা ওই গ্রামের যুবদল কর্মী মুহাম্মদ লোকমানের স্ত্রী। লোকমানের বিরুদ্ধে গুলি করে হত্যার চেষ্টা, হামলা, গোলাগুলিসহ পাঁচটি মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ওই নারী ঘরে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর স্বজনেরা তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছেন। তিনি সেখানে চিকিৎসাধীন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ওই নারীর গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনার ভিন্ন ভিন্ন ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। বাসিন্দাদের অনেকেই বলছেন, পারিবারিক কলহের জেরে ওই নারী নিজ শোবার কক্ষে গুলিবিদ্ধ হন। তাঁর স্বামীই তাঁকে গুলি করতে পারেন।
আবার পুলিশ বলছে, বাড়িটির বাসিন্দারা কেউই এ বিষয়ে কথা বলতে চাইছেন না। বাইরে থেকেও ওই বাড়ি লক্ষ্য করে গোলাগুলি হতে পারে বলে ধারণা করছেন তাঁরা।
পুলিশ জানায়, বাড়িটি তিনতলা। ওই নারী স্বামী–সন্তানসহ থাকেন তিনতলার একটি ফ্ল্যাটে। ওই ফ্ল্যাটের যে কক্ষে গুলিবিদ্ধ হন ওই নারী, সেটি পুলিশ গিয়ে তালাবদ্ধ পেয়েছে। দোতলা ও নিচতলার বাসিন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেও কোনো সঠিক তথ্য পায়নি তারা।
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে যুবদল কর্মী মুহাম্মদ লোকমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণে তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, সকালে ওই বাড়িতে পুলিশ গেলেও কক্ষটি তালা দেওয়া পাওয়া যায়। কেউ বলছে পারিবারিক কলহ, আবার কেউ বলছে বাইরে থেকে ওই বাড়ি লক্ষ্য করে একদল সন্ত্রাসী গুলি ছুড়েছে। ওই নারীর স্বামী যুবদলের রাজনীতিতে সক্রিয় আছেন। তবে এলাকায় সন্ত্রাসী হিসেবেও পরিচিত। তাঁর নামে পাঁচটির মতো মামলা আছে থানায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
সুনামগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হওয়ার প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরে পৃথক এই কর্মসূচি পালিত হয়।
গতকাল বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের পাশে যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ভর্তি হয়ে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষার্থী স্নেহা চক্রবর্তী, সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা জাহান ওরফে খুশি ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম (৫৫) নিহত হন।
আজ সকালে সুনামগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর মোড়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে অবস্থা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এখানে ‘কথায় কথায় অবরোধ, এখন তোমার কোথায় বোধ’, ‘আর কত খুশি মরলে, প্রশাসনের টনক নড়বে’, ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাহিরে’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়। কর্মসূচি চলাকালে সড়কে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা ফিটনেসবিহীন যান চলাচলে বাধা না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে সড়কে অবস্থান নিয়ে বেলা একটা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন তাঁরা।
কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাকবিল হোসেন, জাকারিয়া নাইম, রাহাত আহমেদ, আশরাফ হোসেন; টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী হুমায়ুন আহমদ, শান্ত রায়, সুমাইয়া আক্তার, আমিন উদ্দিন, পূর্বা তালুকদার, তাহমিদা জাহান, বুশরা আক্তার প্রমুখ।
আরও পড়ুনবিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শেষে মেয়েকে তুলে দেন অটোরিকশায়, ১০ মিনিট পর পেলেন মৃত্যুর খবর১৮ ঘণ্টা আগেবক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে এখন প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ প্রশাসন, পুলিশ উদাসীন। এই সড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি চলে। অদক্ষ চালকেরা গাড়ি চালান। কিন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অথচ তুচ্ছ কোনো কিছু অজুহাত পেলেই পরিবহনশ্রমিকেরা ধর্মঘট ডেকে মানুষকে ভোহান্তিতে ফেলেন। সড়কে এসব হত্যা বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থী স্নেহা, আফসানার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে একই দাবিতে মানববন্ধন করে বিশ্বজন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এরপর একই স্থানে মানববন্ধন করে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা শাখা। এসব কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, নিহত শিক্ষার্থী আফসানা জাহানের মামা সাইফুল ইসলাম (ছদরুল), সাংবাদিক লতিফুর রহমান ও মাহবুবুর রহমান পীর, শিক্ষক শাহিনা চৌধুরী, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা ওবায়দুল হক, উন্নয়নকর্মী সালেহিন চৌধুরী, বিশ্বজন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উপদেষ্টা নুরুল হাসান আতাহের, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কর্ণ বাবু দাস প্রমুখ।
আরও পড়ুনজন্মদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, ব্যাগে ছিল সহপাঠীদের দেওয়া উপহার৪ ঘণ্টা আগেসুনামগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজনের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন। আজ দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে