রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয়: গয়েশ্বর
Published: 10th, May 2025 GMT
রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।
শনিবার (১০ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ১২ দলীয় জোট আয়োজিত বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণ ও সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ সব সমস্যার সমাধান নয়। সমস্যা মনমানসিকতার। পাকিস্তান সৃষ্টির মূল কারিগর ছিল মুসলিম লীগ। আজকে তাদের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় না। জাসদও বড়দল ছিল। আজ কয়েকভাগে বিভক্ত। ভাসানী-কাজী জাফরের নেতৃত্বাধীন ইউপিপিও বিলীন হয়ে গেছে। জনগণের বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নেয়, তারা এমনিতেই বিলীন হয়ে যায়।”
আরো পড়ুন:
পলোগ্রাউন্ড ময়দানে শুরু হয়েছে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশ
রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যে ফাটল ধরাতে চাইছে সরকার: তারেক রহমান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “আইনের শাসন নিশ্চিতের মাধ্যমে জনগণই ঠিক করে কারা গ্রহণযোগ্য বা কারা জনগণ কর্তৃক নিষিদ্ধ।কালকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে দিলেন, পরশুদিন যে বিএনপিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করবেন না, তার গ্যারান্টি কী? আওয়ামী লীগ যদি দেশ ও গণতন্ত্রের জন্য পয়জন হয়, মানুষ যদি মনে করে আওয়ামী লীগ দেশের জন্য, গণতন্ত্রের প্রয়োজন, তাহলে জনগণই তাদের নিষিদ্ধ করে দেবে।”
বিএনপির এই নেতা বলেন, “জামায়াত এখনও নিষিদ্ধ দল। এখনো তারা নিবন্ধন ফিরে পায়নি। তারপরও তাদের গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার। এই জামায়াত কীভাবে নিষিদ্ধ হয়েছিল? আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে তা দাবি করতে হবে কেন? আজকে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কলকাঠি কারা নাড়াচ্ছেন? যারা এদেশে ১/১১ এনেছিল, তারাই অদৃশ্যভাবে এ সরকার চালাচ্ছে।”
সাবেক রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের দেশত্যাগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “হামিদ চলে গেলেন। রাষ্ট্রের দুইবার প্রেসিডেন্ট। কোনো সংস্থা জানে না তিনি যাচ্ছেন। যখন ইমিগ্রেশন ক্রস করলেন সরকার তা জানে না, এটি বিশ্বাসযোগ্য নয়। সরকারের সম্মতি ছাড়া তিনি বাইরে যেতে পারেন না। আসলে সরকার কয়টা? আছে ইউনূস সরকার, ছাত্রদের সরকার।”
তিনি বলেন, “আজকে আরাকান নিয়ে জনগণ ফুঁসে উঠায় চুপ হয়ে আছে। সরকার কিন্তু এখনো একবারও বলেনি আমরা এগুলো করছি।”
তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, “তারেক রহমানের দেশে ফিরতে বাধা নেই এটি আমরা সরকারের কাছ থেকে শুনতে চাই। আপনারা তো বিদেশ থেকে এনে কাউকে কাউকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বও দিয়েছেন। তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিরাপত্তা মূল কারণ নয়। মূল কারণ আমাদের জ্ঞাত হতে হবে।”
“যে মানুষটি বিদেশে বসেও দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, ভোটের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য কাজ করেছেন আজকে তার স্বদেশ ফিরতে বাধা কোথায় জাতি তা জানতে চায়।”
১২ দলীয় জোট প্রধান এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন জোটের মুখপাত্র ও বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির মহাসচিব সাবেক এমপি আহসান হাবিব লিংকন, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, লেবার পার্টি বাংলাদেশের মহাসচিব আমিনুল ইসলাম, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব আব্দুল করিম নয়া গণতান্ত্রিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ মান্নান প্রগতিশীল জাতীয়তাবাদী দল পিএনপির চেয়ারম্যান ফিরোজ মুহাম্মদ লিটন, কল্যাণ পার্টির মহাসচিব আবু হানিফ, জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি জাকির হোসেন, গণতান্ত্রিক পার্টির মহাসচিব ইমরুল কায়েস ও কৃষকদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম।
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ত র ক রহম ন র ব এনপ র সরক র আওয় ম ইসল ম সমস য
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপিতে ৫ শতাংশ শিক্ষকের মনোনয়ন চায় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে (বিএনপি) ৫ শতাংশ শিক্ষকের মনোনয়ন চায় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট। বিশেষ করে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ত্যাগী, স্বচ্ছ, হামলা-মামলার শিকার ও কারাভোগকারী শিক্ষক নেতৃবৃন্দকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানায় শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের মহাসচিব মো. জাকির হোসেন।
তিনি বলেন, ‘‘বিএনপি ২৩৭টি মনোনয়ন ঘোষণা করলেও এখনও সুযোগ রয়েছে শিক্ষক সমাজকে মূল্যায়ন করার। আমরা আশা করবো বিএনপি দীর্ঘদিনের নির্যাতিত ত্যাগী শিক্ষকদের মনোনয়নের মাধ্যমে মূল্যায়ন করবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘শিক্ষার মানোন্নয়ন, শিক্ষক মর্যাদা রক্ষা এবং গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঐক্যজোট সবসময় প্রগতিশীল ভূমিকা পালন করেছে। যখন গণতন্ত্রের পথ রুদ্ধ ছিল, তখনও আমরা থেমে থাকিনি। ‘আমরা বাংলাদেশী’ এবং ‘প্রফেশনাল মুভমেন্ট’-এর মতো নতুন প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টি করে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে গেছি। বিগত ১৭ বছর শিক্ষক নেতাদের ওপর নির্যাতন, মামলা, হয়রানি, চাকরিচ্যুতি, হামলা ও কারাবরণ- সব কিছুই আমরা দেখেছি, সহ্য করেছি। কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও গণতন্ত্রের পক্ষে দাঁড়ানো থেকে পিছপা হইনি। এই ত্যাগ-তিতিক্ষা কেবল শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের নয়, এটি বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গন, ছাত্রসমাজ এবং লাখো অভিভাবকের স্বপ্নের প্রতিনিধিত্ব করে।’’
লিখিত বক্তব্যে জাকির হোসেন বলেন, ‘‘আমরা মনে করি, সংবিধান অনুযায়ী জনগণই সকল ক্ষমতার উৎস। আর সেই জনগণের প্রতিনিধি নির্বাচিত হন জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। জাতীয় সংসদে যদি সৎ, স্বচ্ছ, দেশপ্রেমিক, নীতিবান ও জনদরদী প্রতিনিধি না থাকেন তাহলে দেশ কখনও সমৃদ্ধির পথে এগোতে পারে না। শিক্ষকেরা দেশের বিবেক। শিক্ষকরা সমাজের নৈতিক ও বৌদ্ধিক নেতৃত্ব দেন। তাই জাতীয় সংসদে শিক্ষকদের অধিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।’’
তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ জাতীয়বাদী দল ইতোমধ্যেই ৩১ দফা প্রস্তাবনার মধ্য দিয়ে একটি নতুন, গণতান্ত্রিক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, মানবাধিকার, প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যাপক সংস্কারের যে পরিকল্পনা দলটি ঘোষণা করেছে, তাতে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ থাকলে নীতিনির্ধারণ আরও শক্তিশালী হবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘গত ১৭ বছর শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের বহু নেতা হামলার শিকার হয়েছেন, মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন, দীর্ঘ কারাবাসসহ মারাত্মক হয়রানি সহ্য করেছেন। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন, পরিবারে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা নেমে এসেছে। কিন্তু তারা আন্দোলনের পথ ছাড়েননি। আজ যখন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে, যখন নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা সামনে, তখন এই ত্যাগী, স্বচ্ছ, নীতিবান শিক্ষক নেতাদের রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা অত্যন্ত জরুরি। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, যারা ত্যাগ করেছেন, সংগ্রাম করেছেন, গণতন্ত্রের জন্য নিজেদের জীবন-জীবিকা ঝুঁকিতে ফেলেছেন, তারাই নতুন রাষ্ট্র গঠনে সবচেয়ে যোগ্য নেতৃত্ব দিতে পারেন।’’
এমন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দের কাছে তারা নির্বাচনে কমপক্ষে ৫ শতাংশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের ত্যাগী শিক্ষককে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।
ঢাকা/নাজমুল//