ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। খান ইউনিসে অবস্থিত নাসের মেডিক্যাল কমপ্লেক্সের বার্ন ইউনিটে দখলদার বাহিনীর বোমা হামলায় হাসান এসলাইহ নামে আরো এক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরার।

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস সাংবাদিক হাসান এসলাইহের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে এবং বলেছে যে, তারা ইসরায়েলি বাহিনী কর্তৃক ‘ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্যবস্তু, হত্যা এবং গুপ্তহত্যার’ তীব্র নিন্দা জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এসলাইহকে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‘হত্যা’ করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডের ফলে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় সাংবাদিকদের মধ্যে নিহতের মোট সংখ্যা ২১৫ জনে দাঁড়িয়েছে।

আরো পড়ুন:

যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টায় মার্কিন–ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিচ্ছে হামাস

গাজায় নিহতের সংখ্যা ৫২ হাজার ৮০০ ছাড়াল

গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস আরো বলেছে, “আমরা ইসরায়েলি দখলদারিত্ব, মার্কিন প্রশাসন এবং গণহত্যার অপরাধে সহায়তাকারী দেশগুলো, যেমন যুক্তরাজ্য, জার্মানি এবং ফ্রান্সকে এই জঘন্য, নৃশংস অপরাধের জন্য সম্পূর্ণরূপে দায়ী করছি।”

এদিকে নাসের হাসপাতালে হামলা চালানোর কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ একটি পোস্টে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, তারা নাসের হাসপাতালের এলাকায় ‘একটি লক্ষ্যবস্তু আক্রমণ চালিয়েছে’। ইসরায়েলের দাবি, সেখানে হামাস ‘একটি কমান্ড এবং নিয়ন্ত্রণ কমপ্লেক্স পরিচালনা করছিল’।

তবে দাবির সমর্থনে তারা কোনো প্রমাণ দেয়নি। গত মাসে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের কাছে সাংবাদিকদের আশ্রয় নেওয়া একটি তাঁবুতে ইসরায়েলি হামলায় এসলাইহ আহত হন। সে সময় কমপক্ষে দুজন ওই হামলায় নিহত হয়।

অব্যাহত হামলার পাশাপাশি  প্রায় ৭১ দিন ধরে গাজায় সম্পূর্ণ অবরোধ জারি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অবরোধের কারণে গাজায় কোনো খাবার, ওষুধ বা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৫২ হাজার ৮৬২ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১৯ হাজার ৬৪৮ জন আহত হয়েছেন। তবে সরকারি মিডিয়া অফিস নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি বলে জানিয়েছে। কারণ নিখোঁজ হওয়া হাজার হাজার মানুষকে এখন নিহতের তালিকায় রাখা হয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধ: জামায়া‌ত

গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ আটক করার ঘটনায় দখলদার ইসরাইলের ন্যক্কারজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা দেওয়া‌কে মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধও ব‌লে‌ছে দল‌টি।

ত্রাণবাহী জাহাজগুলোর নিরাপত্তা বিধানের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্প‌তিবার এক বিবৃ‌তি‌তে দল‌টির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ব্রাজিল ও সুই‌ডে‌নের রাষ্ট্রদূতের স‌ঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক

নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জামায়াত ৫ পার্সেন্ট এগিয়ে: দুদু

তি‌নি ব‌লেন, “২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় প্রায় ৭০ হাজার নিরীহ মানুষ শহীদ হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষ ও রোগব্যাধি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ পৌঁছাতে না পারলে হাজার হাজার নারী-শিশুর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়বে।”

“আমরা জেনেছি, ইসরাইল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ১৩টি ত্রাণবাহী নৌযান এবং সেখানে থাকা বহু মানবাধিকার কর্মীকে আটক করেছে। অথচ এই নৌযানগুলো গাজাবাসীর জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধ বহন করছিল। আমি ইসরাইলের এই অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

জামায়া‌তের সে‌ক্রেটা‌রি জেনা‌রেল বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী মানবিক সহায়তা গন্তব্যে পৌঁছাতে কাউকে বিরত রাখা যায় না। দখলদার ইসরাইল নৌযান ও মানবাধিকার কর্মীদের আটক করে মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ করেছে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ইসরাইলের এ কর্মকাণ্ডকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি নিরীহ মানুষের জীবনকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।”

তিনি বলেন, “মূলত দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা দিয়ে তারা চরম অপরাধ সংঘটিত করেছে। এ হামলা মানবতার বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্যতম অপরাধ।”

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর প্রাণ বাঁচাতে ত্রাণবাহী জাহাজগুলো যাতে নিরাপদে গাজায় পৌঁছতে পারে, সেজন্য ইসরাইলের ওপর অবিলম্বে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। একই সাথে আটক মানবাধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা ও নিঃশর্ত মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধ: জামায়া‌ত