কুয়েটে শিক্ষকদের কর্মবিরতি অব্যাহত, ক্লাস শুরু করার আকুতি শিক্ষার্থীদের
Published: 6th, May 2025 GMT
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) অচলাবস্থা চলছেই। শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতিতে অনড় রয়েছেন শিক্ষকেরা। ৪৪ দিন বন্ধের পর আজ মঙ্গলবার তৃতীয় দিনের মতো শিক্ষকেরা ক্লাসে যাননি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে কুয়েট ক্যাম্পাসে গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পাসে সুনসান নীরবতা। ল্যাবরেটরি ও শ্রেণিকক্ষগুলোতে ধুলার আস্তর পড়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে শিক্ষকদের কার্যালয়ে গিয়ে ক্লাস শুরুর জন্য অনুরোধ করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী রাহাতুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ছোট ছোট গ্রুপ করে শিক্ষকদের কাছে যাচ্ছি। স্যারদের বলেছি, আমাদের যদি কোনো ভুল হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের মাফ করে দিন। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবেশে অনিচ্ছাকৃত যেকোনো ভুলের জন্য আমরা ক্ষমা চাচ্ছি। আমরাও ওই সময়ের ঘটনার বিচার চাই। স্যারদের সঙ্গে কোনো অন্যায় কেউ করলে সেটারও বিচার চাই। আমরা চাচ্ছি, বিচারপ্রক্রিয়া চলতে থাকুক, পাশাপাশি ক্লাসটাও চলুক। না হলে বড় ধরনের সেশনজটে পড়তে হবে।’
এদিকে অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হযরত আলী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করছেন। তবে এখনো কোনো ফলপ্রসূ সমাধান আসেনি।
গতকাল সোমবার ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হযরত আলী প্রথমে শিক্ষার্থীদের এবং পরে শিক্ষকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি দ্রুত ক্লাসে ফেরার ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং উভয় পক্ষকে নমনীয় হওয়ার আহ্বান জানান। শিক্ষার্থীদের শিক্ষকদের কাছে পুনরায় ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শও দেন তিনি। এরপর বিকেলে শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্লাস শুরুর দাবিতে উপাচার্যের কাছে লিখিত আবেদন জানান।
শিক্ষকদের অনড় অবস্থান ফুটে উঠেছে শিক্ষক সমিতির গতকালের সাধারণ সভায়। সভা শেষে সমিতির সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন জানান, ২৩ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইউজিসি প্রতিনিধিদলের পক্ষপাতমূলক আচরণে শিক্ষকেরা মর্মাহত ও উপেক্ষিত বোধ করছেন এবং তাঁরা এর তীব্র নিন্দা জানান।
আরও পড়ুনকুয়েটে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৈঠক করছেন ভিসি, শিক্ষক সমিতি কর্মবিরতিতে অনড়২০ ঘণ্টা আগে১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিতে সংঘর্ষে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জেরে উপচার্য পদত্যাগ করেন। ১ মে অধ্যাপক হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।ফারুক হোসেন আরও বলেন, ‘১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত এবং শিক্ষকদের লাঞ্ছিতকারীদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে চিহ্নিত করে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। অন্যথায় শিক্ষকেরা সব ধরনের প্রশাসনিক কার্যক্রম থেকে নিজেদের সরিয়ে রাখবেন। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সাইবার বুলিং, সামাজিক অবমাননা ও মানসিক নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুয়েট নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত পেজ, গ্রুপ ও ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে অবিলম্বে বন্ধসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি জানান তিনি।
গতকাল বিকেলে উপাচার্যের সঙ্গে দীর্ঘ বৈঠকে শিক্ষকেরা ১৮ ফেব্রুয়ারি ও তার পরবর্তী ঘটনাক্রম তুলে ধরেন। শিক্ষক সমিতির সভাপতি সাহিদুল ইসলাম বৈঠকের পর জানান, উপাচার্যের কাছে তাঁরা তাঁদের দাবি পেশ করেছেন এবং দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা ক্লাসে ফিরবেন না।
আরও পড়ুনকুয়েটে ৭৪ দিন পর একাডেমিক কার্যক্রম শুরু, তবে ক্লাসে যাননি শিক্ষকেরা০৪ মে ২০২৫খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে শিক্ষকদের কার্যালয়ে গিয়ে ক্লাস শুরুর অনুরোধ করছেন.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ক ষকদ র ক উপ চ র য ন ত কর করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
কবে আসছে অজয়ের ‘দৃশ্যম থ্রি’?
মালায়ালাম ভাষার বহুল আলোচিত সিনেমা সিরিজ ‘দৃশ্যম’। জিতু জোসেফ পরিচালিত এ সিরিজের প্রথম পার্ট মুক্তি পায় ২০১৩ সালে। দ্বিতীয় পার্ট মুক্তি পায় ২০২১ সালে। এ দুই পার্টে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন মোহনলাল। এ সিরিজের তৃতীয় পার্ট নির্মাণের কাজ চলমান। তৃতীয় কিস্তিতে থাকবেন মোহনলাল। জিতু জোসেফ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
২০১৫ সালে বলিউড পরিচালক নিশিকান্ত কামার ‘দৃশ্যম’ সিনেমা হিন্দি ভাষায় রিমেক করেন। হিন্দি ভাষার রিমেকে অভিনয় করেন অজয় দেবগন, টাবু, শ্রেয়া সরন, অক্ষয় খান্না। ৩৮ কোটি রুপি বাজেটের সিনেমাটি বক্স অফিসে আয় করেছিল ১১০ কোটি রুপি।
এই সিরিজের দ্বিতীয় পার্ট ‘দৃশ্যম-টু’ রিমেক করেছেন পরিচালক অভিষেক পাঠক। অভিনয়শিল্পীরা অপরিবর্তিত রয়েছেন। সিনেমাটি নির্মাণে ব্যয় হয় ৫০ কোটি রুপি। ২০২২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত এ সিনেমাও বক্স অফিসে রাজত্ব করে। এটি আয় করে ৩৪৫ কোটি রুপি। এবার হিন্দি ভাষায় নির্মিত হতে যাচ্ছে ‘দৃশ্যম থ্রি’। পিঙ্কভিলা এ খবর প্রকাশ করেছে।
আরো পড়ুন:
পরের মিসাইলটি হয়তো আমার মা-ভাইকে আঘাত করবে: মান্দানা করিমি
‘আমার বয়স ৫৯, জীবনে গার্লফ্রেন্ড এসেছে ৪ জন’
একটি সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে বলেন, “গান্ধী জয়ন্তী (মহাত্মা গান্ধীর জন্মদিন) দৃশ্যম ফ্যাঞ্চাইজির জন্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তাই ২ অক্টোবর ‘দৃশ্যম থ্রি’ সিনেমার যাত্রা শুরু করবেন। এটি একটি ম্যারাথন শিডিউল, মহারাষ্ট্রের রিয়েল লোকেশনে ৩ মাস ধরে শুটিং হবে। পাশাপাশি স্টুডিওতেও দৃশ্যধারণের কাজ হবে। অজয় দেবগনের শুটিং শিডিউল চূড়ান্ত করা হয়েছে।”
মুক্তির তারিখ জানিয়ে সূত্রটি বলেন, “২০২৬ সালের গান্ধী জয়ন্তীতে (২ অক্টোবর) প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ‘দৃশ্যম থ্রি’ সিনেমা। চিত্রনাট্যের কাজ শেষ। পরিচালক এখন সংলাপ নিয়ে কাজ করছেন। পুরো ‘দৃশ্যম’ পরিবার তৃতীয় কিস্তির জন্য পুনরায় একত্রিত হবে, যা বিজয় সালগাঁওকারের গল্পের সমাপ্তি ঘটাবে। এটি পরিচালনা করছেন অভিষেক পাঠক।”
মালায়ালাম ভাষার ‘দৃশ্যম থ্রি’ সিনেমার শুটিং এখনো শুরু হয়নি। ফলে সংশয় দেখা দিয়েছে, এটি মালায়ালাম ভাষার ‘দৃশ্যম থ্রি’ সিনেমার রিমেক না কি মৌলিক গল্প। কেউ কেউ বলছেন, এটি মালায়লাম সিনেমার রিমেক। পাশাপাশি সময়ে মালায়ালাম ও হিন্দি ভার্সনের শুটিংয়ের পরিকল্পনা করেছেন তারা। সূত্রটি বলছেন, “আগামী জুলাই মাসে এ বিষয়ে চূড়ান্ত তথ্য জানতে পারব।”
ঢাকা/শান্ত