নির্মাণের দুই বছর পরও চালু হয়নি ছাতক সিমেন্টের নতুন কারখানা
Published: 7th, May 2025 GMT
ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের নতুন কারখানার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে। তবে নির্মাণের দুই বছর পরও সরকারি কারখানাটি উৎপাদনে যেতে পারছে না।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মূলত ভারত অংশে রোপওয়ে (চুনাপাথর আনার পথ) নির্মাণের অনুমতি না পাওয়া এবং গ্যাসলাইন নির্মাণ না করতে পারায় উৎপাদন শুরু করা যাচ্ছে না। এতে একদিকে সম্পদ–জনবলের অপচয় হচ্ছে, অন্যদিকে বসিয়ে রাখায় নতুন কারাখানার যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ছাতক সিমেন্ট কারখানার প্রধান কাঁচামাল চুনাপাথর। রোপওয়ের মাধ্যমে ভারত থেকে চুনাপাথর আনা হয়। বাংলাদেশ–ভারত মিলিয়ে এই রোপওয়ের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে বাংলাদেশ অংশের ১১ কিলোমিটার নির্মাণকাজ প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। ভারত অংশের প্রায় ছয় কিলোমিটার রোপওয়ে নির্মাণের অনুমতি পাওয়া যায়নি। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, ভারত অংশের রোপওয়ে নির্মাণের জন্য দেশটির একটি কোম্পানির সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ছাতক কারখানা থেকে চুক্তির খসড়া শিল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
চীনা ঠিকাদারকে অনুরোধ করা হয়েছে, ভারত অংশের রোপওয়ে নির্মাণের কাজটা ভারতীয় কোম্পানিকে দিতে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি রাজি হয়েছে।মো.আবদুর রহমান, প্রকল্প পরিচালক
‘ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের উৎপাদনপদ্ধতি ওয়েট প্রসেস থেকে ড্রাই প্রসেসে রূপান্তরকরণ’ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে। এর আওতায় কারখানার পাশাপাশি রোপওয়ে নির্মাণ করার কথা। এটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের নানজিং সি–হোপ সিমেন্ট ইনঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড।
কারখানা ও প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, নতুন কারখানার পাশাপাশি বাংলাদেশ অংশের রোপওয়ে নির্মাণ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি; কিন্তু ভারত অংশের নির্মাণকাজ চীনের কোম্পানি দিয়ে করাতে চায়নি ভারত সরকার। মূলত এ কারণে ভারত অংশের রোপওয়ে নির্মাণের বিষয়টি ঝুলে যায়।
সূত্রমতে, ভারতীয় একটি প্রতিষ্ঠানকে সাব-কন্ট্রাক্ট (উপচুক্তি) দিয়ে রোপওয়ে নির্মাণে রাজি হয়েছে বাংলাদেশ সরকার ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে ভারত সরকারেরও সম্মতি রয়েছে। ভারতের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কোমোরাহ লাইমস্টোন মাইনিং কোম্পানিকে (কেএলএমসি) এই কাজ দেওয়ার আলোচনা চলছে। ছাতক সিমেন্ট কোম্পানিকে চুনাপাথর সরবরাহ করে এই কেএলএমসি।
ছাতক সিমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ও প্রকল্প পরিচালক মো. আবদুর রহমান গত ১৮ মার্চ প্রথম আলোকে বলেন, চীনা ঠিকাদারকে অনুরোধ করা হয়েছে, ভারত অংশের রোপওয়ে নির্মাণের কাজটা ভারতীয় কোম্পানিকে দিতে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি রাজি হয়েছে।
নির্মাণের পর অলস পড়ে আছে নতুন কারাখানা। ৮ এপ্রিলউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নত ন ক র প রকল প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাক কারখানায় ডাকাতি, কোটি টাকার মালপত্র লুট
সাভারে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার রাতে জিরানীর বাড়ইপাড়া এলাকার হক অ্যাপারেলস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড নামক কারখানার নিটিং সেকশন ও গুদামে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।
ডাকাতরা কারখানার শ্রমিক ও নিরাপত্তাকর্মীদের বেঁধে রেখে সুতাসহ প্রায় কোটি টাকার মালপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় রোববার আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার কিংবা লুট হওয়া মালপত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
কারখানার কর্মকর্তারা জানান, শনিবার রাত ৪টার দিকে ১৫-১৬ সদস্যের ডাকাত দল হক অ্যাপারেলস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার মূল ভবনের পেছনের দিকের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় সেখানে নিটিং সেকশনে কর্মরত দু’জন অপারেটরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। একইভাবে কারখানাটির দু’জন নিরাপত্তারক্ষীকেও বেঁধে রাখে। পরে নিটিং শাখার দুটি কম্পিউটার ও গুদাম থেকে ১০ টন ফেব্রিক, পাঁচ টন সুতাসহ আনুমানিক এক কোটি টাকার মালপত্র লুট করে দুটি ট্রাকে তুলে নিয়ে যায় ডাকাতরা।
কারখানাটির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) নজরুল ইসলাম বলেন, অস্ত্রধারী ডাকাত দলের কাছে দুটি পিস্তল ও রামদা ছিল। মুখে মাস্ক থাকলেও তারা গুদামের কাপড় দিয়ে পুরো মুখ ঢেকে নিয়েছিল। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও ধরা পড়েনি কেউ। মালপত্রও উদ্ধার হয়নি।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, ডাকাতির খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।