ঢাকার অদূরে সাভারের আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে একটি দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় নরসিংহপুর এলাকায় আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকানে এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার পরপরই স্থানীয় লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। যানজটের কারণে প্রায় দুই ঘণ্টা পর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। ৪টি ইউনিট ১০ মিনিটের চেষ্টায় আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল সন্ধ্যা সাতটার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর এলাকায় করিম মিয়ার মালিকাধীন আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজ নামের গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির দোকানে ভেতরে আগুন জ্বলতে দেখেন স্থানীয় লোকজন। এ সময় দোকানের শাটার নামানো ছিল। স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে ওই স্টেশনসহ ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালায়। সড়কে যানজট থাকায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দেরি হয় তাঁদের। তবে পৌঁছানোর পর ১০ মিনিটের চেষ্টায় রাত ৯টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন তাঁরা।

স্থানীয় বাসিন্দা অনীক সরকার বলেন, সন্ধ্যার দিকে দোকানের ভেতরে একজন খালি সিলিন্ডারে গ্যাস ভরছিলেন। হঠাৎ আগুন ধরে গেলে তিনি দোকানের শাটার নামিয়ে দোকান থেকে বের হয়ে যান। এ ছাড়া আশপাশে দোকানের আরও যাঁরা ছিলেন, তাঁরা সবাই পালিয়ে যান। এখানে তাঁরা প্রায় তিন–চার বছর ধরে ব্যবসা করছেন।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, দোকানটিতে গ্যাসের খালি সিলিন্ডারে গ্যাস ভরা (রিফিল) হতো। তবে গ্যাস ভরার সময় সিলিন্ডারের ওজন বাড়াতে অবৈধভাবে সিলিন্ডারের ভেতরে পানি ও বালু ঢোকানো হতো।

স্থানীয় বাসিন্দা মো.

আশরাফুল বলেন, ‘বড় বোতল থেকে (গ্যাস সিলিন্ডার) ছোট বোতলে গ্যাস ভরার সময় বালু আর পানি ভরে। পোশাকশ্রমিকেরা গ্যাসের বোতল কেনেন, ১০ দিনেই তাঁদের গ্যাস শেষ হয়ে যায়। প্রতিবাদ করলে বলে কোম্পানি থিকা গ্যাস কম দেয়। একবার আমার এক দাদা প্রতিবাদ করছিল, স্থানীয় নেতারা পরে তাঁকে মারধর করেছে। দোকানে আগুন লাগছে। আগুন নিভাইতে আমরা নিজেরা চেষ্টা করছি। সড়কে যানজট থাকায় পরে সবাই মিলা সহযোগিতা কইরা ফায়ার সার্ভিসকে আনছি।’

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আবদুল্লাহ এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একটা সময়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার কারণে পুলিশ দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে আমাকে হয়রানি করা হয়েছে। আগুন লাগার পর তাঁরা আবার মিথ্যা অভিযোগ করতেছে। যাঁরা সিলিন্ডার কেনেন, তাঁরা তো কখনো অভিযোগ করেননি। আমার ব্যবসার বৈধ কাগজপত্র আছে। কী পরিমাণ গ্যাস কিনি, আর কী পরিমাণ বিক্রি করি, তার সব কাগজপত্র আছে। সেগুলো দেখলেই প্রমাণ হয়ে যাবে।’

জিরাবো মর্ডান ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা আবু সায়েম মাসুম বলেন, সড়কে যানজট থাকার কারণে ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে একটু সময় লেগে গেছে। দোকানমালিক জানিয়েছেন বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিটের কারণে আগুন লেগেছে। বিষয়টি তদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব নয়।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ য স ভর আগ ন ন য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা ভারতের

বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়। স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিলেও দেশটির নহাভা শেভা সমুদ্র বন্দর দিয়ে আমদানি করা যাবে।

তবে এভাবে একের পর এক পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় বেনাপোল পেট্রাপোল বন্দরে পণ্যের জোগান কমতে শুরু করেছে। এতে হতাশায় ভুগছেন বন্দর ব্যবহারকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ।

ভারতের পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং অ্যান্ড ফরওয়ার্ডিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী সমকালকে বলেন, পণ্য আমদানি-রপ্তানিতে একের পর এক নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় হতাশায় ভুগছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব অজয় ভাদু স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত দ্রব্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন।

তিনি আরও বলেন, ভারতের অনেক ছোট ছোট আমদানিকারকরা বাংলাদেশ থেকে পার্ট ও পাটজাত দ্রব্য আমদানি করতো। এসব ছোট আমদানিকারকরা সমুদ্রপথে এ পণ্য আমদানিতে নিরুৎসাহিত হবেন। 

বেনাপোল সি অ্যান্ড এফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুজিবর রহমান বলেন, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন অনেক পাট ও পাটজাত দ্রব্য ভারতে রপ্তানি হয়। ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় হঠাৎ করে স্থলপথে পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় অনেক ব্যবসায়ী ও কর্মচারীরা কাজ হারিয়ে বেকার হয়ে পড়বে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ