আর এক সপ্তাহ পর ১৫ মে থেকে আমের মৌসুম শুরু হচ্ছে রাজশাহীতে। ওইদিন থেকে সব ধরনের গুটি আম গাছ থেকে নামিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন চাষিরা। গুটি আম কিছুটা টক-মিষ্টি স্বাদের হয়। রাজশাহীর সবচেয়ে জনপ্রিয় আম হলো হিমসাগর বা খিরসাপাত ও ল্যাংড়া। এ দুটি আম পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কিছু দিন। ৩০ মে হিমসাগর এবং ১০ জুন আসবে ল্যাংড়া আম। মোটামুটি ভালো জাতের আম গোপালভোগ আসবে ২০ মে থেকে।
বুধবার দুপুরে রাজশাহী জেলার আম নামানোর সময়সীমা নির্ধারণ নিয়ে আম সংগ্রহ, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় এই ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার ঘোষণা করেন জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার। অপরিপক্ক আম নামানো, কেমিকেল দিয়ে পাকানো এবং বাজারজাত ঠেকাতে কয়েক বছর ধরেই ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার ঘোষণা করছে জেলা প্রশাসন। এই সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা, উপজেলা নির্বাহী অফিসার। জেলার আম চাষিদের অনেকেই এ সময় উপস্থিত ছিলেন। রাজশাহীর ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ অনুযায়ী, ১৫ মে থেকে সব ধরনের গুটি আম নামিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন চাষিরা। গত বছর গুটি আম নামানো শুরুর হয়েছিল একই দিন, ১৫ থেকে।
বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০ মে থেকে গোপালভোগ, ২৫ মে রানীপছন্দ এবং লক্ষণভোগ, ৩০ মে হিমসাগর বা খিরসাপাত, ১০ জুন থেকে ল্যাংড়া ও ব্যানানা ম্যাঙ্গো, ১৫ জুন থেকে আমরুপালি ও ফজলি, ৫ জুলাই থেকে বারি-৪, ১০ জুলাই থেকে আশ্বিনা এবং ১৫ জুলাই থেকে গৌড়মতি আম নামানো যাবে। এছাড়া সারাবছর নামানো যাবে কাটিমন ও বারি আম-১১ জাতের বারোমাসি আম।
রাজশাহী জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার বলেন, কোনো দুর্যোগ হলে বা গরমে আগাম আম পেকে গেলে চাষিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নমুনা দেখিয়ে অনুমতি নিয়ে আগাম আম নামাতে পারবেন। আমে যেন কেউ কোনো কেমিকেল ব্যবহার না করেন- সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, এ বছর জেলায় আমের বাগান রয়েছে ১৯ হাজার ৬০৩ হেক্টর জমিতে। এতে ২ লাখ ৬০ হাজার ৬ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে। জেলায় উৎপন্ন এই আম এক হাজার ৬৯৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা বিক্রি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক উম্মে সালমা বলেন, ‘এবার আমের ফলন ভালো হয়েছে। কোনো দুর্যোগ না হলে চাষিরা ভালো ফলন পাবেন।’
কৃষকরা জানান, অনুকুল আবহাওয়া না থাকায় গত দুই বছর আমের উৎপাদন ভালো হয়নি। তাই গত দুই বছর আমের বাজার ছিল চড়া। তবে এবার মুকুলের সময় আবহাওয়া অনুকুলে ছিল। চৈত্র মাসের শুরুতে এবং এরপরও কয়েকদিন বৃষ্টি হয়েছে। এতে আমের গুটি কম ঝরেছে। আমের আকার বড় হয়েছে। সেচ কম লেগেছে। সামনের দিনগুলোতে কোনো দুর্যোগ না আসলে গত দুই বছরের তুলনায় এবার আমের ফলন ভালো হবে।
২০২৩ সালে লম্বা সময় শীত থাকায় মুকুল ঠিকমতো বের হতে পারেনি। গতবছর মুকুল বের হবার সময় বৃষ্টিপাত হওয়ায় মুকুল বের না হয়ে নতুন পাতা বেরিয়ে আসে। গাছের কিছু মুকুল বৃষ্টির পানিতে পচে যায়। সেবার মাত্র ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ গাছে আম এসেছিল। এ কারণে আমের মৌসুম শুরু হয় চড়া দামে। শেষ হয় আরও বেশি দামে। ফলে অনেকেই ঠিকমতো মধুফল আমের স্বাদ নিতে পারেননি। তবে এবার আমের বাজার স্বাভাবিক থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে হাসেম আলী (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার (২২ জুন) সকালে উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়নের হোসেনাবাদ গোড়েরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত হাসেম আলী সদর ইউনিয়নের গোবরগাড়া গ্রামের মৃত আছান শেখের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হাসেম আলী একটি নির্মাণাধীন ভবনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। রবিবার সকালে ইট ভেজানোর জন্য বৈদ্যুতিক মোটর চালু করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন তিনি। পরে স্থানীয়রা তাকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আরো পড়ুন:
শিবচরে ট্রেনে কাটা পড়ে যুবকের মৃত্যু
চট্টগ্রামে করোনায় একজনের মৃত্যু, মোট আক্রান্ত ৬২
দৌলতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, ‘‘বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এক নির্মাণ শ্রমিক মারা গেছেন বলে খবর পেয়েছি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
ঢাকা/কাঞ্চন/রাজীব