Prothomalo:
2025-05-06@19:34:42 GMT

অভিভাবকশূন্য বেসিস

Published: 6th, May 2025 GMT

গত ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির পদত্যাগ করেন। এর পরদিন ১ মে বেসিসের প্রশাসক মুহম্মদ মেহেদি হাসান সহায়ক কমিটি বিলুপ্ত করেন। ৪ মে নির্ধারিত সময়ে (১২০ দিনের মধ্যে) নির্বাচন না করতে পারার কারণে পদত্যাগ করেন মুহম্মদ মেহেদি হাসান। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, আগামী ২০ জুলাই চাকরিজীবন থেকে অবসরে যাওয়ার কারণে যাবতীয় সংস্কার শেষ করে বেঁধে দেওয়া ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না করার অক্ষমতার কথা। প্রশাসক ও সহায়ক কমিটি না থাকায় বেসিস এখন অভিভাবকশূন্য।

এদিকে দীর্ঘ ১৬ বছর ৮ মাস পর বেসিস থেকে ১ মে পদত্যাগ করেছেন বেসিসের সচিব হাশিম আহমেদ। আজ মঙ্গলবার বেসিস অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বেসিস সচিবালয়ে ৩৪ জন কর্মী ইতস্তত ঘোরাফেরা করছেন। কয়েকজন কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাথার ওপর ছাদ নেই। কী করব আমরা জানি না। একটি অডিট চলছে; কিন্তু ওরা যদি আমাদের কাছে কোনো কাগজ চায়, আমরা দিতে পারব না। আমাদের সেই ক্ষমতা নেই। অনুমতি ছাড়া আমরা কিছু দিতে পারি না। এমন সময় সই করারও কোনো মানুষ নেই। এককথায় আমরা অভিভাবকহীন অবস্থায় আছি।’ আমাদের কাছে মনে হয়েছে গত ২৭ বছরে বেসিসের এমন অবস্থায় আসা একটি বিরল ঘটনা।

সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান প্রাইডসিস আইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি শিল্পের ট্রেড বডি হচ্ছে প্রাণ। যারা আমাদের শিল্প নিয়ে কথা বলবে, আমাদের হয়ে কথা বলবে। কিন্তু এই ট্রেড বডিটা এখন ধ্বংসের পথে। যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা আসলে পারেনি এই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে। তাদের উচিত ছিল সবাইকে নিয়ে এগোনো। সরকারের যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের কাছে আমাদের কথা পৌঁছানো; কিন্তু তাঁরা সেটি করেননি। আমাদের অনেক সুযোগ ছিল, আমরা সেটি এখনো নষ্ট করছি। বর্তমানে সময়ে বিডাকেন্দ্রিক যে ব্র্যান্ডিং শুরু হয়েছে, বাংলাদেশ সেখানে তথ্যপ্রযুক্তিতে একটি বিশাল উপলক্ষ হতে পারত। সেই সুযোগ আমরা নিতে পারিনি। আমাদের হয়ে সেখানে কেউ কথা বলেননি। যা বলা হয়েছে, সেটি খুব দুর্বল। দুর্বলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি মনে করছি, বাংলাদেশের এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যে ব্র্যান্ডিংটা হচ্ছে, বাংলাদেশের এখানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবস্থান রাখা উচিত ছিল সবার ওপরে। যেখানে সবার নিচে আছে তথ্যপ্রযুক্তি। আর এটা শুধু ট্রেড বডি দিয়ে সম্ভব। যা সংস্কার দরকার সেটি করে অতি দ্রুত ট্রেড বডি নির্বাচন দিয়ে এবং নতুন একটি নির্বাচিত কমিটিকে এনে তাড়তাড়ি এই শূন্যস্থান পূরণ করা যেতে পারে।’

অ্যাসোসিওর আজীবন চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ এইচ কাফি প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪৫ বছর ধরে আইসিটি খাতে কাজ করছি, আমাদের খারাপ লাগাটা একটু বেশিই। বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর সংস্থা এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশনের (অ্যাসোসিও) ও ওয়ার্ল্ড ইনোভেশন, টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিস অ্যালায়েন্স (উইটসা) প্রতিনিধিরা যখন আমাদের নিয়ে কথা বলেন, তখন খারাপ লাগে। আমি অনুরোধ করব, অনেক হয়েছে, এবার নিজেরা নিজেদের খাতটির ক্ষতি না করি।’

বেসিসের একাধিক সদস্য প্রথম আলোকে জানান, বেসিসের সদস্যরা এখানে যার যার অবস্থানে ব্যবসা করে যাচ্ছে; কিন্তু এই সংগঠনে যখন গায়ের জোর বা মাস্তানির একটি প্রভাব পড়ে, সেখানে সংগঠন ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই হবে না। আমরা পিছিয়ে পড়ছি। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে একটি সমাধান আনা যেতে পারে। আমরা আসা করব, আমাদের আইসিটি খাতের যাঁরা অভিভাবক আছেন, তাঁরা এটি দ্রুত একটি সমাধানের পথ বের করবেন।

প্রসঙ্গত, গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেক খাতের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসেও (বেসিস) পরিবর্তন আসে। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সরকার বেসিস প্রশাসক নিযুক্ত করে। প্রশাসককে সহায়তা করতে ও বেসিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাফেল কবিরের নেতৃত্বে গত ৮ ডিসেম্বর বেসিস সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল পদত য গ আম দ র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক মন্ত্রীসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা এই পরোয়ানা জারি করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৩ আগস্ট রাতে লাকসাম পৌরসভার নশরতপুর এলাকার বাইপাস মার্কেটের সামনে রাস্তার ওপর ও ১৮ আগস্ট রাতে বসতবাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালানো হয়। এসব ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতপরিচয় ৯০ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন লাকসাম পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মনির আহমেদ। পরে লাকসাম থানা পুলিশ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দেয়। ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মঙ্গলবার দুপুরে আদালতের বিচারক ফারহানা সুলতানা সাবেক এলজিআরডি মন্ত্রী তাজুল ইসলামসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। 

মামলার বাদী মনির আহমেদ  জানান, যখন হামলা হয় তখন মন্ত্রী এলাকায় ছিলেন না। তাই তার বিরুদ্ধে হুকুমের আসামি করা হয়েছে।

গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হওয়া অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন– এলজিআরডি মন্ত্রীর শ্যালক ও লাকসাম উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মহব্বত আলী, লাকসাম পৌরসভার সাবেক মেয়র অধ্যাপক আবুল খায়ের, কাউন্সিলর মোহাম্মদ উল্লাহ, বিপুলাসার ইউপি চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ, গোবিন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন শামীম, কান্দিরপাড় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক, কাউন্সিলর খলিলুর রহমান, মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও মন্ত্রীর ভাতিজা আমিরুল ইসলাম, তাজুলের উন্নয়ন সমন্বয়কারী কামাল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, আজকরা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, রুহুল আমিন, আবদুল কাদের শাহীন ও কাওছার আহমেদ।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ