Samakal:
2025-06-29@14:01:11 GMT

সাংস্কৃতিক জাগরণের কেন্দ্র

Published: 12th, May 2025 GMT

সাংস্কৃতিক জাগরণের কেন্দ্র

পদ্মার শান্ত জলে ভেসে আসা বাতাস আর রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিমাখা সেই কুঠিবাড়ী। যার ঘ্রাণে আজও কুষ্টিয়ার আকাশ-বাতাস মুগ্ধ হয়ে থাকে। কুষ্টিয়ার শিলাইদহে অবস্থিত এ ঐতিহাসিক কুঠিবাড়ী শুধু একটি স্থাপনা নয়, বরং বাঙালি সংস্কৃতির জীবন্ত ইতিহাস। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এখানেই কাটিয়েছেন জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, রচনা করেছেন ‘গীতাঞ্জলি’র অমূল্য সব কবিতা, যা বিশ্বসাহিত্যে এনে দিয়েছে প্রথম নোবেল পুরস্কার।
বর্তমানে এই কুঠিবাড়ী একটি জাদুঘর। এখানে সংরক্ষিত রয়েছে রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত জিনিসপত্র, আসবাব, ছবি ও সাহিত্যকর্ম। প্রতি বছর পহেলা বৈশাখ, ২৫ বৈশাখ (রবীন্দ্রজয়ন্তী), বিজয় দিবসসহ নানা উৎসবে ভরে ওঠে কুঠিবাড়ী প্রাঙ্গণ। দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখর থাকে পুরো অঙ্গন। পরিবারসহ আসা পর্যটক থেকে শুরু করে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী,  সাহিত্যপ্রেমী, গবেষক, ইউটিউবার বা ব্লগার– সবাই যেন এ কুঠিবাড়ীতে এসে ফিরে পান এক অমলিন অভিজ্ঞতা।
একজন তরুণ দর্শনার্থীর ভাষায়, এখানে এলে রবীন্দ্রনাথ যেন মনের খুব কাছে চলে আসেন। তাঁর সাহিত্য শুধু পড়া নয়, যেন অনুভবেরও ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
কুঠিবাড়ীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে এক কর্মচঞ্চল পরিবেশ। স্থানীয় দোকানে বিক্রি হচ্ছে পাটজাত পণ্য, হস্তশিল্প, রবীন্দ্রনাথের ছবি ও উক্তিসংবলিত টি-শার্ট, বই ও স্মারক। গড়ে উঠেছে হোটেল ও রেস্তোরাঁ, যেখানে দর্শনার্থীরা বিশ্রাম নেন, গল্পে মেতে ওঠেন। কুষ্টিয়ার বিখ্যাত কুলফি মালাই ও তিলের খাজা অন্যতম আকর্ষণ। 
রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী ছাড়াও কুষ্টিয়ায় রয়েছে আরও অনেক ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক স্থান। ছেঁউড়িয়ায় অবস্থিত বাউলসাধক লালন শাহের মাজার ও আখড়া প্রতিবছর লালন স্মরণোৎসবের কেন্দ্র হয়ে ওঠে। মীর মশাররফ হোসেনের স্মৃতিবিজড়িত লাহিনীপাড়া ও কুমারখালীর কাঙাল হরিনাথ জাদুঘরও গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। পদ্মার বুকে দাঁড়িয়ে থাকা শতবর্ষী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা কুমারখালীর সাহিত্যচর্চা কেন্দ্র– সবকিছু মিলিয়ে কুষ্টিয়া হয়ে উঠেছে এক অনন্য সংস্কৃতির ভূখণ্ড।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কুঠিবাড়ীকে ঘিরে গড়ে ওঠা এই সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক আবহ একটি জেলার পরিচয় বদলে দিয়েছে। সাহিত্য, সংগীত, ইতিহাস আর মানুষের জীবনের গল্প মিলে এখানে প্রতিনিয়ত রচিত হচ্ছে নতুন কাব্য, নতুন কুসুমিত দিন।
আপনিও চাইলে ঘুরে যেতে পারেন এই রবীন্দ্র কুঠিবাড়ী। শহরে আবাসিক হোটেল ও খাবারের হোটেলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে। শহর থেকে কুঠিবাড়ী যেতে সময় লাগে মাত্র ৩০-৪০ মিনিট। v
সাধারণ সম্পাদক সুহৃদ সমাবেশ, কুষ্টিয়া 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ রব ন দ র

এছাড়াও পড়ুন:

যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

নরসিংদীতে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। নরসিংদী শহরের দত্তপাড়া পুরাতন লঞ্চঘাট এলাকায় গতকাল শনিবার রাতে স্বামী শংকর চন্দ্র দাসের বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ।

জানা যায়, প্রায় ৭ বছর আগে নরসিংদী শহরের ঘোড়াদিয়া-সংগীতা এলাকার জন্টু চন্দ্র দাসের মেয়ে স্মৃতি রাণী দাসের সঙ্গে বিয়ে হয় দত্তপাড়া এলাকার যোগেশ চন্দ্র দাসের ছেলে শংকর চন্দ্র দাসের। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে শংকরকে নগদ সাড়ে তিন লাখ টাকা, স্বর্ণলংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দেয় কনেপক্ষ। এরপরও শংকর প্রায়ই তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি থেকে আরও টাকা এনে দেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। স্বামীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে স্মৃতির পরিবার মাঝে মধ্যে টাকা দিতো। এতেও তার মন ভরেনি। এক পর্যায়ে আরও দুই লাখ টাকা বাবার বাড়ি থেকে এনে দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। এতে স্মৃতি রাণী দাস আর কোনো টাকা এনে দিতে পারবেন না বলে জানালে নির্যাতন চালায় শংকর চন্দ্র দাস। এই নির্যাতনের কথা স্মৃতি রাণী তার মাকে মোবাইল ফোন করে জানান। পরে মেয়ের জামাই শংকরকে জিজ্ঞেস করতে বার বার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। শনিবার রাতেও স্মৃতি রাণীকে মারধর করেন স্বামী শংকর। এতে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ওই গৃহবধূ। পরে বাড়ির লোকজন স্মৃতি রাণীকে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর শংকর রাত ১০টার দিকে ফোন করে তার শাশুড়িকে বলেন, ‘আপনার মেয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।’

খবর পেয়ে স্মৃতি রাণী দাসের পরিবার হাসপাতালে গিয়ে দেখেন তাদের মেয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে। তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এ সময় স্বামী শংকর চন্দ্র দাস হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে স্মৃতি রাণার পক্ষের লোকেরা ধরে পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ তাকে রাতেই থানায় নিয়ে যায়।

আজ রোববার নরসিংদী জেলা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের পর স্মৃতি রাণী দাসের লাশ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

নরসিংদী সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রোমান সাদেকিন বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য স্বামী শংকর চন্দ্র দাসকে আটক করা হয়েছে। থানায় মামলা হলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ