প্রথম ধাপের ভোটে জার্মানির চ্যান্সেলর হতে পারলেন না মের্ৎস
Published: 6th, May 2025 GMT
জার্মানির রক্ষণশীল নেতা ফ্রিডরিখ মের্ৎস চ্যান্সেলর হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি মন্দা কাটিয়ে উঠতে এবং ডানপন্থী উগ্রবাদ রুখতে চায়। ঠিক তখন মের্ৎসের এই ব্যর্থতা দেশটির রাজনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। এখন দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, তারা কাকে চ্যান্সেলর বানাবে।
গত ফেব্রুয়ারিতে জার্মানিতে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে ফ্রিডরিখ মের্ৎসের (৬৯) দল ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়ন জয়ী হয়। ক্ষমতায় আসতে সামাজিক গণতান্ত্রিক দলের (এসপিডি) সঙ্গে জোট করেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার চ্যান্সেলর বাছাইয়ের নির্বাচন ছিল। এতে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বুন্দেসটাগে ৬৩০ জনের মধ্যে ৩১০ জন সংসদ সদস্যের ভোট পান মের্ৎস। প্রয়োজনীয় ভোটের চেয়ে তিনি ৬ ভোট কম পান। জোটের অন্তত ১৮ জন পার্লামেন্ট সদস্য (এমপি) তাঁকে ভোট দেননি।
যদিও চ্যান্সেলর পদে মের্ৎসের এই কম ভোট পাওয়া মারাত্মক কোনো বিপর্যয় নয়, তবে প্রথম চেষ্টায় তাঁর সমর্থন না পাওয়া যুদ্ধ–পরবর্তী জার্মানিতে একটি নজিরবিহীন ঘটনা। বিশ্বদরবারে জার্মানির নেতৃত্ব ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেওয়া এই নেতার জন্য বিষয়টি বিব্রতকর।
জার্মানির নতুন চ্যান্সেলর হিসেবে আগামীকাল বুধবার ফ্রান্স ও পোল্যান্ড সফর করার কথা ছিল মের্ৎসের। কিন্তু নির্বাচনে ব্যর্থতা তাঁর সফরকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
ইউরোপিয়ান কাউন্সিল অন ফরেন রিলেশনসের বার্লিন শাখার প্রধান ইয়ানা পুগলিয়েরিন বলেন, ‘গোটা ইউরোপ আজ বার্লিনের দিকে তাকিয়ে ছিল এই আশায় যে, জার্মানি আবারও স্থিতিশীলতা ও ইউরোপপন্থী শক্তি হিসেবে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করবে। কিন্তু সে আশা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। এর প্রভাব শুধু আমাদের সীমান্তের ভেতরেই সীমাবদ্ধ থাকবে না।’
আরও পড়ুনজার্মানিতে গঠিত হচ্ছে নতুন জোট সরকার১০ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউর প
এছাড়াও পড়ুন:
লভ্যাংশ ঘোষণা নেই, তবুও বেড়েছে ব্যাংকের শেয়ারদর
মন্দ ঋণ বা বিনিয়োগের লোকসানের বিপরীতে পর্যাপ্ত প্রভিশন বা মূলধন সংরক্ষণ ইস্যুতে সমাধান করতে পারেনি তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে ২০টি। হিসাব বছর শেষ হওয়ার পর নির্ধারিত চার মাসের মধ্যে মাত্র ১৪টি ব্যাংক আর্থিক হিসাব বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিয়ে লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। এ অবস্থার পরও সোমবার উল্লেখযোগ্য পরিমাণ লেনদেন বাড়ার পর গতকাল মঙ্গলবার দেশের শেয়ারবাজারে ব্যাংকগুলোর শেয়ারদর বেড়েছে।
দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে তালিকাভুক্ত ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ২৭টির বাজারদর বেড়েছে, কমেছে পাঁচটির। অপরিবর্তিত চারটির দর। এতে ব্যাংক খাতের গড় শেয়ারদর বেড়েছে আড়াই শতাংশ। যেখানে ব্যাংক খাতের বাইরে তালিকাভুক্ত ৩২৪ কোম্পানির মধ্যে ২৩৮টি দর হারিয়েছে। বিপরীতে বেড়েছে ৬২টি কোম্পানির শেয়ারদর।
অত্যন্ত দুর্বল ব্যাংক গ্লোবাল ইসলামীর শেয়ারদর ৩০ পয়সা বা ১০ শতাংশ বেড়ে কেনাবেচা হয়েছে ৩ টাকা ৩০ পয়সায়। এ ছাড়া এনআরবি ও সাউথবাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক পৌনে ১০ শতাংশ, ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারদর সাড়ে ৯ শতাংশ বেড়েছে।
এদিন ব্যাংক খাতের অধিকাংশ শেয়ারের দরবৃদ্ধি প্রধান মূল্য সূচকে সাকল্যে ৩৮ পয়েন্ট যোগ করেছে। তা সত্ত্বেও সূচকটি ১২ পয়েন্ট হারিয়ে ৪৯৫১ পয়েন্টের নিচে নেমেছে। তবে লেনদেন হয়েছে প্রায় সাড়ে ৫০০ কোটি টাকার শেয়ার।
গত কয়েকদিনের লেনদেন পর্যালোচনায় দেখা গেছে, সর্বশেষ এক সপ্তাহে ব্যাংক খাতের শেয়ার লেনদেন উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। গত রোববার ঢাকার শেয়ারবাজারে ৮১ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। পরদিন ব্র্যাক ব্যাংকের ১৪৬ কোটি টাকার ব্লক মার্কেটের শেয়ার কেনাবেচাসহ মোট ২২৮ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল। গতকাল কেনাবেচা হয়েছে ১৬৪ কোটি টাকার শেয়ার। এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে ব্যাংক খাতের লেনদেন ছিল ৪৭ থেকে সর্বোচ্চ ৭৪ কোটি টাকা। তার আগের কয়েক সপ্তাহের বেশির ভাগ দিনের লেনদেন ছিল ৩০ থেকে ৪০ কোটি টাকার মধ্যে।
জানতে চাইলে প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান সমকালকে বলেন, বিভিন্ন ব্যাংক যেখানে আইন অনুযায়ী পর্যাপ্ত প্রভিশন করতে ব্যর্থ হচ্ছে, এ নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে সমঝোতায় আসতে না পেরে এখনও হিসাবই চূড়ান্ত করতে পারেনি, তখন শেয়ারদর বৃদ্ধি যৌক্তিক বলে মনে হয় না। তাছাড়া যেসব ব্যাংকের শেয়ারের দর বেশি বেড়েছে, সেগুলো বেশি দুর্বল।
আইডিএলসি সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফউদ্দিন সমকালকে বলেন, বেশির ভাগ ব্যাংকের আর্থিক স্বাস্থ্য যেমন দুর্বল, তেমনি শেয়ারগুলোর বাজারদরও কম। তাছাড়া রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলের পর মালিকানা নিতে অনেকে শেয়ার সংগ্রহ করছে। এটাই দরবৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোরভাবে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রকৃত অবস্থা প্রকাশে কড়াকড়ি আরোপ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেঁধে দেওয়া নিয়ম অনুযায়ী, যেসব ব্যাংক প্রভিশনে ‘ডেফারেল’ সুবিধা নিচ্ছে বা যাদের মন্দ ঋণ ১০ শতাংশের বেশি, তারা লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে না। তাছাড়া প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ আর্থিক হিসাবে প্রকাশে চাপ রয়েছে।
এদিকে ব্যাংকের সঙ্গে গতকাল আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতেরও বেশির ভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। তালিকাভুক্ত ২৩ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৫টির দর বেড়েছে, কমেছে চারটির দর।