ময়মনসিংহের ভালুকায় পুলিশ পরিচয়ে যুবলীগের স্থানীয় এক নেতার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার কাচিনা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাচিনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

ডাকাতদের ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল বাড়ির ফটকের দরজা ভাঙার সময় পরিবারের সদস্যরা টের পেয়ে যান। তখন পরিচয় জানতে চাইলে ডাকাতেরা নিজেদের পুলিশ সদস্য পরিচয় দিয়ে ভেতরে ঢোকেন। পরে পরিবারের সদস্যদের হাত-পা বেঁধে টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যান। খবর পেয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যায় পুলিশ।

যুবলীগের ওই নেতার নাম মামুনুর রশিদ। তিনি কাচিনা গ্রামের আবুল কালামের ছেলে এবং ৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে তিনি সদস্যপদে নির্বাচন করেছিলেন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মামুনুরের ভগ্নিপতি আবদুল মালেক বলেন, একটি পিকআপ ভ্যান নিয়ে রাত সাড়ে ৩টার দিকে ১০ থেকে ১৫ জনের ডাকাতদল বাড়িতে হানা দেয়। ঘরের দরজা ভাঙার সময় স্বজনেরা টের পেয়ে যান। তখন তাঁদের পরিচয় জানতে চাইলে বলা হয়, পুলিশের লোক। পরে ভেতরে ঢুকে মামুনুরের তিন বছর বয়সী মেয়ের গলায় ছুরি ধরে জিম্মি করে আরেক মেয়ে ও স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে ফেলেন তাঁরা। এরপর ঘরের স্টিলের আলমিরা ও অন্যান্য ফার্নিচার তছনছ করে ২ লাখ ২৯ হাজার টাকা এবং ৫ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যান।

আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, মামুনুরের ঘরে ছয়জন ডাকাতি করার সময় পাশের ঘরে থাকা তাঁর বাবা আবুল কালামকে দুজন এবং বড় ভাই শফিকুল ইসলামের ঘরে আরও তিনজন ঢুকে তাঁদের বেঁধে ফেলেন। ডাকাত দলের সদস্যরা সবাই ২৫ থেকে ৩০ বছর বয়সী। দুজনের বয়স ৫০ বছরের মতো হবে। প্রায় ৩০ মিনিট সময় ধরে এ কাজ করে তাঁরা এলাকা ছেড়ে চলে যান।

মামুনুরের বড় ভাই শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘরে ঢোকার মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই পেছন থেকে ডাকাতেরা ঘরে ঢুকে আমাকে বেঁধে ফেলেন। দা দিয়ে আমাকে আঘাতও করেন। ডাকাত দল আমার ছোট ভাইয়ের ঘরে গেলে টের পেয়ে ভিন্ন দরজা দিয়ে ঘর থেকে সে পালিয়ে যায়। যেহেতু আমার ভাই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেন, পুলিশ আসতেই পারে। কিন্তু এখানে ডাকাতেরাই ঘটনা ঘটিয়েছেন। সবার মুখ বাধা থাকায় আমরা কাউকে চিনতে পারিনি। ডাকাতেরা চলে যাওয়ার পর আশপাশের লোকজন এসে আমাদের বাঁধন খুলে দেয়।’

খবর পেয়ে ভালুকা মডেল থানার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) গোবিন্দ দাস ঘটনাস্থলে যান। তিনি ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে বাড়িতে দলটি ঢুকলে পালিয়ে যান মামুনুর রশিদ। কিন্তু দলটি  টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছেন বলে পরিবারটি দাবি করছে। জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে কাজ চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স বর ণ ল পর ব র য বল গ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

নাঈম-লিটনকে ফিরিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দল ঘোষণা

 

বাংলাদেশ শেষ ওয়ানডে খেলেছে প্রায় চার মাস আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে। আইসিসির সেই টুর্নামেন্টে ভালো খেলতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্তরা। গত নভেম্বরে আফগানিস্তানের কাছে সিরিজ হার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হওয়া নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে দলের ভেতরে। চার মাস পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেট খেলবে বাংলাদেশ। এই সিরিজ সামনে রেখে নেতৃত্বেও পরিবর্তন এসেছে। মেহেদী হাসান মিরাজ লিড দেবেন ৫০ ওভারের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে।

এদিকে ওয়ানডে সিরিজের আগে শ্রীলঙ্কায় টেস্ট খেলছে বাংলাদেশ। যার একটি শেষ হয়েছে। আগামী ২৫ জুন কলম্বোতে শুরু হবে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এরপর ২ জুলাই কলম্বোতেই শুরু হবে ওয়ানডে সিরিজ। তার আগেই ১৬ সদস্যের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। স্কোয়াডে চমক হিসেবে ফিরেছেন লিটন দাস ও নাঈম শেখ।

সর্বশেষ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দলে ছিলেন না লিটন। আর প্রায় দুই বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরেছেন বাঁহাতি ওপেনার নাঈম শেখ। এছাড়া চোট কাটিয়ে দলে ফিরেছেন পেসার তাসকিন আহমেদও। আজ মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন দল ঘোষণা করেন।

সাবেক অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ও অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। তাদের জায়গা পূরণে স্কোয়াডে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ ও লিটন দাস। ওয়ানডে অধিনায়ক মিরাজের ব্যাটিং অর্ডারেও আসতে পারে পরিবর্তন।

বিসিবির ঘোষিত স্কোয়াড থেকে বাদ পড়েছেন নাসুম আহমেদ ও সৌম্য সরকার। সৌম্যর জায়গায় দলে ফিরেছেন নাঈম, যিনি এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে দারুণ ফর্মে ছিলেন। নাঈমকে জায়গা দেওয়া হয়েছে সৌম্য সরকারের জায়গায়। প্রধান নির্বাচক জানিয়েছেন, সৌম্য পিঠের পুরোনো চোট থেকে পুরোপুরি সেরে না ওঠায় দলে রাখা হয়নি। অন্যদিকে, তাসকিনের সঙ্গে ফিরেছেন মউস্তাফিজুর রহমানও। পেস ডিপার্টমেন্টে আছেন তানজিম হাসান সাকিব, হাসান মাহমুদ ও নাহিদ রানাও। রিস্ট স্পিনে আছেন রিশাদ হোসেন, আর বাঁহাতি স্পিনে তানভীর ইসলাম।

 

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশ ওয়ানডে স্কোয়াড: মেহেদী হাসান মিরাজ (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হোসেন, মোহাম্মদ নাঈম, নাজমুল হোসেন, তাওহিদ হৃদয়, লিটন কুমার দাস, জাকের আলী, শামীম হোসেন, রিশাদ হোসেন, তানভীর ইসলাম, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান, নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ