হেফাজতকে ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান নোটিশ পাঠানো ৬ নারীর
Published: 6th, May 2025 GMT
হেফাজতে ইসলামকে ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন নারীকে গালি দেওয়ার কারণে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো ৬ নারী।
মঙ্গলবার বিকেলে বিবৃতিটি পাঠান লিগ্যাল নোটিশদাতা ছয় নারী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নোটিশদাতা ও এনসিপির নেত্রী সৈয়দা নীলিমা দোলা ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও লেখক উম্মে ফারহানা।
এর আগে নারীকে গালি দেওয়ার কারণে হেফাজত ইসলামকে লিগ্যাল নোটিশ দিয়েছিলেন ৬ নারী। এর প্রেক্ষিতে বিবৃতি দিয়ে দুঃখপ্রকাশ করে হেফাজত। তবে বিবৃতির বেশ কিছু জায়গায় দ্বিমত থাকায় তারা পাল্টা বিবৃতি দিয়ে এই আহ্বান জানান। এতে হেফাজতকে তাদের ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
অন্য বিবৃতিদাতারা হলেন- এনসিপির নেত্রী দ্যুতি অরণ্য চৌধুরী ও নীলা আফরোজ, সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব উম্মে রায়হানা, উম্মে ফারহানা ও ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া।
‘হেফাজত ইসলামের ক্ষমা চাওয়া প্রসঙ্গে ৬ নারীর বিবৃতি’ শিরোনামে দেওয়া বিবৃতিটি নিচে হুবহু তুলে ধরা হলো-
আমরা বিগত ৫ই মে, ২০২৫ হেফাজত ইসলামের সমাবেশে নারীকে বেশ্যা, হিজড়া বলে গালি দেবার কারণে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই। সেটির প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দু:খপ্রকাশ করে একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করেছে।
নারীকে পাবলিক স্পেসে গালি দেবার পর, লিগ্যাল নোটিশের উত্তরে তাদের ক্ষমা চাওয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাই এবং গ্রহণ করি।
তবে আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করেছি তারা প্রেস রিলিজে বলেছেন, "নারীকে "পণ্য" বানানোর পশ্চিমা এজেন্ডা তারা মেনে নেবেন না এবং ধর্মীয় ইস্যুতে বাড়াবাড়ি করলে ছাড় দেবেন না।"
এছাড়াও তারা বলেন, "উগ্র নারীবাদীদের লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।"
এই ফ্রেমিং-এর রাজনীতি থেকে তাদের আমরা বেরিয়ে আসার আহ্বান জানাই। কারো মতের সাথে না মিললেই তাকে কোনো না কোন ট্যাগ দেওয়া যাবেনা।
ক্ষমা প্রার্থনাকে মেনে নিয়েই তাদের প্রতি আমাদের অনুরোধ থাকবে ভবিষ্যতে টেবিল টক কিংবা পাবলিক ডিবেটের মাধ্যমে নারীদের সাথে আলাপে অংশ নিতে। নারীর সমঅধিকার কোনোভাবেই পশ্চিমা এজেন্ডা নয়।
সমাজে সকলেই বিরাজ করবেন নিজ নিজ ক্ষমতায় আর সেটিই সমাজের নিয়ম। আমরা আশা করবো তারা নিজেদের চিন্তা চেতনাকে আরো শানিত করবেন।
হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের প্রতি সম্মান রেখেই আমাদের ৬ নারীর আহ্বান থাকবে, নারীর সাম্য ও সামাজিক মর্যাদার বিষয় নারীই বুঝবে এবং তারা যেন সেক্ষেত্রে এগিয়ে আসে। সকল জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন করাই আমাদের সকলের লক্ষ্য। কাজেই নারীদের ব্যাপারে বারবার প্রশ্ন উত্থাপন করে একটি সামাজিক চাপ সৃষ্টি করা অনুচিত।
২০২৪-এর গণঅভ্যুত্থানই নারীদের শক্তি তথা ক্ষমতা বোঝার সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পেছনে নারীদের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তাই যেকোনো দ্বিমতে এক টেবিলে বসে কথা বলার পরিস্থিতি বজায় রাখবেন এবং ভবিষ্যতে একটি সামাজিক চুক্তিতে আসবেন বলে আমাদের বিশ্বাস।
লিগ্যাল নোটিশের একটি কপি তাদের কার্যালয়ে পৌঁছে যাবে আইন মোতাবেক। তারা তাদের প্রেস রিলিজ দিয়ে, উত্তর জানিয়ে দেবেন লিগ্যাল নোটিশের আইনজীবী বরাবর। আমরা আশা করি নতুন বাংলাদেশ সবার হবে। আর এই দু:খ প্রকাশের প্রক্রিয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাই।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কর্মচারীদের ন্যূনতম বেতন বাড়ছে ১৫০০ টাকা
আগামী জুলাই থেকে সরকারি কর্মচারীদের জন্য ন্যূনতম বিশেষ সুবিধা বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের জন্য ৭৫০ টাকা করা হয়েছে। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে এ বিশেষ ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আজ রোববার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমদ ও অর্থসচিব খায়রুজ্জামান মজুমদার যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনে জানান, সরকারি কর্মচারীদের ন্যূনতম বিশেষ ভাতা ১ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ টাকা এবং পেনশনভোগীদের জন্য ৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ ছাড়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যাদের নিট পেনশন ১৭ হাজার ৩৮৮ টাকা বা তার বেশি তারা পেনশনের ১০ শতাংশ বিশেষ ভাতা হিসেবে পাবেন। আর যাদের নিট পেনশন এ পরিমাণের কম তারা পাবেন ১৫ শতাংশ বিশেষ ভাতা।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশেষ ভাতা বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনী, বিচার বিভাগ এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের জন্য আলাদা আদেশ জারি করবে সরকার।
এর আগে গত ৩ জুন সরকারি কর্মচারীরা মূল বেতনের ওপর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বেতন গ্রেড–১ থেকে গ্রেড–৯ পর্যন্ত চাকরিজীবীরা মূল বেতনের ওপর ১০ শতাংশ ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন। আর গ্রেড–১০ থেকে গ্রেড–২০ পর্যন্ত ‘বিশেষ সুবিধা’ পাবেন ১৫ শতাংশ হারে। কর্মরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এ ‘বিশেষ সুবিধা’র ন্যূনতম পরিমাণ একহাজার টাকা, আর পেনশনভোগীরা ন্যূনতম ৫০০ টাকা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়।
এর আগে আজ উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে চলতি অর্থবছরের (২০২৫-২৬) জন্য ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে উপস্থাপিত প্রস্তাবিত বাজেটে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।