বিভিন্ন মতাদর্শের ৩৫টি সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন মিলে ‘জুলাই ঐক্য’ নামে একটি জোট করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনের সামনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটে। আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, জুলাই গণহত্যা ও শাপলা চত্বরে গণহত্যার বিচারসহ কিছু দাবি জোরালো করতে জোটটি সরব থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র এবং আপ বাংলাদেশের সংগঠক রাফে সালমান রিফাত, বাংলা বিভাগের মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ, ইসলামিক স্টাডিজের ছাত্র এ বি জুবায়ের কথা বলেন।
লিখিত বক্তব্যে ঢাবির বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মুসাদ্দিক আলী বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের আট মাস পেরিয়ে গেলেও আমরা দেখছি, গণহত্যায় জড়িতদের বিচার প্রক্রিয়া এখনও অনিশ্চিত। সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয়, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও বেসরকারি মহলের কিছু অংশ আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জোটের মূল উদ্দেশ্য, জুলাই বিপ্লবে অংশগ্রহণকারীদের সাংবিধানিক নিরাপত্তা নিশ্চিত, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং চব্বিশের গণহত্যা, শাপলা ট্রাজেডি, পিলখানা ট্রাজেডি, গুম-খুন, দুর্নীতিসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরে যেসব অপকর্ম সংগঠিত হয়েছে, তার সঙ্গে জড়িত সবার বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি জারি রাখা।’
‘জুলাই ঐক্য’ জোটে রয়েছে আপ বাংলাদেশ, ইনকিলাব মঞ্চ, এন্টি ফ্যাসিস্ট কোয়ালিয়েশন, জুলাই রেভুলুশনারি জার্নালিস্ট এলায়েন্স, জুলাই রেভুলুশনারি এলায়েন্স, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট এলায়েন্স অব বাংলাদেশ, প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-পুনাব, স্টুডেন্ট এলায়েন্স ফর ডেমোক্রেসি, বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ, একতার বাংলাদেশ, রক্তিম জুলাই, সোচ্চার, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই, ফ্যাসিবাদ মুক্ত গণমাধ্যম চাই, এইচআরএসএস, জুলাই বিগ্রেড, স্টুডেন্ট রাইট ওয়াচ, পিপলস অ্যাকটিভিস্ট কোয়ালিশন, আজাদ ফিলিস্তিন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন এল য় ন স র জন ত ক গণহত য
এছাড়াও পড়ুন:
নির্বাচনের আগেই শাপলা-জুলাইসহ সব গণহত্যার বিচার করতে হবে: হেফাজত
নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বর ও জুলাই গণহত্যাসহ প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার দাবি করেছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।
আজ বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ দপ্তর সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক বিবৃতি দেন।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসলামবিদ্বেষী, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদবিরোধী চেতনা সংরক্ষণ, রাষ্ট্র-সংস্কারের গণ-আকাঙ্ক্ষা সুসংহতকরণ এবং জাতীয় ঐকমত্য গঠনকল্পে অবিলম্বে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে হবে। সেইসাথে নির্বাচনের আগেই শাপলা চত্বরে আলেম ওলামা হত্যাকাণ্ড ও জুলাই গণহত্যাসহ ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতিটি হত্যাযজ্ঞের বিচার সম্পন্ন করতে হবে। এর অন্যথা হলে ড. ইউনূস সরকারকে ছাত্র-জনতা ক্ষমা করবে না।
আজিজুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে বুঝতে হবে, এখনো বিছানায় কাতরাচ্ছে পঙ্গুত্ব ও অন্ধত্ব বরণ করা হাজার হাজার আহত শাপলা ও জুলাই-যোদ্ধা। অগণিত শহীদের রক্তের ফসল জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে গণঅভ্যুত্থানকারী ছাত্র-জনতার কাছে ড. মুহাম্মদ ইউনূস সরকারকে জবাব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, শাপলা চত্বরের রক্তাক্ত ইতিহাসের পথ বেয়ে জুলাই বিপ্লব আমাদের জাতীয় জীবনে হাজির হয়েছে। জুলাই বিপ্লব চলমান প্রক্রিয়া। জুলাইকে বিস্মৃত হতে দেওয়া যাবে না। জুলাই বিপ্লবের সাথে গাদ্দারি করে জনসমর্থন ধরে রাখা যাবে না। এদেশে যারাই ভারতীয় আধিপত্যবাদের গোলামি করবে, দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিবে, মাফিয়াতন্ত্র জারি রাখবে, মানবাধিকার লঙ্ঘন করে ক্ষমতা ধরে রাখতে চাইবে, তাদের বিরুদ্ধে জুলাইর গণপ্রতিরোধের চেতনা বারবার ফিরে আসবে। দেশের জনগণের মৌলিক অধিকার ও স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে ছাত্র-জনতা আবারও রাজপথে নামতে বিলম্ব করবে না। মনে রাখতে হবে, ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ফেরাউন পারেনি; হাসিনাও পারেনি। ভবিষ্যত ক্ষমতাসীনদের এই ঐতিহাসিক শিক্ষা ধারণ করতে হবে।
মাওলানা ইসলামাবাদী বলেন, জুলাই বিপ্লবের অন্যতম দাবি কাঠামোগত সংস্কার। ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার জন্ম দেওয়া বিদ্যমান রাষ্ট্র-কাঠামোর বিলোপ ও পুনর্নির্মাণের মধ্যেই বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যত পরিদৃষ্ট। জুলাই গণঅভ্যুত্থান সেই মাহেন্দ্রক্ষণ এনে দিয়েছে। গণহত্যার বিচার ও সংস্কার প্রশ্নে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।
তিনি বলেন. প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনূসকে বাংলাদেশের জনগণের পক্ষে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্র-সংস্কারের মৌলিক কাজগুলো আরও বেগবান করতে হবে। ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র স্বার্থের চেয়ে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থ রক্ষায় আত্মনিবেদিত হওয়ার মধ্যেই মাহাত্ম্য নিহিত। আর সংস্কারকাজে অবশ্যই ইসলামবিরোধী অপশক্তির ফাঁদ ও কু-মন্ত্রণা এড়িয়ে যেতে হবে। সংবিধানের মূলনীতি থেকে বহুত্ববাদ বাদ দিতে হবে। কুরআন-সুন্নাহবিরোধী নারী কমিশন বাতিল করতে হবে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠির ধর্ম, সভ্যতা সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের আলোকে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করতে হবে।