বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জুলাই ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার ৯ মাস পর আবু সাঈদ হত্যা মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। নানা আলোচনা সমালোচনার পর বুধবার (৭ মে) দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে তাজহাট মেট্রোপলিটন থানায় মামলা দায়ের করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশিদ।

মামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীসহ ৭১ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এ মামলায় ৮০ থেকে ১০০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

আসামিরা হলেন, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বেরোবির সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার টগর, সহ-সভাপতি বিধান বর্মণ, গ্লোরিয়াস ফজলে রাব্বী, তানভির আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক শাহিদ হাসান সিদ, সহ-সভাপতি মমিনুল হক, আখতার হোসেন, শাহীন ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা সাব্বির হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন, মৃত্যুঞ্জয় রায়, মোশারফ হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, রিফাত হোসেন, ফরহাদ হোসেন এলিট, আবির শাহরিয়ার, আরিফুজ্জামান ইমন, গাজিউর রহমান, ইমরান চৌধুরী আকাশ, সেজন আহমেদ, আরাফাত রহমান, শোয়াইবুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল রায়হান, অমিত হাসান, মাহমুদুর রহমান, পিয়াস আলী, মানিক চন্দ্র সেন, আরিফ হোসেন, সিয়াম আরাফাত, নাফিউল ইসলাম, আবু সালেহ নাহিদ, বায়োজিদ মোস্তাফি।

আরো পড়ুন:

আশুলিয়ায় ইউপি সদস্যের ভাইয়ের মরদেহ উদ্ধার

রইস উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে ছাত্রসেনার কালো পতাকা মিছিল

এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান, লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ, সহকারী রেজিস্ট্রার হাফিজুর রহমান তুফান, কর্মচারী আমির হোসেন, সেকশন অফিসার মনিরুজ্জামান পলাশ, উপ রেজিস্ট্রার তৌহিদুল ইসলাম, প্রক্টর অফিসের সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেল, মাস্টাররোল কর্মচারী নুরনবী, নিরাপত্তা শাখার কর্মচারীর নুর আলম, সহকারী রেজিস্ট্রার (ডেসপাস) মোক্তারুল ইসলাম, সেমিনার সহকারী আশিকুন্নাহার টুকটুকি, সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের উপ-রেজিস্ট্রার মাহবুবা আক্তার, তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরে কর্মচারী মাহবুবার রহমান বাবু, প্রক্টর অফিসের কর্মচারী মো.

আপেলকে আসামি করা হয়েছে।

মামলা এজাহারে বলা হয়, গত বছরের ১১, ১৫ ও ১৬ জুলাই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নম্বর গেটের সামনে ও পাশের মহাসড়কে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করছিল। তখন আওয়ামী লীগ, ছাত্র লীগ যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মী ও চিহ্নিত সন্ত্রাসী হামলা চালায়।

এজাহার আরো বলা হয়, ১১ জুলাই আবু সাঈদকে পোমেল বড়ুয়া থাপ্পড় মারে এবং মাসুদুল হাসান হত্যার উদ্দেশ্যে গলা চেপে ঘরে। এছাড়া ১৬ জুলাই পুলিশ ও বহিরাগতসহ অজ্ঞাতনামা ৮০ থেকে ১০০ জন আসামি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর গুলি, লাঠিসোঁটা, ছোরা, রামদা, ইটপাটকেল, হাতবোমা, পিস্তল নিয়ে হামলা করে। এ হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ নিহত হয়। 

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও মামলার বাদী জানান, সব ধরনের তথ সংগ্রহ করে মামলা করতে তাদের দেরি হয়েছে। 
 

ঢাকা/আমিরুল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ব গম র ক য় র রহম ন ল ইসল ম সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

সুনামগঞ্জে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

সুনামগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হওয়ার প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরে পৃথক এই কর্মসূচি পালিত হয়।

গতকাল বুধবার দুপুরে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কের সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের পাশে যাত্রীবাহী বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে তিনজন নিহত হন। সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে ভর্তি হয়ে বাড়ি ফেরার পথে শিক্ষার্থী স্নেহা চক্রবর্তী, সুনামগঞ্জ টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আফসানা জাহান ওরফে খুশি ও সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলীপাড়া এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলাম (৫৫) নিহত হন।

আজ সকালে সুনামগঞ্জ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ও টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা শান্তিগঞ্জ উপজেলা সদর মোড়ে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে অবস্থা নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এখানে ‘কথায় কথায় অবরোধ, এখন তোমার কোথায় বোধ’, ‘আর কত খুশি মরলে, প্রশাসনের টনক নড়বে’, ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাহিরে’ প্রভৃতি স্লোগান দেওয়া হয়। কর্মসূচি চলাকালে সড়কে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা ফিটনেসবিহীন যান চলাচলে বাধা না দেওয়ায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পরে সড়কে অবস্থান নিয়ে বেলা একটা পর্যন্ত বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাকবিল হোসেন, জাকারিয়া নাইম, রাহাত আহমেদ, আশরাফ হোসেন; টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী হুমায়ুন আহমদ, শান্ত রায়, সুমাইয়া আক্তার, আমিন উদ্দিন, পূর্বা তালুকদার, তাহমিদা জাহান, বুশরা আক্তার প্রমুখ।

আরও পড়ুনবিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি শেষে মেয়েকে তুলে দেন অটোরিকশায়, ১০ মিনিট পর পেলেন মৃত্যুর খবর১৮ ঘণ্টা আগে

বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে এখন প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটছে। মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন। অথচ প্রশাসন, পুলিশ উদাসীন। এই সড়কে ফিটনেসবিহীন লক্কড়ঝক্কড় গাড়ি চলে। অদক্ষ চালকেরা গাড়ি চালান। কিন্ত তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। অথচ তুচ্ছ কোনো কিছু অজুহাত পেলেই পরিবহনশ্রমিকেরা ধর্মঘট ডেকে মানুষকে ভোহান্তিতে ফেলেন। সড়কে এসব হত্যা বন্ধ করতে হবে। শিক্ষার্থী স্নেহা, আফসানার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

এদিকে, বেলা সাড়ে ১১টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ারে একই দাবিতে মানববন্ধন করে বিশ্বজন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এরপর একই স্থানে মানববন্ধন করে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা শাখা। এসব কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, নিহত শিক্ষার্থী আফসানা জাহানের মামা সাইফুল ইসলাম (ছদরুল), সাংবাদিক লতিফুর রহমান ও মাহবুবুর রহমান পীর, শিক্ষক শাহিনা চৌধুরী, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতা ওবায়দুল হক, উন্নয়নকর্মী সালেহিন চৌধুরী, বিশ্বজন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের উপদেষ্টা নুরুল হাসান আতাহের, প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কর্ণ বাবু দাস প্রমুখ।

আরও পড়ুনজন্মদিনে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, ব্যাগে ছিল সহপাঠীদের দেওয়া উপহার৪ ঘণ্টা আগেসুনামগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই শিক্ষার্থীসহ তিনজনের মৃত্যুর প্রতিবাদ ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে মানববন্ধন। আজ দুপুরে সুনামগঞ্জ শহরের আলফাত স্কয়ারে

সম্পর্কিত নিবন্ধ