বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শূচিতা শরমিনের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষার্থীরা। এবার তাদের যৌক্তিক দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করে পাশে দাঁড়িয়েছেন শিক্ষকদের একাংশ।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) সাড়ে ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় অবস্থান কর্মসূচি করেন আন্দোলনকারীরা। পরে ছাত্র-শিক্ষক সংহতি সমাবেশের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক ও ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করা হয়।

এতে অংশগ্রহণ করেন ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক মুহসিন উদ্দীন, কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক, লোকপ্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সিরাজিস সাদিক, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মহসিনা হুসাইন, সমাজকর্ম বিভাগের মোস্তাকিম মিয়া প্রমুখ।

আরো পড়ুন:

এবার ববি উপাচার্যের বাসভবনে তালা

ববি উপাচার্যের স্বাক্ষরের অপেক্ষায় ৩ মাস ধরে আটকে আছে পরীক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শূচিতা শরমিনকে ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন বলেন, “স্বৈরাচার উপাচার্যের পদত্যাগ চাই। আমাদের আগামী কর্মসূচি থাকবে উপাচার্য বাদে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করা ও শনিবার সন্ধ্যায় মশাল মিছিল করা।”

তিনি বলেন, “শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা এ আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। শুধু পরীক্ষা ব্যতিত সব ধরনের পাঠদান, মিডটার্ম ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।”

কোস্টাল স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাফিজ আশরাফুল হক বলেন, “শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির আন্দোলনকে দমানোর জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা স্বৈরাচারের শামিল। এছাড়া উপাচার্য অনেক শিক্ষকের পদোন্নতি ঝুলিয়ে রেখেছেন, যা শিক্ষকদের মাঝে বঞ্চনাজনিত ও অসন্তুষ্ট প্রকাশ পেয়েছে।”

তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের স্বৈরাচারী, অপেশাদার আচারণ, দুর্নীতিগ্রস্ত ও অদক্ষতার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দিনদিন চরম অধপতনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সব যৌক্তিক দাবির সঙ্গে আমরা একাত্মতা পোষণ করছি।”

এর আগে, বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলন করায় গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতসহ ৪২ জন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। আন্দোলনের একপর্যায়ে তারা প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাস ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।

ঢাকা/সাইফুল/মেহেদী

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল উপ চ র য র র পদত য গ

এছাড়াও পড়ুন:

লাল ওড়নার সংকেতে বাঁচল হাজার প্রাণ

স্লিপারের মাঝামাঝি জায়গায় হঠাৎ করেই রেললাইন ফেটে যায়। ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের গাজীপুরের শ্রীপুর বালিয়াপাড়া এলাকার ৩৪০ নম্বর পিলারের কাছাকাছি ফেটে যাওয়া ওই রেললাইনের ওপর দৃষ্টি পড়ে স্থানীয়দের। এরই মধ্যে বলাকা কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফেটে যাওয়া লাইনের কাছাকাছি চলে আসে। এ সময় ওড়না নিয়ে বিপৎসংকেত দেন মুজিবুর রহমান নামে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক কৃষক। দ্রুতগামী ওই ট্রেনচালকের নজর পড়ে ওড়নায়। সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেন ট্রেনটি। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান ওই ট্রেনের ১ হাজার ২০০ যাত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্রীপুর-কাওরাইদ রেলস্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে বালিয়াপাড়া গোলাঘাটের জিরাতি বাড়ি মোড় এলাকায় স্লিপারের মাঝামাঝি জায়গায় হঠাৎ করেই রেললাইন ফেটে যায়। এ খবর পেয়ে এলাকার লোকজন সেখানে জড়ো হন। এরই মধ্যে বলাকা ট্রেন চলে আসায় বাড়ি থেকে আনা ওড়না উড়িয়ে ট্রেন থামান মুজিবুর রহমান। ঢাকা থেকে জাজিরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা বলাকা ট্রেনটি সংকেত পেয়ে নিরাপদে থামিয়ে দেন চালক। পরে কাওরাইদ স্টেশন থেকে রেলওয়েকর্মী কর্মী সোহেল রানা এসে ফাটল পরীক্ষা করে সমস্যার সমাধান করেন। এরপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়। 
বালিয়াপাড়া গ্রামের প্রয়াত আব্দুল আজিজের ছেলে মুজিবুর রহমান বলেন, রেললাইনে ফাটল ধরার খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। পরে দেখতে পান একটি ট্রেন আসছে। তা দেখে বিপদ বুঝতে পেরে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর ওড়না এনে সংকেত দেন। পরে চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন। বালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন জানান, মুজিবুর রহমানই প্রথম রেললাইনের ফাটলটি দেখতে পান। পরে তাঁর আত্মীয় শফিকুল ইসলামকে জানান। শফিকুল আবার তাঁর ভাই রফিকুলকে জানান। এভাবে এলাকায় রেললাইনে ফাটল হওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন সেখানে ভিড় করেন। এরপরই বলাকা ট্রেনটি চলে আসে। মুজিবুর তখন 
বাড়ি গিয়ে তাঁর স্ত্রীর ওড়না নিয়ে এসে সংকেত দেন। 
শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, ৩৪০ এর ৪/৫ কিলোমিটার সেকশনে এ ফাটল দেখা দেয়। এলাকাবাসীর সচেতনতার কারণে বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে ট্রেনটি রক্ষা পেয়েছে। তিনি বলেন, বলাকা ট্রেনে ১২টি বগি 
ছিল। প্রতি বগিতে কমপক্ষে একশ জন যাত্রী ছিলেন। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ