ভারতই সিদ্ধান্ত নিক সংলাপ নাকি ধ্বংসযজ্ঞ: বিলাওয়াল ভুট্টো
Published: 6th, May 2025 GMT
পাকিস্তান পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বলেছেন যে পাকিস্তানের লড়াইয়ের সংকল্প স্বাধীনতার জন্য, সংঘাতের জন্য নয়। ভারতকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। সংলাপ হবে নাকি ধ্বংসযজ্ঞ? সহযোগিতা নাকি মোকাবিলা? মঙ্গলবার জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে তিনি এ কথা বলেছেন।
২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মীরের পহেলগামে এক হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। ভারত কোনো প্রমাণ ছাড়াই এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে। পাকিস্তান দৃঢ়ভাবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তার সেনাবাহিনীকে সামরিক অভিযানের জন্য ‘কার্যকরী স্বাধীনতা’ প্রদান করেছেন। উত্তেজনাকর এই পরিস্থিীততে নয়াদিল্লির যেকোনো দুঃসাহসিক কাজের ‘দ্রুত’ জবাব দেওয়া হবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তান।
মঙ্গলবার জাতীয় পরিষদের অধিবেশনে বক্তৃতা দিতে গিয়ে বিলাওয়াল বলেন, “ওই অপরাধে পাকিস্তানের কোনো হাত ছিল না। আমরা সন্ত্রাসবাদ রপ্তানি করি না, আমরা সন্ত্রাসবাদের শিকার।”
তিনি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ভারতের দাবি অস্বীকার করে বলেন, “কাশ্মীরে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ চালিয়ে কীভাবে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা সম্ভব?”
তিনি বলেন, পাকিস্তান “বিদেশী অর্থায়নে, আদর্শিকভাবে পরিচালিত এবং নির্মমভাবে নির্বিচার সন্ত্রাসবাদের শিকার হচ্ছে। আমরা আমাদের সেনা ও স্কুলের বাচ্চাদের কবর দিয়েছি.
বিলাওয়াল আরো বলেন, “একমাত্র ট্যাঙ্ক দিয়ে সন্ত্রাসবাদকে পরাজিত করা যাবে না, ন্যায়বিচার দিয়ে একে পরাজিত করতে হবে। বুলেট দিয়ে একে উপড়ে ফেলা যাবে না, আশা দিয়ে একে নিরস্ত্র করতে হবে। জাতিগুলোকে দানবীয় করে পরাজিত করা যাবে না, বরং এর জন্মদানকারী অভিযোগগুলোকে মোকাবেলা করে একে পরাজিত করা যাবে।”
তিনি ভারত ও পাকিস্তানকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য ভারতের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর চ্যালেঞ্জের শুরু এটি। সন্ত্রাসের একজন প্রকৃত শিকার কেন জবাবদিহিতা এড়াতে লজ্জা পাবে? যদি না তারা চিন্তিত হয় যে কাশ্মীরে রক্তপাতের জন্য আসল দোষ ইসলামাবাদের নয়, দিল্লির।”
পিপিপি নেতা বলেন, “যদি ভারত শান্তির পথে হাঁটতে চায়, তাহলে তাদের খোলা হাতে আসা উচিত, মুষ্টিবদ্ধভাবে নয়। তাদের তথ্য নিয়ে আসা উচিত, মিথ্যা নয়। আসুন আমরা প্রতিবেশী হিসেবে বসে সত্য কথা বলি। যদি তারা তা না করে... তাহলে তাদের মনে রাখা উচিত যে পাকিস্তানের জনগণকে নতজানু হতে বাধ্য করা হয়নি। পাকিস্তানের জনগণের লড়াই করার দৃঢ় সংকল্প আছে, কারণ আমরা সংঘাত ভালোবাসি না, বরং আমরা স্বাধীনতা ভালোবাসি।”
তিনি বলেন, “ভারতকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। এটা কি সংলাপ হবে নাকি ধ্বংস? সহযোগিতা হবে নাকি সংঘর্ষ?”
ঢাকা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
৩৫ সংগঠন নিয়ে হলো ‘জুলাই ঐক্য’ জোট
বিভিন্ন মতাদর্শের ৩৫টি সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন মিলে ‘জুলাই ঐক্য’ নামে একটি জোট করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে। আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, জুলাই গণহত্যা ও শাপলা চত্বরে গণহত্যার বিচারসহ কিছু দাবি জোরালো করতে জোটটি সরব থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং আপ বাংলাদেশের সংগঠক রাফে সালমান রিফাত, বাংলা বিভাগের মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ, ইসলামিক স্টাডিজের ছাত্র এ বি জুবায়ের কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের আট মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা দেখছি, গণহত্যায় জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া এখনও অনিশ্চিত। সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসরকারি মহলের কিছু অংশ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জোটের মূল উদ্দেশ্য, জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং চব্বিশের গণহত্যা, শাপলা ট্রাজেডি, পিলখানা ট্রাজেডি, গুম-খুন, দুর্নীতিসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরে যেসব অপকর্ম সংগঠিত হয়েছে, তার সঙ্গে জড়িত সবার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি জারি রাখা।’
‘জুলাই ঐক্য’ জোটে রয়েছে আপ বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিয়েশন, জুলাই রেভুলুশনারি জার্নালিস্ট এলায়েন্স, জুলাই রেভুলুশনারি এলায়েন্স, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট এলায়েন্স অব বাংলাদেশ, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-পুনাব, স্টুডেন্ট এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, একতার বাংলাদেশ, রক্তিম জুলাই, সোচ্চার, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই, ফ্যাসিবাদ মুক্ত গণমাধ্যম চাই, এইচআরএসএস, জুলাই বিগ্রেড, স্টুডেন্ট রাইট ওয়াচ, পিপলস অ্যাকটিভিস্ট কোয়ালিশন, আজাদ ফিলিস্তিন।