স্বচ্ছ ও জবাবদিহির বিজিএমইএ গড়ে তুলতে চায় ফোরাম
Published: 11th, May 2025 GMT
পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনে জয়ী হলে দক্ষ, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ গড়ে তুলতে চায় সংগঠনটির নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরাম। একই সঙ্গে তারা নির্বাচিত প্রতিনিধি বা পরিচালকদের জবাবদিহি নিশ্চিত, ক্ষুদ্র ও নতুন উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ সহায়তা, শিল্পাঞ্চলভিত্তিক সংকট ব্যবস্থাপনা, ব্যবসার প্রস্থান নীতিমালা (এক্সিট পলিসি) চূড়ান্ত করাসহ ৯টি প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আজ রোববার সংবাদ সম্মেলনে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর নির্বাচনকেন্দ্রিক জোট ফোরামের দলনেতা মাহমুদ হাসান খান এ কথাগুলো বলেন। এ সময় ফোরাম মহাসচিব রশিদ আহমেদ হোসাইনী, প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ফয়সাল সামাদসহ প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইতিমধ্যে ফোরাম তাদের ৩৫ পরিচালক পদপ্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। এ বিষয়ে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘ব্যবসা রয়েছে এমন উদ্যোক্তা, দক্ষ–অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ও তারুণ্য আর প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন দূরদর্শিতা বিবেচনা করে প্রার্থী বাছাই করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের প্রার্থীরা পর্ষদে এলে তাঁদের হাতে আধুনিক ও জবাবদিহিমূলক বিজিএমইএ গড়ে উঠবে।’ পরে এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের প্যানেলে নিষিদ্ধঘোষিত আওয়ামী লীগের কোনো নেতা–কর্মী নেই। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সুবিধাভোগী কেউ নেই। কারণ, আমরা নতুনদের অগ্রাধিকার দিয়েছি।’
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, শফিউল ইসলাম ও আতিকুল ইসলাম গ্রেপ্তার হয়েছেন। সাবেক দুই সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ও এস এম মান্নান আত্মগোপনে আছেন। এক প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক বা সভাপতি হিসেবে কেউ পলাতক নন। আত্মগোপন কিংবা কারাগারে যাওয়ার মূল কারণ তাঁদের রাজনৈতিক পরিচয় ও কর্মকাণ্ড। তবে বিচারপ্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের দোষী বলা যাবে না।
ফোরামের দলনেতা বলেন, ‘গত বছর অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে বহিরাগত লোকজন ছিলেন। এবার বহিরাগতদের কোনোভাবেই ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে আশ্বাস দিয়েছে নির্বাচন বোর্ড। ফলে আমাদের প্রত্যাশা উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট হবে।’ তিনি আরও বলেন, স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরির প্রচেষ্টা বহুলাংশে সফল হয়েছে। চলতি বছর মানদণ্ড পরিপালন করতে না পারায় অনেক সদস্য ভোটার হতে পারেননি। তবে তাঁদের সদস্যপদ বহাল রয়েছে।
প্রতিবছর দুই ঈদের আগে কিছু কারখানার বেতন–ভাতা পরিশোধ নিয়ে জটিলতা হয়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে সঞ্চয় তহবিল গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘১ শতাংশের কম কারখানার কর্মকাণ্ডের জন্য পুরো শিল্পের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়। সে জন্য আমরা নির্বাচিত হলে বাধ্যতামূলক সঞ্চয় তহবিল করব। বিশেষ সাধারণ সভা করে সব সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে আমরা কাজ করতে চাই।’
ফোরাম পোশাক খাতের উন্নয়ন ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আলাদা মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবি আদায়ে সচেষ্ট থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ ছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি, নন–বন্ড কারখানা ও নতুন উদ্যোক্তাদের সর্বোচ্চ সহায়তা, ব্যাংক ও কাস্টমস হয়রানি নিরসন, রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য প্রস্থান নীতি, শিল্পাঞ্চলভিত্তিক সংকট ব্যবস্থাপনা এবং শিল্পের নিরাপত্তা, শ্রম অধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়েও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা।
মাহমুদ হাসান খান বলেন, ‘বিগত দিনে আমরা দেখেছি, বিজিএমইএতে গিয়ে অনেক মালিক সহযোগিতা পাননি, উল্টো হয়রানি হয়েছেন। ফোরাম নেতৃত্ব পেলে সংগঠনটির মালিক–শ্রমিকের যথাযথ সম্মান নিশ্চিত করা হবে। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক বিবেচনা প্রাধান্য পাবে না। বিজিএমইএ হবে তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকদের আস্থার নাম। সমৃদ্ধ অর্থনীতির স্বার্থে বিজিএমইএকে নেতৃত্ব দিতে হবে সামনে থেকে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন বাজারে গুঁড়িয়ে দেওয়া হলো মাদক সেবীদের আস্তানা
মাদকের করাল গ্রাস থেকে যুব সমাজকে রক্ষায় এবার সরাসরি মাঠে নামল সিদ্ধিরগঞ্জের নতুন বাজার সামাজিক সংগঠন।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) সকালে ১১টায় সংগঠনটি এক ব্যতিক্রমী মাদকবিরোধী কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আদমজীনগর সোনামিয়া বাজা’র এলাকায় মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেয়।
সংগঠনের সদস্যরা নতুন বাজার এলাকার মাদক সেবীদের আস্তানায় মহড়া দেন এবং যেখানে বসে মাদক সেবন করা হয়, সেই স্থানগুলো ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন। পরবর্তীতে তারা আশেপাশের স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতি মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার জন্য জোর আহ্বান জানান।
এ সময় সংগঠনটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন বলেন, আজ আমাদের সমাজে মাদক রন্ধ্রে রন্ধ্রে সয়লাব। দিন দিন যুবসমাজের মধ্যে এ প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা আমাদের ভবিষ্যতকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
মাদক শুধু একটি পরিবার নয়, একটি সমাজকেও শেষ করে দেয়। আমাদের এই অভিযান মাদকমুক্ত সমাজ গড়ার প্রথম পদক্ষেপ। নতুন বাজার সামাজিক সংগঠন কোনোমতেই এই এলাকায় মাদক সেবন বা ব্যবসা চলতে দেবে না।
সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে মাদকের বিরুদ্ধে একজোট হয়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের সহযোগিতা কামনা করি।
এসময় মাদকবিরোধী এই অভিযানে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের, উপদেষ্টা মোঃ সেলিম, আবুল হাশেম মন্টু, মাইন উদ্দিন আহমেদ, সংগঠনের সভাপতি ইসমাইল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক মোঃ সোহেল হোসেন মুসা, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আহাদ, সদস্য মোঃ আজিমসহ সংগঠনের অন্যান্য সদস্যরা।
সংগঠনের সদস্যরা দৃঢ়তার সাথে জানান, মাদকের এই ভয়াবহতা রোধে তাদের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।