ভারতের হামলার বদলা নেওয়া হবে: পাকিস্তান
Published: 7th, May 2025 GMT
পাকিস্তানের কয়েকটি স্থানে গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এ হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান সরকার ও সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা এই ‘কাপুরুষোচিত’ হামলার ‘সমুচিত’ জবাব দেবে।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ এআরওয়াই নিউজকে বলেছেন, দেশটির বেসামরিক এলাকায় হামলা চালানো হয়েছে। ‘কাপুরুষেরা’ তাদের নিজস্ব আকাশসীমা থেকে এই হামলা চালিয়েছে। তারা কখনোই তাদের ঘর থেকে বের হয়নি। তারা বেরিয়ে আসুক, পাকিস্তান সমুচিত জবাব দেবে।
ইসলামাবাদ কী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, জানতে চাইলে খাজা আসিফ বলেন, পাকিস্তান বদলা নেবে।
খাজা আসিফ আরও বলেন, ভারতের তুলনায় অনেক বড় পরিসরে এই হামলার জবাব দেবে পাকিস্তান। তারা শুধু বেসামরিক মানুষদের ওপর হামলা করেনি বরং নিজেদের আকাশসীমা থেকে এ কাজ করেছে।
আরও পড়ুনপাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত অন্তত ৮৫ ঘণ্টা আগেপাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেছেন, এই হামলার বদলা নেওয়ার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গেছে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন, পাকিস্তান তার নির্ধারিত সময় ও স্থানে এই হামলার জবাব দেবে। এই জঘন্য উসকানির জবাব তারা দেবেই।
আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানান, কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফফরাবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ এই হামলা চালিয়েছে ভারত।
লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুলী বলেন, এই কাপুরুষোচিত হামলার মাধ্যমে ভারত যে সাময়িক আনন্দ পেয়েছে, তা স্থায়ী শোকে পরিণত হবে।
আরও পড়ুনভারতের হামলাকে ‘লজ্জাজনক’ বললেন ট্রাম্প, জাতিসংঘ মহাসচিবের উদ্বেগ২ ঘণ্টা আগেপাকিস্তান ইতিমধ্যে প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম পিটিভি নিউজ।
গতকাল রাতে পাকিস্তানের কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার ঘটনার পর প্রতিবেশী দেশ দুটির মধ্যে উত্তেজনা প্রেক্ষাপটে এই হামলার ঘটনা ঘটল।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়, ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর এই অভিযানের নাম ‘অপারেশন সিঁদুর’। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান–নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
আরও পড়ুনতিন রাফাল, এক মিগসহ ভারতের ৫ যুদ্ধবিমান ‘ভূপাতিত’১৫ মিনিট আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলও কি স্বৈরাচারী হয়ে উঠতে পারে
১৫ বছর ধরে অনেক ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল আর সংগঠন মিলে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য চেষ্টা করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে শেখ হাসিনার শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতা রাস্তায় নেমে আসেন।
এর ফলে হাসিনা সরকারের পতন হয় ও তিনি এবং তাঁর দলের কর্মীরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এ পরিবর্তন শুধু একটা সরকারের পরিবর্তন নয়, বরং দীর্ঘ সময়ের ভয় ও দমনের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের সাহস, আশা ও গণতান্ত্রিক চেতনার একটি বড় জয় ছিল।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেখা যায়, কিছু গোষ্ঠী ও রাজনৈতিক দল এই আন্দোলনের সফলতাকে শুধু নিজের নামে দাবি করতে শুরু করে। কেউ কেউ বলতে থাকে, তাদের কারণেই সরকার পতন ঘটেছে। তাই তারাই ভবিষ্যতে ক্ষমতার একমাত্র ভাগীদার।
আবার কিছু ধর্মীয় বা আদর্শিক গোষ্ঠী আন্দোলনের মধ্য দিয়ে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর চেষ্টা করছে, যারা আগে প্রকাশ্যে তেমন সক্রিয় ছিল না। এ ছাড়া কিছু নতুন দল, যারা আগে রাজনীতিতে খুব একটা পরিচিত ছিল না, তারাও হঠাৎ করে সামনে চলে এসেছে। তারা নিজেদের ‘নতুন শক্তি’, ‘ভিন্নধারার দল’ হিসেবে উপস্থাপন করে, কিন্তু তাদের আচরণে কখনো কখনো পুরোনো রাজনীতির কৌশলই দেখা যায়।
আরও পড়ুনশেখ হাসিনা স্বৈরশাসকদের টিকে থাকার দুটি মূলমন্ত্রেই ব্যর্থ২২ আগস্ট ২০২৪এই আন্দোলনের সময় বিভিন্ন গোষ্ঠী একসঙ্গে থাকলেও আন্দোলনের পর তারা নিজেদের অবস্থান ঠিক করতে গিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। কেউ কেউ আবার নিজেদের মধ্যে ক্ষমতার হিসাব-নিকাশ করছে। এতে আন্দোলনের মূল চেতনা—জনগণের অধিকার, গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যেন ধীরে ধীরে পেছনের দিকে চলে গেছে।
এ বাস্তবতায় প্রশ্ন ওঠে, যাঁরা ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন, তাঁরাই কি আবার ভবিষ্যতে ক্ষমতায় গিয়ে নতুন একধরনের স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দেবেন?
ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ৫ আগস্ট, ২০২৪