উপকূলীয় জেলা বরগুনার প্রায় ১২ লাখ মানুষের চিকিৎসার ভরসাস্থল বরগুনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল। বছরের পর বছর ধরে চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবলের সংকটে ধুঁকছে প্রতিষ্ঠানটি। রয়েছে অবকাঠামোগত সমস্যাও। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তো আছেই, কোন্দলের শিকার হয়ে বদলি হচ্ছেন গুরুত্বপূর্ণ পদের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা। এতে ক্ষোভ জানিয়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। 

শুক্রবার থেকে এই হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি জেলার বামনা উপজেলার রামনা গ্রামের ইতি আক্তার। রোববার দুপুরে তিনি বলেন, ‘ডাক্তার সকালে একবার এসে দেখে যান। সারাদিনও আর ডাক্তার দেখি না। দুয়েকটি ওষুধ ছাড়া সব ওষুধ-স্যালাইন কিনতে হয় বাইরে থেকে।’
গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য থাকায় হাসপাতালের দৈনন্দিন কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে জানান দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা। তাদের দেওয়া তথ্যমতে, ২০১৩ সালে ২৫০ শয্যায় উন্নীত হওয়ার পর হাসপাতালে চিকিৎসক, নার্সিং সার্ভিস ও অন্যান্য ২৩৩টি পদ মঞ্জুর করা হয়। অথচ বর্তমানে কর্মরত ১২৩ জন, বাকি ১১০টি পদ দীর্ঘদিন ধরে শূন্য। এর মধ্যে চিকিৎসকের ৫৫ পদের বিপরীতে আছেন মাত্র ১৬ জন। ১০টি সিনিয়র কনসালট্যান্ট পদের মধ্যে ৯টিই খালি। অ্যানেস্থেশিয়ার সিনিয়র কনসালট্যান্টই শুধু আছেন। কার্ডিওলজি, অর্থো সার্জারি, গাইনি, মেডিসিন, পেডিয়াট্রিক, প্যাথলজি, সার্জারি, ইএনটি ও চক্ষু বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট পদ শূন্য। জুনিয়র কনসালট্যান্টের ১২টি পদের বিপরীতে খালি আছে সার্জারি, চক্ষু, কার্ডিওলজি, অর্থো সার্জারি, প্যাথলজি, রেডিওলজিসহ ৭টি পদ। আবাসিক সার্জন তিনজনের জায়গায় আছেন দু’জন। মেডিকেল অফিসার ও সমমানের ২৯ পদের বিপরীতে আছেন সাতজন। 
নার্সিং সার্ভিসের ১০১ পদের মধ্যে কর্মরত ৭৯ জন। অন্য ৭৩টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২৭ জন। গুরুত্বপূর্ণ পদের মধ্যে প্রধান সহকারী, প্রধান সহকারী কাম-হিসাবরক্ষক, স্টোরকিপার, অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর, ডোমের পদ পর্যন্ত খালি।

এসব কারণে চিকিৎসায় বেগ পেতে হয় রোগীদের। রোববার কথা হয় সদর উপজেলার হাজারবিঘা গ্রামের নাসিরের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ছয় দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি আছি, কিন্তু ডাক্তারের লগে দ্যাহা হইছে একবার। বরগুনা হাসপাতালের সেবার কথা বইল্লা লাভ নাই, এই কথা বলতে বলতে অ্যাহোন দুর্বল হইয়া গেছি। নাই ডাক্তার, নাই ওষুধ। গ্যালে একটা ট্যাবলেট ধরাইয়া দেয়, আর বেশি অসুস্থ দ্যাখলে বরিশাল নাইলে ঢাকা রেফার করে দেয়। বরগুনা হাসপাতালে থাহা আর বাড়ি থাহার মধ্যে পার্থক্য নাই।’  
সদর উপজেলার ৭ নম্বর ঢলুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা রুবী আক্তার চার দিন ধরে চিকিৎসাধীন। দিনে তিনবেলা খাবার পান। সকালে রুটি, কলা, ডিম ও দুপুর-রাতে ভাত দেয়। তিনি বলেন, দুপুর ও রাতের খাবারে যা দেওয়া হয়, সেই রান্না খুব খারাপ। খেয়ে উল্টো গ্যাস্টিকসহ নানা সমস্যা হয়। 
২৫০ শয্যার এই হাসপাতালে দিনে ভর্তি থাকে ৪০০-৫০০ রোগী। অথচ বরাদ্দ আসে সেই ১০০ শয্যার। সূত্র জানায়, বছরে ১০০ রোগীর জন্য সরকারি বরাদ্দ আসে প্রায় ১১ কোটি টাকা। এ টাকা থেকেই নানা খাতের খরচ দিতে হয়। সব মিলিয়ে খাবার বাবদ বছরে বরাদ্দ থাকে ৬৫ লাখ টাকা। ১০০ রোগীর জন্য দিনপ্রতি বরাদ্দ মেলে মাত্র ১৭৫ টাকা। অথচ ২৫০ শয্যার হিসাবে বছরে রোগীর খাবারে খরচ হয় ১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। বাড়তি ৯৫ লাখ টাকা হাসপাতালের অন্যান্য খাত থেকে খরচ করতে হয় বলে কর্মকর্তাদের ভাষ্য। যে কারণে ওষুধ, চিকিৎসা সামগ্রীসহ অন্য খাতে প্রয়োজনের তুলনায় টাকা মেলে না।
অনিয়ম-দলাদলির অভিযোগ
গত ২৮ মার্চ এ হাসপাতালে শুরু হয়েছিল ঈদুল ফিতরের ছুটি। এর আগের দিন পুরাতন ভবনের ফটক দিয়ে একটি ট্রলিতে করে তিনটি কার্টন বাইরে নিয়ে ভ্যানগাড়িতে ওঠায় একটি চক্র। রোগীদের বাধায় কিছুক্ষণের মধ্যেই সেগুলো ফিরিয়ে নেওয়া হয় ওই ভবনের স্টোররুমে। অভিযোগ ওঠে, তিনটি কার্টনে ভরে সরকারি সিরিঞ্জ বাইরে পাচার করছিলেন স্টোরকিপার মো.

বদরুল আমিন। স্থানীয় লোকজন ও রোগীর স্বজনের তোপে তা করতে পারেননি। 
ঘটনা তদন্তে ৯ এপ্রিল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. মাহবুব হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। তাদের প্রতিবেদন জমা দিতে তিন দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু মাস পেরিয়ে গেলেও সেই প্রতিবেদন জমা হয়নি। এরই মধ্যে অভিযুক্ত বদরুল আমিনকে ৬ মে দেওয়া চিঠিতে জেলার বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্টোরকিপার হিসেবে বদলি করেন বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডল।
বদরুল আমিনের দাবি, ঠিকাদারের সাপ্লাই দেওয়া সিরিঞ্জ সেদিন স্টোররুমে রাখা হয়। প্রথমে দেখা যায়, তিন কার্টন সিরিঞ্জ বেশি, তাই গাড়িচালকের মাধ্যমে সেগুলো ফেরত নিয়ে যেতে বলা হয়। কিছুক্ষণ পরে দেখা যায় বেশি হয়নি, তাই ফেরত নিয়ে সেগুলো স্টোররুমে রাখা হয়েছে। ওই দিন কত কার্টন সিরিঞ্জ আনা হয়েছিল, কোন ঠিকাদার দিয়েছিলেন– এমন প্রশ্নের জবাব না দিয়ে ব্যস্ততার অজুহাত দেখিয়ে কল কেটে দেন। 

তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. মো. মাহবুব হোসেনের ভাষ্য, কিছু টেকনিক্যাল কারণে প্রতিবেদন দিতে সময় লাগছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জমা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
তদন্তের মধ্যেই বদরুলের বদলিকে রহস্যজনক মনে করছে সচেতন মহল। তাদের দাবি, অপরাধ আড়াল করতেই তড়িঘড়ি করে বদলি করা হয়েছে তাঁকে। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ. কে. এম নাজমুল আহসান বলেন, কমিটিকে দ্রুত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। বদরুল আমিন বদলি হলেও প্রতিবেদন অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।
চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন ২১ জন স্টাফ নার্স। তাদের দাবি, চাকরির বয়স তিন বছর পূর্তি হওয়ায় শ্রান্তি বিনোদন ছুটি ও ভাতা পাওয়ার জন্য হাসপাতালের প্রধান সহকারী কাম-হিসাবরক্ষক রফিকুল ইসলামের কাছে আবেদন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেন। এ জন্য প্রত্যেকের কাছে ১২শ টাকা ঘুষ দাবি করেন রফিকুল। টাকা দিতে অস্বীকার করায় কারও ছুটি ও ভাতা অনুমোদন হয়নি। অভিযোগটি তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ৩ মার্চ রফিকুল ইসলামকে প্রশাসনিক কারণ দেখিয়ে বরিশালের মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একই পদে বদলি করা হয়।
২২ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালের প্রধান সহকারী মো. শহিদুল ইসলাম স্বপনকে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার অপারেটর মো. আল-আমিনকে পটুয়াখালী ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বদলি করা হয়। জনস্বার্থের কথা উল্লেখ করে তাদের বদলি করা হলেও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, কিছু ঠিকাদার হাসপাতালের কাঙ্ক্ষিত কাজ পাচ্ছেন না। এ কারণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কোন্দলের কারণে তাদের বদলি দ্রুত হয়েছে। 

সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) জেলা শাখার সভাপতি ও বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির আজীবন সদস্য মনির হোসেন কামাল বলেন, আগে থেকেই চিকিৎসক-জনবলসহ নানা সংকটে আছে বরগুনার স্বাস্থ্যসেবা। একাধিকবার আন্দোলন-সংগ্রাম করেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন হয়নি। এর ওপরে নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য হচ্ছে। 
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. এ. কে. এম নাজমুল আহসানের ভাষ্য, গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো শূন্য থাকায় দৈনন্দিন কাজ সারতেই সমস্যা হচ্ছে। আগে থেকেই নানা সমস্যা আছে, এর মধ্যে নতুন কিছু বদলি হওয়ায় সংকট বেড়েছে। এখন তো হাসপাতাল পরিচালনাই কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। 
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মণ্ডলের কাছে ওই হাসপাতালে নানা সমস্যা ও জনবল সংকটের তথ্য আছে। সেগুলো দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক র অবহ ল পদ র ব পর ত চ ক ৎসক ক র টন বর দ দ বর শ ল তদন ত সমস য বরগ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

২০ মাসে মধ্যপ্রাচ্যের পাঁচ অঞ্চলে ইসরায়েলের ৩৫ হাজার হামলা

২০ মাসের বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডসহ মধ্যপ্রাচ্যের চার দেশে প্রায় ৩৫ হাজার হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে ফিলিস্তিনে। ইসরায়েলের হামলার শিকার হওয়া দেশ চারটি হলো—ইরান, সিরিয়া, লেবানন ও ইয়েমেন।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক প্রতিষ্ঠান আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্ট (এসিএলইডি) এ তথ্য তুলে ধরেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। এরপর গত ২৩ জুন ইরানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে যায় ইসরায়েল। মাঝের ২০ মাসের বেশি সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ইসরায়েলের হামলার তথ্য বিশ্লেষণ করেছে এসিএলইডি।

এসিএলইডির নথিবদ্ধ তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েল সবচেয়ে বেশি অন্তত ১৮ হাজার ২৩৫টি হামলা চালিয়েছে ফিলিস্তিনিদের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে। লেবাননে ১৫ হাজার ৫২০টি হামলা চালিয়েছে দেশটি। এরপর যথাক্রমে সিরিয়ায় ৬১৬টি, ইরানে ৫৮টি ও ইয়েমেন ৩৯টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

মধ্যপ্রাচে্য চালানো এসব হামলায় মধ্যে রয়েছে যুদ্ধবিমান ও ড্রোনের ব্যবহার, গোলাবর্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ, দূরনিয়ন্ত্রিত বোমা বিস্ফোরণ এবং সুপরিকল্পিতভাবে সম্পত্তি ধ্বংস করা।

গাজায় ৬২৮ দিনের বেশি সময় ধরে ধ্বংসাত্মক অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। উপত্যকাটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সেখানে এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। গাজায় হামলা চালাতে ইসরায়েলের ব্যবহার করা কৌশলের অনেকগুলোই এখন অধিকৃত পশ্চিম তীরে জমি দখল ও নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পশ্চিম তীরে গত ২০ মাসে প্রায় ১ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা করা হয়েছে।

গাজা সংকটের মধ্যেই ইসরায়েল ও লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর মধ্যে প্রায় ১৪ মাস ধরে সংঘাত হয়। ২০২৪ সালের ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতিতে যায় দুই পক্ষ। সংঘাতটি চলেছিল দুই দেশের সীমান্তে। এতে হাজারের বেশি মানুষ নিহত হন।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের দুই দিন পর ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর দেশটিতেও ব্যাপক হামলা শুরু করে ইসরায়েল। সিরিয়ার প্রধান বিমানবন্দর, আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা, যুদ্ধবিমান ও অন্যান্য কৌশলগত স্থাপনায় হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দেয় ইসরায়েল। এসিএলইডির হিসাবে, গত ছয় মাসে সিরিয়াজুড়ে ২০০টির বেশি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতি নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন অবকাঠামোতেও হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। গত বছরের শেষের দিকে এই হামলা তীব্র আকার ধারণ করে। ২০২৫ সালেও হামলা হয়েছে।

ইসরায়েলের ধারাবাহিক এসব হামলায় সর্বশেষ যুক্ত হয় ইরানের নাম। ১৩ জুন থেকে টানা ১২ দিন পাল্টাপাল্টি হামলা চালায় দুই দেশ। এরপর ২৩ জুন যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় তারা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ