Prothomalo:
2025-06-24@04:12:55 GMT

অভিভাবকশূন্য বেসিস

Published: 6th, May 2025 GMT

গত ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সহায়ক কমিটির চেয়ারম্যান রাফেল কবির পদত্যাগ করেন। এর পরদিন ১ মে বেসিসের প্রশাসক মুহম্মদ মেহেদি হাসান সহায়ক কমিটি বিলুপ্ত করেন। ৪ মে নির্ধারিত সময়ে (১২০ দিনের মধ্যে) নির্বাচন না করতে পারার কারণে পদত্যাগ করেন মুহম্মদ মেহেদি হাসান। পদত্যাগের কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেছেন, আগামী ২০ জুলাই চাকরিজীবন থেকে অবসরে যাওয়ার কারণে যাবতীয় সংস্কার শেষ করে বেঁধে দেওয়া ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না করার অক্ষমতার কথা। প্রশাসক ও সহায়ক কমিটি না থাকায় বেসিস এখন অভিভাবকশূন্য।

এদিকে দীর্ঘ ১৬ বছর ৮ মাস পর বেসিস থেকে ১ মে পদত্যাগ করেছেন বেসিসের সচিব হাশিম আহমেদ। আজ মঙ্গলবার বেসিস অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বেসিস সচিবালয়ে ৩৪ জন কর্মী ইতস্তত ঘোরাফেরা করছেন। কয়েকজন কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, ‘মাথার ওপর ছাদ নেই। কী করব আমরা জানি না। একটি অডিট চলছে; কিন্তু ওরা যদি আমাদের কাছে কোনো কাগজ চায়, আমরা দিতে পারব না। আমাদের সেই ক্ষমতা নেই। অনুমতি ছাড়া আমরা কিছু দিতে পারি না। এমন সময় সই করারও কোনো মানুষ নেই। এককথায় আমরা অভিভাবকহীন অবস্থায় আছি।’ আমাদের কাছে মনে হয়েছে গত ২৭ বছরে বেসিসের এমন অবস্থায় আসা একটি বিরল ঘটনা।

সফটওয়্যার প্রতিষ্ঠান প্রাইডসিস আইটি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোয়ার ইকবাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটি শিল্পের ট্রেড বডি হচ্ছে প্রাণ। যারা আমাদের শিল্প নিয়ে কথা বলবে, আমাদের হয়ে কথা বলবে। কিন্তু এই ট্রেড বডিটা এখন ধ্বংসের পথে। যাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তারা আসলে পারেনি এই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করতে। তাদের উচিত ছিল সবাইকে নিয়ে এগোনো। সরকারের যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের কাছে আমাদের কথা পৌঁছানো; কিন্তু তাঁরা সেটি করেননি। আমাদের অনেক সুযোগ ছিল, আমরা সেটি এখনো নষ্ট করছি। বর্তমানে সময়ে বিডাকেন্দ্রিক যে ব্র্যান্ডিং শুরু হয়েছে, বাংলাদেশ সেখানে তথ্যপ্রযুক্তিতে একটি বিশাল উপলক্ষ হতে পারত। সেই সুযোগ আমরা নিতে পারিনি। আমাদের হয়ে সেখানে কেউ কথা বলেননি। যা বলা হয়েছে, সেটি খুব দুর্বল। দুর্বলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি মনে করছি, বাংলাদেশের এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে যে ব্র্যান্ডিংটা হচ্ছে, বাংলাদেশের এখানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের অবস্থান রাখা উচিত ছিল সবার ওপরে। যেখানে সবার নিচে আছে তথ্যপ্রযুক্তি। আর এটা শুধু ট্রেড বডি দিয়ে সম্ভব। যা সংস্কার দরকার সেটি করে অতি দ্রুত ট্রেড বডি নির্বাচন দিয়ে এবং নতুন একটি নির্বাচিত কমিটিকে এনে তাড়তাড়ি এই শূন্যস্থান পূরণ করা যেতে পারে।’

অ্যাসোসিওর আজীবন চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ এইচ কাফি প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪৫ বছর ধরে আইসিটি খাতে কাজ করছি, আমাদের খারাপ লাগাটা একটু বেশিই। বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর সংস্থা এশিয়ান-ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অর্গানাইজেশনের (অ্যাসোসিও) ও ওয়ার্ল্ড ইনোভেশন, টেকনোলজি অ্যান্ড সার্ভিস অ্যালায়েন্স (উইটসা) প্রতিনিধিরা যখন আমাদের নিয়ে কথা বলেন, তখন খারাপ লাগে। আমি অনুরোধ করব, অনেক হয়েছে, এবার নিজেরা নিজেদের খাতটির ক্ষতি না করি।’

বেসিসের একাধিক সদস্য প্রথম আলোকে জানান, বেসিসের সদস্যরা এখানে যার যার অবস্থানে ব্যবসা করে যাচ্ছে; কিন্তু এই সংগঠনে যখন গায়ের জোর বা মাস্তানির একটি প্রভাব পড়ে, সেখানে সংগঠন ধ্বংস ছাড়া আর কিছুই হবে না। আমরা পিছিয়ে পড়ছি। দ্রুত নির্বাচন দিয়ে একটি সমাধান আনা যেতে পারে। আমরা আসা করব, আমাদের আইসিটি খাতের যাঁরা অভিভাবক আছেন, তাঁরা এটি দ্রুত একটি সমাধানের পথ বের করবেন।

প্রসঙ্গত, গণ-অভ্যুত্থানে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অনেক খাতের মতো বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসেও (বেসিস) পরিবর্তন আসে। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সরকার বেসিস প্রশাসক নিযুক্ত করে। প্রশাসককে সহায়তা করতে ও বেসিসের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য রাফেল কবিরের নেতৃত্বে গত ৮ ডিসেম্বর বেসিস সহায়ক কমিটি গঠন করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল পদত য গ আম দ র অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

সুইডেনে উচ্চশিক্ষা: স্কলারশিপ, আছে আইইএলটিএসের বিকল্প

ইউরোপের অন্যতম দেশ সুইডেন বছরের পর বছর ধরে নাগরিকদের কাঙ্ক্ষিত আর্থসামাজিক অবস্থা নিশ্চিত করে আসছে। বিশ্বখ্যাত সব ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের এ আশ্রয়স্থলে ক্যারিয়ার গঠন হাজারো বিদেশি শিক্ষার্থীদের কাছে স্বপ্নতুল্য। চলুন, শেনজেনভুক্ত দেশ সুইডেনে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, অধ্যয়ন খরচ এবং স্কলারশিপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক-

সুইডিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পাঠ্যক্রম শেনজেন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) বিশ্বে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। প্রধান ভাষা সুইডিশ হলেও স্ক্যান্ডিনেভিয়ানদের প্রতি ১০ জনের ৯ জনই সাবলীলভাবে ইংরেজিতে কথা বলেন। পড়াশোনাসহ নিত্য জীবনযাত্রা এবং চাকরি ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের পছন্দের অন্যতম গন্তব্য সুইডেন।

আরও পড়ুনচীনে উচ্চশিক্ষা: স্কলারশিপের সঙ্গে আছে পড়ার শেষে চাকরি ও স্থায়ী হওয়ার সুযোগ২৬ আগস্ট ২০২৪

সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট রিপোর্ট অনুযায়ী পরিবেশগত দিক থেকে বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিরাপদ দেশ সুইডেন। পৃথিবীর শীর্ষস্থানীয় দূষণমুক্ত দেশগুলোর তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা এই দেশটির দূষণ সূচক মাত্র ১৭ দশমিক ৭। এ ছাড়া বিশ্বের সর্বাপেক্ষা ভ্রমণবান্ধব দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষ ১০-এর মধ্যে রয়েছে এই নর্ডিক দেশটি।

পড়াশোনার জন্য সুইডেন যাত্রার আরও একটি প্রধান কারণ হচ্ছে স্টুডেন্ট নোবেল নাইটক্যাপ। এ অনুষ্ঠানে বিশ্বের একাডেমিক সুপারস্টারদের সন্নিবেশ ঘটে। এই ভূখণ্ডে নোবেল পুরস্কারকে কেন্দ্র করে চলে নানা আয়োজন। বিশেষ করে স্টকহোমে পুরো একটি সপ্তাহ উদ্‌যাপন করা হয় নোবেলকে ঘিরে।

শত শত স্টার্টআপ কোম্পানির স্বর্গরাজ্য সুইডেনকে বলা হয় ইউরোপের সিলিকন ভ্যালি। ক্যালিফোর্নিয়ার পর স্টকহোমই হচ্ছে দ্বিতীয় শহর, যেখানে সর্বাধিক সফল কোম্পানিগুলোর গোড়াপত্তন হয়েছে।

ইউরোপীয় দেশটির আরও যে বিষয়টি বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকৃষ্ট করে, তা হলো, কর্ম ও জীবনের মধ্যে এক আশ্চর্য ভারসাম্য। এখানে প্রতিটি চাকরিতেই রয়েছে যথেষ্ট শিথিলতা। প্রয়োজন অনুযায়ী শিফটিং এবং প্যাটার্নিটি বা ম্যাটার্নিটি লিভসহ বিভিন্ন উপলক্ষে সাময়িক ছুটির নীতি। এখানে মূলত কর্মীদের সর্বোচ্চ উৎপাদনশীলতা পাওয়ার জন্য তাদের চাপমুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। পুরো দেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ১ শতাংশ কর্মচারী খুব দীর্ঘ সময় ধরে বা ওভারটাইম কাজ করে।

সেরা বিশ্ববিদ্যালয় কোনগুলো: কেটিএইচ রয়্যাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, লুন্ড ইউনিভার্সিটি, উপসালা ইউনিভার্সিটি, স্টকহোম ইউনিভার্সিটি, চালমার্স ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অব গোথেনবার্গ, ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউট, লিনকোপিং ইউনিভার্সিটি, উমিয়া ইউনিভার্সিটি ও হাল্মস্ট্যাড ইউনিভার্সিটি।

সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন বিষয়গুলো: প্রকৌশল ও প্রযুক্তি, ব্যবসা ও অর্থনীতি, সাংবাদিকতা, যোগাযোগ ও তথ্য, লাইফ সায়েন্সেস অ্যান্ড মেডিসিন, ডিজাইন অ্যান্ড আর্কিটেকচার।

আবেদনের উপায়-

সাধারণত ফল ও স্প্রিং সেমিস্টারে ভর্তির কার্যক্রম চালু করে সুইডিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফল সেমিস্টার আগস্টের শেষ থেকে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝিতে শুরু হয়। এই মৌসুমে আবেদনের জন্য সবচেয়ে বেশি সংখ্যক প্রোগ্রাম চালু থাকে। আবেদন গ্রহণ অব্যাহত থাকে জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত। ফলে যে প্রোগ্রামগুলো বাদ পড়ে যায়, সেগুলোয় ভর্তির আবেদন নেওয়া হয় স্প্রিং সেমিস্টারে। এ মৌসুমে ডিসেম্বর থেকে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়ে চলে পরের বছরের আগস্ট পর্যন্ত।

কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সামার সেমিস্টারেও ভর্তি নেওয়া হয়। তাই উত্তম হচ্ছে প্রথমে বিষয় পছন্দ করে তার জন্য উপযুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই করে তার অফিশিয়াল ওয়েবসাইট চেক করা। তবে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আবেদনের ব্যাপারে ফল সেমিস্টারকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। কেননা আবেদনের জন্য যথেষ্ট বিকল্প কোর্স পাওয়ার সুযোগ তো আছেই! তা ছাড়া এ সময়ে আবেদন করা হলে অধ্যয়ন ফি প্রদান, প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রেরণ, রেসিডেন্স পার্মিটের আবেদন এবং আবাসন খোঁজার ক্ষেত্রে পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।

স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে যেকোনো প্রোগ্রামে ভর্তির জন্য একটি সাধারণ অনলাইন প্ল্যাটফর্মের (universityadmissions.se) মাধ্যমে আবেদন নেওয়া হয়। এখানে অ্যাকাউন্ট তৈরি করে কাঙ্ক্ষিত প্রোগ্রামগুলোকে নির্বাচন করে সেগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তালিকাভুক্ত করে রাখতে হয়। এ ক্ষেত্রে চূড়ান্ত আবেদনপ্রক্রিয়া শুরুর পূর্বে প্রতিটি প্রোগ্রামের জন্য প্রয়োজনীয় শর্তগুলো জেনে নেওয়া উচিত।

আরও পড়ুনউচ্চশিক্ষার জন্য চীনে যেতে চান, জেনে রাখুন কিছু বিষয়২৪ অক্টোবর ২০২৩

আবেদনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র-

স্নাতক প্রোগ্রামে আবেদন করলে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষার সনদ

স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য ৪ বা অনার্সসহ ৩ বছরের স্নাতক ডিগ্রির সনদ

ইংরেজি ভাষা দক্ষতার স্কোর: আইইএলটিএস (একাডেমিক) মোট স্কোর ৬ দশমিক ৫ (কোনো বিভাগে ৫ দশমিক ৫-এর কম পাওয়া যাবে না) টোয়েফল ইন্টারনেটভিত্তিক স্কোর ২০ (০ থেকে ৩০ স্কেলে) এবং মোট স্কোর ৯০। শিক্ষার্থীর স্নাতকের ৪ বছর ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করলে অথবা উচ্চমাধ্যমিকে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করে থাকলে আলাদা করে আইইএলটিএস বা টোয়েফলের দরকার হবে না। এ ক্ষেত্রে মিডিয়াম অব ইনস্ট্রাকশন বা এমওআই প্রদর্শন করতে হবে।

একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট

সিভি বা পোর্টফোলিও

স্টেটমেন্ট অব পার্পাস

লেটার অব মোটিভেশন

লেটার অব রিকমেন্ডেশন

আবেদন ফি পরিশোধের রশিদ: ৯০০ ক্রোনা বা ১০ হাজার ৫৫৭ টাকা (১ সুইডিশ ক্রোনা = ১১ দশমিক ৭৩ বাংলাদেশি টাকা)

প্রথম আলো ফাইল ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ