রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। ১৭ দিন পর তালা খুলে দেওয়ায় প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে তালা খুলে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত ২১ এপ্রিল ছয় দফা দাবিতে রাজশাহী পলিটেকনিকের শিক্ষার্থীরা তালা ঝুলিয়ে দেন। শুধু এই প্রতিষ্ঠানই নয়, সেদিন রাজশাহী বিভাগের বেশির ভাগ পলিটেকনিক প্রতিষ্ঠানে তালা দেওয়া হয়। কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজ বৃহস্পতিবার সব কটি প্রতিষ্ঠানে তালা খুলে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।

গতকাল রাতে ঘোষিত কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিভাগীয় কমিটির নোটিশে বলা হয়েছে, বুধবার ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশের (আইডিইবি) উদ্যোগে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে বৈঠক হয়। বৈঠকে সব প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। উপস্থিত সবাই ‘কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ’-এর চলমান ‘শাটডাউন’ কর্মসূচির বিষয়ে সম্মিলিতভাবে মতপ্রকাশ করেন এবং শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান। শিক্ষকদের অনুরোধ এবং কারিগরি শিক্ষার স্বার্থে আন্তরিক উদ্যোগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি তাঁরা সাময়িকভাবে শিথিল করার ঘোষণা দিচ্ছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে রাজশাহী বিভাগের সব পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কর্মসূচি শিথিল করা হবে।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী ও চলমান আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ–প্রতিনিধি মো.

সালমান আহম্মেদ বলেন, ছয় দফা দাবিতে তাঁরা তালা দিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তালা খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে ক্লাস চললেও পরীক্ষা আপাতত বন্ধ থাকবে।

রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মো. আবু হানিফ বলেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শিথিল করায় আজ থেকে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু করা যাচ্ছে। তালাবদ্ধ রাখার কারণে তাঁদের অনেক প্রশাসনিক কাজ জমে আছে। অনেকের বেতনও আটকে ছিল। সেগুলো ঠিক করা হবে। সব শিক্ষার্থী ক্লাসে ফিরবেন বলে তাঁর প্রত্যাশা।

পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে থেকে শিক্ষার্থীরা দাবিগুলো পূরণে আন্দোলন করে আসছেন। গত ১৫ এপ্রিল রাজশাহীর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোর শিক্ষার্থীরা সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করেন। পরের দিনও তাঁরা একই কর্মসূচি পালন করেন। পরে তাঁরা কর্মসূচি কিছুটা শিথিল করে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। পরে গত ২১ এপ্রিল তাঁরা ক্যাম্পাসের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবির মধ্যে প্রথমটি হলো, জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের ৩০ শতাংশ পদোন্নতি কোটা বাতিল করতে হবে। এ ছাড়া জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর পদে ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদোন্নতির রায় বাতিল, ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের পদবি পরিবর্তন, মামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের চাকরিচ্যুত, ২০২১ সালে নিয়োগ পাওয়া ক্র্যাফট ইনস্ট্রাক্টরদের নিয়োগ বাতিল এবং সেই বিতর্কিত নিয়োগবিধি অবিলম্বে সংশোধন করতে হবে।

আরও পড়ুনছয় দফা দাবিতে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে চলছে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’২৯ এপ্রিল ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ থ ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে ঝগড়ার পর স্ত্রীসহ নিজের গায়ে আগুন দিলেন স্বামী

লক্ষ্মীপুরে ঝগড়ার জের ধরে স্ত্রীসহ নিজের গায়ে আগুন দিয়েছেন স্বামী। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রায়পুর উপজেলার উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের চরপক্ষী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বর্তমানে তাঁরা চিকিৎসাধীন।

দগ্ধ দুজন হলেন উত্তর চরআবাবিল ইউনিয়নের গাইয়ারচর এলাকার আবদুল হামিদের মেয়ে রহিমা বেগম। একই ইউনিয়নের চরপক্ষী গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে নুরুল আলম। নুরুল আলম স্থানীয় একটি ইলেকট্রিকের দোকানি।

আগুনে রহিমা বেগমের শরীরের প্রায় ৫০ শতাংশ ও আর তাঁর স্বামীর শরীরের ৩০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে বলে জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) অরূপ পাল। তিনি বলেন, দগ্ধ অবস্থায় দুজন রোগীকে হাসপাতালে আনার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয় তাঁদের।

পুলিশ জানায়, কয়েক বছর আগে নুরুল আলম একই ইউনিয়নের গাইয়ারচর এলাকার রহিমাকে বিয়ে করেন। আজ দুপুরে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে নুরুল আলম তাঁর স্ত্রী ও নিজের শরীরে মিনি গ্যাস সিলিন্ডারের সাহায্যে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে স্থানীয় লোকজন আগুন নিভিয়ে তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এ বিষয়ে রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিজাম উদ্দিন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। আলামত হিসেবে ছোট গ্যাস সিলিন্ডারটি জব্দ করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী দুজন বর্তমানে চিকিৎসাধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ