তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি পরিস্থিতি এখনও বেশ ভালো। জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এ বছরের প্রথম তিন মাসে পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধির হিসাবে এগিয়ে বাংলাদেশ। আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে এ সময় বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ২৭ শতাংশ। চীনের এ হার ৪ শতাংশ। ভিয়েতনামের ১৪ শতাংশের কাছাকাছি। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক আমদানি বেড়েছে ১১ শতাংশের মতো। অর্থাৎ সারাবিশ্ব থেকে যে হারে আমদানি বাড়িয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ থেকে বেড়েছে তার দ্বিগুণেরও বেশি।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) সর্বশেষ পরিসংখ্যান বলছে, তিন মাসে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ২২২ কোটি ৪০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৭৬ কোটি ডলারের কিছু কম। আগের বছরের একই সময়ের সঙ্গে রপ্তানি তুলনায় হারে রপ্তানি বাড়লেও পরিমাণে এখনও চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। এ সময় চীনের রপ্তানি পরিমাণ ছিল ৩৬০ কোটি ডলার। ভিয়েতনামের এ পরিমাণ ৩৮৮ কোটি ডলারের মতো। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি এবং পরিমাণের বিবেচনায় চীনকে টপকে গেছে ভিয়েতনাম। আলোচ্য তিন মাসে সারাবিশ্ব থেকে যুক্তরাষ্ট্র দুই হাজার পাঁচ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। 

অটেক্সার প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে শীর্ষ ১০ দেশের বাকি দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের কাছাকাছি চলে এসেছে ভারত। প্রবৃদ্ধির দিক থেকে দেশটির অবস্থান তৃতীয়। রপ্তানি বেড়েছে ২৪ শতাংশ। রপ্তানির পরিমাণ ১৫০ কোটি ডলার। প্রবৃদ্ধির দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে ইন্দোনেশিয়া। যুক্তরাস্ট্রের বাজারে দেশটির রপ্তানির পরিমাণ বাংলাদেশের রপ্তানি প্রায় অর্ধেক– ১২৩ কোটি ডলার। চতুর্থ অবস্থানের উঠে এসেছে পাকিস্তান। রপ্তানি বেড়েছে ১৭ শতাংশ। পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৫ কোটি ডলার। 

অটেক্সার তথ্য-উপাত্ত বলছে, পোশাকের সংখ্যার হিসাবে রপ্তানি বেশি বেড়েছে ভারতের। এ হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রে দেশটির পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ২৭ শতাংশ। বাংলাদেশের এ হার ২৫ শতাংশ। চীনের ২ ও ভিয়েতনামের ৯ শতাংশ। তবে পোশাকের দরের দিক থেকে চীন ও ভিয়েতনামের চেয়ে পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। পণ্যভেদে বাংলাদেশের পোশাকের দর বেড়েছে ১ দশমিক ১২ শতাংশ। চীনের ২ শতাংশের মতো ও ভিয়েতনামের ৪ শতাংশ। এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে ভারত ও পাকিস্তান। দেশ দুটির পোশাকের দর কমেছে সমান ২ শতাংশ হারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানি প্রবণতা প্রসঙ্গে তৈরি পোশাক উৎপাদন ও রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল সমকালকে বলেন, রপ্তানির এ চিত্র বেশ আশাবাদী করে তোলে আমাদের। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কারণে রপ্তানির এ প্রবাহ কতটা ধরে রাখা যাবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক গত এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। ৩৭ শতাংশ শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প রব দ ধ পর ম ণ বছর র

এছাড়াও পড়ুন:

অলস সময় কাটছে শুটারদের

‘শুটিংয়ে কিছুই হয় না। সব কিছু বন্ধ’–ফোনের ওপাশ থেকে সাবেক শুটার শারমিন আক্তার রত্নার এই অভিব্যক্তিই বলে দিচ্ছে বাংলাদেশের শুটিংয়ের বেহাল দশা। পরিবর্তিত পরিস্থিতির পর থেকে এই পর্যন্ত ঘরোয়া প্রতিযোগিতা যেমন হয়নি, তেমনি আন্তর্জাতিক আসরগুলোতেও প্রতিনিধিত্ব করতে পারেননি বাংলাদেশের শুটাররা। অ্যাডহক কমিটি না হওয়ায় শুটিংয়ের ভবিষ্যৎ দেখছেন না শুটাররা। কয়েকজন ক্লাবের উদ্যোগে অনুশীলন করলেও একটা গেমস খেলার জন্য তা যথেষ্ট নয়। ৮-৯ মাস ধরে অভিভাবকশূন্য শুটিংয়ে শুধু হতাশা। অলস সময় কাটছে শুটারদের।

সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৬ সালের ২৩-৩১ জানুয়ারি পাকিস্তানে হবে সাউথ এশিয়ান গেমস। বাংলাদেশ যে ২৬টি ডিসিপ্লিনে অংশ নেবে তার মধ্যে আছে সম্ভাবনাময় ইভেন্ট শুটিং। অন্য ফেডারেশনগুলোর বেশির ভাগই প্রস্তুতিতে নেমে পড়েছে। শুটিংয়ে তার কিছুই হয়নি। এখনও কমিটিই হয়নি দেশের সম্ভাবনাময় এই ডিসিপ্লিনে। অথচ চার মাসের বেশি সময় আগে নাকি শুটিংয়ের কমিটি যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছে সার্চ কমিটি। কেন শুটিংয়ের কমিটি ঘোষণার প্রজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে না, তা অজানা সার্চ কমিটির আহবায়ক জোবায়েদুর রহমান রানার কাছে। 

গতকাল সমকালের কাছে তিনি বলেন, ‘প্রজ্ঞাপন তো দেবে মন্ত্রণালয়। সেটি তো আর আমাদের হাতে নেই। আমরা চার মাসের বেশি সময় আগে শুটিং ফেডারেশনের অ্যাডহক কমিটি দিয়ে রেখেছি। শেষ কো-অর্ডিনেশন মিটিং করতে হয় কমিটি চূড়ান্ত করার জন্য। সেটিও আমরা করে দিয়েছি। এরপর তাদের কাজ হলো প্রজ্ঞাপন করা। শুধু শুনছি করবে করবে। কী সমস্যা সেটি তারা বলতে পারবেন, আমরা জানি না।’ 

চার মাস ধরে শুটিংয়ের কমিটি কেন ঘোষণা করা হচ্ছে না তা জানতে চাইলে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যাচাই করছি। যাচাই প্রতিবেদন এখনও আসেনি।’

আমলাতান্ত্রিক এ জটিলতায় শুটারদের ক্যারিয়ার এখন হুমকির মুখে। এরই মধ্যে ঘরোয়া দুটি প্রতিযোগিতা জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ এবং এয়ারগান ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপ হয়নি। গত ফেব্রুয়ারিতে থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপে খেলা হয়নি বাংলাদেশের শুটারদের। অথচ এই প্রতিযোগিতায় পদক জিতেছেন মালদ্বীপের মতো দেশের শুটাররা; যারা শুটিংয়ে খুব একটা পদক পান না। গত এপ্রিলে আর্জেন্টিনায় শুটিং বিশ্বকাপে খেলা হয়নি। চলতি মাসে জার্মানিতে অনুষ্ঠিত জুনিয়রদের বিশ্বকাপেও অংশ নেয়নি বাংলাদেশ। জুনে এই জার্মানিতে সিনিয়রদের বিশ্বকাপে এবং আগস্টে কাজাখস্তানে এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সম্ভাবনা দেখছেন না রত্না। শুধু গত ফেব্রুয়ারিতে তারুণ্যের উৎসব হয়েছিল শুটিংয়ে। 

এ অবস্থায় শুটাররা কতটা অসহায় হয়ে পড়েছেন তা উঠে এসেছে শারমীন আক্তার রত্নার কণ্ঠে, ‘শুটার সবাই হতাশ। অভিভাবকহীন অবস্থার কারণে সবাই খুব বিরক্ত। যারা ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আছেন, তারা তো প্রতিযোগিতা শুরু করা কিংবা অন্য কোনো বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। এ অবস্থায় আমাদের শুটারদের পারফরম্যান্স তলানির দিকে চলে যাচ্ছে। শুটিং তো অন্যান্য ফেডারেশনের মতো নয় যে, এক সপ্তাহ কিংবা ১০-১৫ দিন অনুশীলন করলেই আগের মতো ফিটনেস চলে আসবে। শুটিংয়ের প্র্যাকটিসটা লাগে দীর্ঘমেয়াদি। সেখানে এখন তো খেলা ৯ মাসের মতো বন্ধ।’ 

শুটিং রেঞ্জে প্রাণ ফেরানোর জন্য দ্রুতই যেন কমিটি দেয় মন্ত্রণালয় সেই আর্জি শুটারদের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সন্দেহপ্রবণ নারী চরিত্রে এই প্রথম অভিনয়
  • অভ্যন্তরীণ সুবিধা পেতে পাক-ভারত ‘যুদ্ধ’
  • বিএনপির ‘রিকনসিলিয়েশন’ তত্ত্বের ব্যবহারিক তাৎপর্য
  • পাকিস্তান যেভাবে ভূপাতিত করল ভারতের ৫ যুদ্ধবিমান
  • যেভাবে ভূপাতিত ভারতের ৫ যুদ্ধবিমান
  • কুমিল্লায় আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে আয় হলেও চালু হচ্ছে না অভ্যন্তরীণ রুট
  • ঢাকায় আসছে ‘বায়ান’
  • আন্তর্জাতিক ফ্লাইট থেকে আয় হলেও চালু হচ্ছে না অভ্যন্তরীণ রুট
  • অলস সময় কাটছে শুটারদের