খালেদা জিয়ার উপস্থিতি দলের জন্য আশীর্বাদ
Published: 8th, May 2025 GMT
ভ্রমণ ক্লান্তি কাটাতে গতকাল বুধবার সারাদিন বিশ্রামে ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। নিয়মিত তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন চিকিৎসকরা। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গতকাল খোশমেজাজে সময় কাটিয়েছেন তিনি।
দলের নেতাদের কেউ গতকাল তাঁর সঙ্গে দেখা করেছেন– এমন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে উৎসাহী কর্মী অনেককে খালেদা জিয়ার গুলশানের বাসভবন ফিরোজার সামনে গিয়ে মোবাইল ফোনে সেলফি তুলতে দেখা গেছে।
দলের একাধিক নেতা জানান, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান লন্ডন থেকে দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। চিকিৎসার জন্য চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াও চার মাস লন্ডনে ছিলেন। তাঁর দেশে ফেরা এবং শারীরিকভাবে তুলনামূলক সুস্থতা নেতাকর্মীকে স্বস্তি দিয়েছে; তাদের উৎফুল্ল করেছে। তাঁর এই উপস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য দলের চলমান লড়াইয়ে নেতাকর্মীকে উজ্জীবিত করেছে বলেও মনে করছেন নেতারা। দেশে তাঁর উপস্থিতি দলের জন্য আশীর্বাদ।
নেতাকর্মী মনে করছেন, দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তাঁর মতো সর্বজনগ্রহণযোগ্য নেতা সবাইকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারবেন। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর যেটি এখন সবচেয়ে জরুরি হয়ে পড়েছে। আগামীর রাজনীতিতে তাঁর দিকনির্দেশনায় দল ও দেশ উপকৃত হবে বলে বিশ্বাস করেন নেতাকর্মী। আবার বিমানবন্দর থেকে গুলশানের বাসা পর্যন্ত পথজুড়ে হাজার হাজার নেতাকর্মীর শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে খালেদা জিয়াও মানসিকভাবে তৃপ্তি বোধ করছেন বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন সমকালকে বলেন, চিকিৎসকরা নিয়ম করে বাসায় গিয়ে খালেদা জিয়াকে দেখে আসছেন। তিনি ভালো আছেন, বিশেষ করে তাঁর মানসিক অবস্থা বেশ ভালো। তিনি মেডিকেল বোর্ডের সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে আছেন।
বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য বলেন, তাঁকে একটানা বসে না থেকে কিছুটা হাঁটা-চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
গত ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। লন্ডন ক্লিনিকে টানা ১৭ দিন চিকিৎসা শেষে ২৫ জানুয়ারি তিনি ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ওঠেন। সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধানে তাঁর চিকিৎসা চলে। চার মাস পর গত মঙ্গলবার দুই পুত্রবধূকে সঙ্গে নিয়ে দেশে ফেরেন তিনি।
পারিবারিক সূত্র জানায়, তারেক রহমানের স্ত্রী ডা.
দলের আরেক স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু সমকালকে বলেন, ‘মাঝে ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রতিহিংসা খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখলেও তিনি এই রাজনীতির জন্য, দেশের গণতন্ত্রের জন্য ত্যাগ স্বীকার করেছেন। কারা নির্যাতন সহ্য করেছেন। আমাদের প্রত্যাশা, তিনি পরিপূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে উঠবেন। তাঁর অভিজ্ঞতা আর আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিচক্ষণতায় দেশে আবারও গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরে আসবে।’
৫ আগস্ট-পরবর্তী বাস্তবতায় মুক্তি পাওয়ার পর খালেদা জিয়া প্রথম ঢাকা সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নেন। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলসংলগ্ন মাঠে বিএনপির বর্ধিত সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন তিনি। এর আগে ২০১৮ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রকাশ্য কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন। কারারুদ্ধ হওয়ার আগে তিনি সিলেট সফর করেছিলেন।
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতির আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি বন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ র জন ত ত র ক রহম ন ন ত কর ম র জন ত র জন য ব এনপ করছ ন সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সংবিধান ও আইন অনুযায়ী সনদ বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ বিএনপি
জুলাই জাতীয় সনদের যে সব বিষয় ঐকমত্য হয়েছে, তার আইনানুগ বাস্তবায়নে এবং যথাসময়ে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে আন্তরিক ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি।
দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অংশ নেওয়া বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরো পড়ুন:
ঐকমত্য কমিশন কী হলো না হলো কিছু আসে যায় না: আমীর খসরু
উপদেষ্টারা পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে কাজ করছেন: ফখরুল
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) রাতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সভায় আলোচনাক্রমে নিম্ন লিখিত প্রস্তাব গৃহিত হয়-
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে দীর্ঘ ও বিস্তারিত আলোচনা শেষে কতিপয় বিষয়ে নোট অব ডিসেন্টসহ যে সকল বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং গত ১৭ অক্টোবর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় ঐতিহাসিক আনুষ্ঠানিকতার মাধ্যমে স্বাক্ষরিত হয়েছে, আমরা তার অংশীদার হিসাবে সনদে বর্ণিত সকল বিষয়কে ধারণ করি এবং দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইন অনুযায়ী তা বাস্তবায়নে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
সর্বসম্মতভাবে গৃহিত জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে নতুন প্রশ্ন কিংবা সংকট সৃষ্টির সকল অপপ্রয়াসের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রকামী জনগণের শক্তিকে ধারণ করে বিএনপি গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠায় দীর্ঘ ১৬ বছরের অবিরাম লড়াই ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের সীমাহীন ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবে।
বিএনপি দৃঢ়ভাবে মনে করে যে, দীর্ঘ আলোচনায় উপনীত ঐকমত্যকে বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট সকল রাজনৈতিক দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে এবং কোনো মতেই নিত্য নতুন প্রশ্ন উত্থাপন কিংবা সংকট সৃষ্ট করে গণতন্ত্র পুণঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আয়োজিতব্য নির্বচন অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টি করবে না।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ