বুদ্ধ পূর্ণিমার বন্ধেও চলছে চবির ভর্তি কার্যক্রম
Published: 11th, May 2025 GMT
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা আজ রোববার। বুদ্ধপূজা ও শীল গ্রহণ, পিণ্ডদান, ভিক্ষু সংঘের প্রাতরাশসহ নানা আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে সারা দেশে দিনটি উদযাপন করবেন বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা। বুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষে আজ দেশে সরকারি ছুটি। তবে এই ছুটির দিনও চলছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের সামনে দেখা গেছে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি। লাইন ধরে দাড়িয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া কাজ করছেন তারা। গত ৬ মে থেকে শুরু হয়েছে তাদের প্রথম পর্যায়ের ভর্তি কার্যক্রম। চলবে আগামীকাল ১২ মে পর্যন্ত। তবে আজ সরকারি ছুটি থাকায় শাটল ট্রেন চলেছে বন্ধের শিডিউলে। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছাতে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসবের দিনেও করতে হচ্ছে ভর্তির কার্যক্রম। এই নিয়ে সমালোচনা করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পালি বিভাগের অধ্যাপক ড.
ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী অন্বেষ চাকমা বলেন, আজকে বৌদ্ধদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। তবে দেখা যাবে ছোট ভাই-বোন যারা ১ম বর্ষের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন তারা পূর্ণিমার আয়োজন রেখে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রশাসনের এই ধরণের কাজ উদ্বেগজনক। আশা করছি সব ধর্মের মানুষের উৎসবের দিনগুলো গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা উচিত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. সাইফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, আজকের দিনে ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখার মূল উদ্দেশ্য কিছু শিক্ষার্থীর উপকারে আসা। বৌদ্ধ পূর্ণিমার ছুটির দিনেও ভর্তি কার্যক্রম চালু রাখার কারণ হলো—শেষ দিনে যেন অতিরিক্ত ভিড় বা চাপ না পড়ে। আমরা ভর্তি কার্যক্রমের জন্য মোট পাঁচ দিন সময় নির্ধারণ করেছি। যাদের আজ কোনো অসুবিধা হচ্ছে, তারা আগামীকাল এসে ভর্তি হতে পারবেন। এছাড়াও, গত কয়েকদিন ধরেই আমরা এই প্রক্রিয়াটি সীমিত ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে পরিচালনা করছি।
উল্লেখ্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এ’ ইউনিটের পরীক্ষা ১ মার্চ, ‘বি’ ইউনিটের পরীক্ষা ৮ মার্চ, ‘বি-১’ উপ-ইউনিটের পরীক্ষা ১০ মার্চ, ‘বি-২’ উপ-ইউনিটের পরীক্ষা ১১ মার্চ, ‘সি’ ইউনিটের পরীক্ষা ১৫ মার্চ, ‘ডি’ ইউনিটের পরীক্ষা ২২ মার্চ, ‘ডি-১’ উপ-ইউনিটের পরীক্ষা ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়।
গত ০৫ মে এই ইউনিট গুলোর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। পরবর্তীতে ০৬ মে থেকে পাঁচদিন প্রথম পর্যায়ের ভর্তি কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এসময় নির্ধারিত অনুষদের ডিন অফিসে ভর্তি প্রার্থীকে স্বাক্ষরসহ এক কপি বিভাগ/বিষয় পছন্দক্রম ফরম, ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র, এস.এস.সি ও এইচ.এস.সি/সমমানের মূল রেজিস্ট্রেশন কার্ড, মূল মার্কসিট, মূল সার্টিফিকেট, মূল টেস্টিমোনিয়াল, জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি, সত্যায়িত ০৬ কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি এবং উল্লেখিত সকল ডকুমেন্ট ও সনদের সত্যায়িত ০১ সেট ফটোকপি জমা দিতে হয়। একই সঙ্গে উক্ত কাগজপত্রের সঙ্গে সাড়ে ৩ হাজার টাকা জমা দিতে হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইউন ট র পর ক ষ র ভর ত
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ণাঢ্য আয়োজনে ঢাবির ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১০৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এবারের বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের প্রতিপাদ্য ‘বৈষম্যহীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ বিনির্মাণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’।
বুধবার (১ জুলাই) সকাল ১০টায় টিএসসিতে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়। যেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান।
এর আগে, সকাল সাড়ে ৯টায় বিভিন্ন হল ও হোস্টেল থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শোভাযাত্রাসহ স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে একত্রিত হন। সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে উপাচার্যের নেতৃত্বে ক্যাম্পাস জুড়ে বের হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা।
আরো পড়ুন:
৩৬ জুলাইকে জাতীয় মুক্তি দিবস ঘোষণাসহ ১৩ দাবি ইনকিলাব মঞ্চের
বেগম রোকেয়া পদকের জন্য আবেদনপত্র আহ্বান
সকাল সাড়ে ১০টায় টিএসসি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এক আলোচনা সভা। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ।
এছাড়াও পায়রা চত্বরে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী আয়োজনে জাতীয় পতাকা, বিশ্ববিদ্যালয় ও হলসমূহের পতাকা উত্তোলন করা হয় এবং কেক কাটা হয়। এ সময় সংগীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পরিবেশিত হয় জাতীয় সংগীত ও দেশাত্মবোধক গান। বিদেশি শিক্ষার্থীরাও এতে বিশেষ সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন।
আলোচনা সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সামসুজ্জামান দুদু বলেন, “এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সবসময় মুক্ত চিন্তা, স্বাধীনতা, মুক্তির পথ দেখিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছে, তেমনি মুক্তিযুদ্ধের পতাকাও এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উড়ানো হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্ররা পথ দেখান। আজ এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে সব মহলকে শ্রদ্ধা জানাই।”
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খানের সভাপতিত্বে এতে আরো উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সায়মা হক বিদিশা, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য, ডিন, হলের প্রাধ্যক্ষ, বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অ্যালামনাইরা অংশ নেন।
আলোচনা সভার শুরুতে দিবসটি উপলক্ষে প্রকাশিত ‘স্মরণিকা’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসকে কেন্দ্র করে উপাচার্য ভবন, কার্জন হল, কলা ভবন ও টিএসসি-সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং সড়কসমূহ আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়।
এদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ক্লাস বন্ধ ছিল। তবে পরীক্ষাসমূহ পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
১৯২১ সালের ১ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দীর্ঘ এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে এই প্রতিষ্ঠান জ্ঞান, চিন্তা ও মুক্তচিন্তার আলো ছড়িয়ে দেশের অগ্রগতিতে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী