স্লিপারের মাঝামাঝি জায়গায় হঠাৎ করেই রেললাইন ফেটে যায়। ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের গাজীপুরের শ্রীপুর বালিয়াপাড়া এলাকার ৩৪০ নম্বর পিলারের কাছাকাছি ফেটে যাওয়া ওই রেললাইনের ওপর দৃষ্টি পড়ে স্থানীয়দের। এরই মধ্যে বলাকা কমিউটার এক্সপ্রেস ট্রেনটি ফেটে যাওয়া লাইনের কাছাকাছি চলে আসে। এ সময় ওড়না নিয়ে বিপৎসংকেত দেন মুজিবুর রহমান নামে পঞ্চাশোর্ধ্ব এক কৃষক। দ্রুতগামী ওই ট্রেনচালকের নজর পড়ে ওড়নায়। সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেন ট্রেনটি। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পান ওই ট্রেনের ১ হাজার ২০০ যাত্রী। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শ্রীপুর-কাওরাইদ রেলস্টেশনের মাঝামাঝি স্থানে বালিয়াপাড়া গোলাঘাটের জিরাতি বাড়ি মোড় এলাকায় স্লিপারের মাঝামাঝি জায়গায় হঠাৎ করেই রেললাইন ফেটে যায়। এ খবর পেয়ে এলাকার লোকজন সেখানে জড়ো হন। এরই মধ্যে বলাকা ট্রেন চলে আসায় বাড়ি থেকে আনা ওড়না উড়িয়ে ট্রেন থামান মুজিবুর রহমান। ঢাকা থেকে জাজিরার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা বলাকা ট্রেনটি সংকেত পেয়ে নিরাপদে থামিয়ে দেন চালক। পরে কাওরাইদ স্টেশন থেকে রেলওয়েকর্মী কর্মী সোহেল রানা এসে ফাটল পরীক্ষা করে সমস্যার সমাধান করেন। এরপর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বালিয়াপাড়া গ্রামের প্রয়াত আব্দুল আজিজের ছেলে মুজিবুর রহমান বলেন, রেললাইনে ফাটল ধরার খবর পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন। পরে দেখতে পান একটি ট্রেন আসছে। তা দেখে বিপদ বুঝতে পেরে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর ওড়না এনে সংকেত দেন। পরে চালক ট্রেনটি থামিয়ে দেন। বালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন জানান, মুজিবুর রহমানই প্রথম রেললাইনের ফাটলটি দেখতে পান। পরে তাঁর আত্মীয় শফিকুল ইসলামকে জানান। শফিকুল আবার তাঁর ভাই রফিকুলকে জানান। এভাবে এলাকায় রেললাইনে ফাটল হওয়ার বিষয়টি ছড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন সেখানে ভিড় করেন। এরপরই বলাকা ট্রেনটি চলে আসে। মুজিবুর তখন
বাড়ি গিয়ে তাঁর স্ত্রীর ওড়না নিয়ে এসে সংকেত দেন।
শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান বলেন, ৩৪০ এর ৪/৫ কিলোমিটার সেকশনে এ ফাটল দেখা দেয়। এলাকাবাসীর সচেতনতার কারণে বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে ট্রেনটি রক্ষা পেয়েছে। তিনি বলেন, বলাকা ট্রেনে ১২টি বগি
ছিল। প্রতি বগিতে কমপক্ষে একশ জন যাত্রী ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ম জ ব র রহম ন ট র নট
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই বিপ্লবকে উপজীব্য করে মঞ্চে আজ দুই নাটক
জুলাই বিপ্লবের স্পিরিটকে উপজীব্য করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে আজ শুক্রবার ২৭ জুন উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হবে নাটক ‘আর কত দিন’ ও ‘অগ্নি শ্রাবণ’। সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ‘আর কত দিন’ নাটকটির মঞ্চায়ন হবে। কথাসাহিত্যিক জহির রায়হান-এর বিখ্যাত উপন্যাস ‘আর কত দিন’ অবলম্বনে ‘অন্তর্যাত্রা’র নতুন প্রযোজনা ‘আর কত দিন’ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন খন্দকার রাকিবুল হক।
একাডেমি সূত্র জানায়, বাঙালি কালে কালে অত্যাচারী শোষকের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে নিজেকে টিকিয়ে রাখার জন্য। কিন্তু ইতিহাস বলে সে লড়াই কখনও শেষ হয়নি। তাই বারবার মনে প্রশ্ন জাগে- আর কত দিন? প্রযোজনা সম্পর্কে নির্দেশক খন্দকার রাকিবুল হক বলেন, জহির রায়হান রচিত ‘আর কত দিন’ অভিব্যক্তিবাদী রচনা। মঞ্চ প্রয়োগ ভাবনা দুরূহ এবং সময়সাপেক্ষ। কিন্তু বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া বিপ্লব ও বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশের চিত্র, প্রশ্ন এবং সংকট উত্তরণের ধারণা উপন্যাসের মননে রয়েছে। মঞ্চ ও আলোর প্রয়োগ থিয়েট্রিক্যালিজম ধারার অনুবর্তী। পোশাকের ক্ষেত্রে কন্সট্রাকটিভইজমের আপাত ধারণার প্রয়োগ স্পষ্ট।
‘আর কত দিন’ এর মঞ্চ প্রয়োগে জাদু বাস্তবতার আভাস রয়েছে। গল্পটি একরৈখিক নয়। ঘটনার আভাসে অনুঘটন স্পষ্ট। নন-রিয়েলিস্টিক উপাদানের আপাত ধারণায় নির্মিত নাটক এটি।নাটকটির মঞ্চ পরিকল্পনায় রয়েছেন রাসেল ইসলাম এবং আলোক পরিকল্পনায় রয়েছেন অম্লান বিশ্বাস। পোশাক ও সঙ্গীত পরিকল্পনা করেছেন যথাক্রমে শাহীনূর আক্তার প্রীতি ও অর্ণব মল্লিক। পোস্টার ও স্যুভেনির ডিজাইন করেছেন থিয়েটার ম্যানেজমেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘আজকের নাটক’।
বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন শাহজাদা সম্রাট চৌধুরী, সৌমিক বাগচী, সাজ্জাদুল ইসলাম শুভ, উম্মিতা চৌধুরী, ইশতিয়াক আহমেদ, ঐন্দ্রিলা মজুমদার অর্ণা, সপ্তর্ষী বিশ্বাস, প্রজ্ঞা প্রতীতি, মুনতাহানা ফিজা, মুস্তাফিজ তোফা, মুক্তাদিরুল ইসলাম সিফাত, শাফায়েত জামিল লিজান, দেবাদ্রিতা সরকার অহনা, মিথিলা তাসফিয়া, স্নেহা বান্টা, আতিকুজ্জামান শিবলু ও অথৈ সরকার আঁচল।
এদিকে শিল্পকলা একাডেমির এক্সপেরিমেন্টাল থিয়েটার হলে একই সময় সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ হবে ভৈরবী গীতরঙ্গ দলের প্রযোজনা ‘অগ্নিশ্রাবণ’। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনায় রয়েছেন ইলিয়াস নবী ফয়সাল। ‘অগ্নিশ্রাবণ’ সময় ও সংগ্রামের মঞ্চ নাটক। সময়ের গতিপথ থেমে থাকে না, এগিয়ে চলে নিজের ছন্দে, রচনা করে ইতিহাসের একের পর এক নতুন অধ্যায়। সেই পরিবর্তনের ধারায় নির্মিত হয়েছে এই নাটকটি। প্রতীকী ভাষা, কাব্যনির্ভর সংলাপ ও চিত্রকল্পের মিশেলে এই নাটকটি তুলে ধরবে সময়ের সাথে মানুষের অস্তিত্ব সংকট ও আত্মজাগরণের এক অন্তর্গত যাত্রা।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করছেন অর্পিতা, অপরাজিতা, অতনু, আয়রা, বিপ্লব, ধ্রুব, দীপ্ত, ফাহমিদা, ইকরা, রাজিব, লাবণ্য, নন্দিতা, পারমিতা, প্রীতম, নদী, লামিয়া, সিফাত, সোহা, অংকন, স্বপ্নীল, তোমো, প্রত্যাশারম্য, অর্থী, নোবেল, রিয়া ও পার্থ প্রমূখ।