স্বাধীনভাবে তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করতে পারবে পরিসংখ্যান ব্যুরো
Published: 7th, May 2025 GMT
মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) হিসাব প্রাক্কলন, মূল্যস্ফীতির তথ্য-উপাত্ত কিংবা নিজস্ব জরিপ প্রতিবেদন এখন থেকে স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে পারবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত একটি নীতিমালায় স্বাক্ষর করেছেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। একই সঙ্গে উপাত্ত প্রকাশ নীতিমালায়ও সই করেন তিনি। এর ফলে যে কোনো তথ্য প্রকাশে এখন থেকে মন্ত্রী, উপদেষ্টা কিংবা সরকারের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতি এবং স্বাক্ষর নেওয়ার কোনো প্রয়োজন পড়বে না বিবিএসের।
জাতীয় অর্থনেতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড.
একনেক বৈঠকে ৯টি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। প্রকল্পগুলোর ছয়টিই সংশোধিত। নতুন তিনটি। এসব প্রকল্পের অনুমোদিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৭৫৬ কোটি টাকা। এই অর্থের ২ হাজার ৭৯৮ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব। বাকি অর্থের ৭১৩ কোটি টাকা বিদেশি ঋণ এবং ১৪৫ কোটি টাকা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর নিজস্ব।
বিবিএসের কার্যক্রম সম্পর্কে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, সংস্থার তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ সম্পর্কিত নীতিমালায় সই করেছেন তিনি। এখন থেকে স্বাধীনভাবে তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করতে পারবে তারা। এই নীতিমালা পরবর্তী সরকার রাখবে কিনা, সেটা তারাই জানে। তথ্যের পাশাপাশি উপাত্ত প্রকাশেও কোনো বাধা নেই এখন আর। এর মাধ্যমে শুমারি ও নমুনা জরিপের উপাত্ত, প্রতিবেদন ও মাইক্রো ডেটা প্রকাশ এবং তা ব্যবহারকারীদের কাছে সরবরাহ করা যাবে। নীতিনির্ধারক, গবেষক, শিক্ষার্থী ও অন্যান্য ব্যবহারকারীর চাহিদা অনুসারে পরিসংখ্যান ও উপাত্ত সহজলভ্য, সর্বজনীন, স্বচ্ছ ও ন্যায্য ব্যবহার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে নীতিমালা দুটি করা হয়। এতদিন সরকারপ্রধান কিংবা পরিকল্পনামন্ত্রীর অনুমোদনের আগে তথ্য প্রকাশ করতে পারত না বিবিএস। সরকারের অনুকূলে তথ্য পাল্টে দেওয়ার অভিযোগও শোনা গেছে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা জানান, এখন থেকে মূল্যস্ফীতির প্রাক্কলন, মূল্যস্ফীতির হ্রাস-বৃদ্ধির কারণ, জিডিপির প্রাক্কলনসহ অর্থনীতির একটি বিশ্লেষণ প্রতি মাসে প্রকাশ করবে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি)। নতুন ও পুরোনো প্রকল্প সম্পর্কেও তথ্য প্রকাশ করা হবে। এগুলো জনসমক্ষে আসা উচিত। চলমান প্রকল্পের মূল্যায়নও থাকবে এতে। যেমন– মাতারবাড়ী প্রকল্পটি অতিমূল্যায়িত, নাকি ঠিকই আছে– তা সবার জানা দরকার। পরীক্ষামূলকভাবে গতকালই এপ্রিল সংখ্যা প্রকাশ করা হয়।
পরে এ বিষয়ে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য ড. মনজুর হোসাইন বলেন, ইকোনমিক আউটলুকে স্বল্প ও মধ্যমেয়াদের বিশ্লেষণ থাকবে, যাতে নীতি গ্রহণে সরকারের জন্য সহায়ক হয়। মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করে বিবিএস। কিন্তু কারণ প্রকাশ করে না। ইকোনমিক আউটলুকে তার ব্যাখ্যাও থাকবে। নতুন সংখ্যার বিশ্লেষণে তিনি বলেন, গত মার্চে মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছিল আগের মাসের চেয়ে। এর কারণ হচ্ছে চালের দাম বেশি ছিল মাসটিতে। মূল্যস্ফীতিতে চালের দামের অবদান ছিল ৩৪ শতাংশ। কারণ জানার পর এখন চালের উৎপাদনশীলতায় মনোযোগ বাড়াতে হবে।
গতকাল একনেকে অনুমোদন হওয়া প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সচিবালয়ের সাতটি আঞ্চলিক কার্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্প (তৃতীয় সংশোধন), নারায়ণগঞ্জের খানপুরে অভ্যন্তরীণ কনটেইনার ও বাল্ক টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প (প্রথম সংশোধন), গুলশান-বনানী-বারিধারা লেক উন্নয়ন প্রকল্প (প্রথম সংশোধন), ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট কম্পোনেন্ট-২ ও ৩ (দ্বিতীয় সংশোধনী), বাংলাদেশ সাসটেইনেবল রিকভারি, ইমার্জেন্সি প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড রেসপন্স প্রজেক্ট (বি-স্ট্রং)-ডিডিএম পার্ট, খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট জেলার সেচ ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন প্রকল্প, উইকেয়ার ফেজ-১: ঝিনাইদহ-যশোর মহাসড়ক (এন-৭) উন্নয়ন প্রকল্প এবং বৃহত্তর কুমিল্লা জেলার গুরুত্বপূর্ণ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প (তৃতীয় সংশোধন)।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ব এস ন প রকল প এখন থ ক উপদ ষ ট সরক র র ব ব এস অন ম দ একন ক
এছাড়াও পড়ুন:
এবার ববি উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে যোগ দিলেন শিক্ষকরা
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এবার তাদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে পাশে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সাড়ে ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান কর্মসূচি করেন আন্দোলনকারীরা। পরে ছাত্র-শিক্ষক সংহতি সমাবেশের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক ও ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করা হয়।
এতে অংশগ্রহণ করেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীন, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহসিনা হুসাইন, সমাজকর্ম বিভাগের মোস্তাকিম মিয়া প্রমুখ।
আরো পড়ুন:
এবার ববি উপাচার্যের বাসভবনে তালা
ববি উপাচার্যের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় ৩ মাস ধরে আটকে আছে পরীক্ষা
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শূচিতা শরমিনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, “স্বৈরাচার উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। আমাদের আগামী কর্মসূচি থাকবে উপাচার্য বাদে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করা ও শনিবার সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করা।”
তিনি বলেন, “শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা এ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। শুধু পরীক্ষা ব্যতিত সব ধরনের পাঠদান, মিডটার্ম ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”
কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে দমানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা স্বৈরাচারের শামিল। এছাড়া উপাচার্য অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি ঝুলিয়ে রেখেছেন, যা শিক্ষকদের মাঝে বঞ্চনাজনিত ও অসন্তুষ্ট প্রকাশ পেয়েছে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের স্বৈরাচারী, অপেশাদার আচারণ, দুর্নীতিগ্রস্ত ও অদক্ষতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দিনদিন চরম অধপতনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি।”
এর আগে, বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতসহ ৪২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে তারা প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাস ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী