ব্রাজিলের কোচ হিসেবে কার্লো আনচেলত্তির নাম ঘোষণা হয়ে গেছে। ২৬ মে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দায়িত্ব নেবেন তিনি। তার পরও রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে কোনো সমস্যা নেই তাঁর। বার্নাব্যুতে দুই মেয়াদে তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ মোট ১৫ ট্রফিজয়ী এ কোচ মৌসুম শেষ করে মাথা উঁচু করেই যাবেন বলে প্রত্যাশা। তবে তিনি ক্লাব ছাড়ার আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদে।
গত রোববার এল ক্ল্যাসিকোতে বার্সার কাছে ৪-৩ গোলের হারের পর লিগ শিরোপা লড়াই থেকে বেশ পিছিয়ে গেছে রিয়াল। বার্সার সঙ্গে তাদের পয়েন্ট ব্যবধান এখন ৭, লিগের ম্যাচ বাকি মাত্র তিনটি। আজ ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে যদি মার্য়োকাকে হারাতে না পারে তাহলে লিগ শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাবে বার্সার।
তবে এসব সমীকরণ মাথায় না রেখে শুধু ভালো খেলার দিকে মনোযোগী আনচেলত্তি, ‘এখানে আমি অসাধারণ সময় কাটিয়েছি। আর দুই সপ্তাহ আছি। এ সময়টুকুও চমৎকারভাবে পার করতে চাই।’ আরও যোগ করেন, ‘সবকিছুর একটা শেষ থাকে। এই ক্লাবের সঙ্গে কখনোই আমার সমস্যা ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। আমি ব্রাজিলের কোচ হতে যাচ্ছি, যেটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এর আগ পর্যন্ত আমি রিয়াল মাদ্রিদের কোচ। আমি এখানে সর্বোত্তম উপায়ে শেষ করতে চাই।’
আনচেলত্তির সঙ্গে রিয়াল ছাড়ছেন রদ্রিগোও। ব্রাজিলিয়ান এ ফরোয়ার্ড প্রিমিয়ার লিগে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন। তবে এর চেয়েও বড় খবর হলো, রিয়ালের ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহাম ও কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে নাকি ক্লাব ছাড়ছেন তিনি। তাদের সঙ্গে বিরোধের কারণে নাকি গত রোববার এল ক্ল্যাসিকোতে বদলি হিসেবে মাঠে নামতে অস্বীকৃতি জানান রদ্রিগো। মায়োর্কার বিপক্ষে তাঁকে দেখা যাবে না। গতকাল অনুশীলন করেননি তিনি।
যদিও আনচেলত্তি এসবকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন, ‘রদ্রিগোর গত সপ্তাহে জ্বর ছিল। যে কারণে অনেক চেষ্টার পরও সে সেরা ছন্দে ছিল না। পায়েও ব্যথা অনুভব করছিল। আমাদের চিকিৎসক দল তাঁর সমস্যাগুলো খুঁজে বের করছে। দলের সবাই রদ্রিগোকে স্নেহ করে, বিশেষ করে আমি।’
তবে তিনি উড়িয়ে দিলেও রিয়ালের সম্ভাব্য নতুন কোচ জাবি অলনসোর গুডবুকেও নেই রদ্রিগো। এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস ও বেলিংহামকে দিয়ে নাকি তিনি রিয়ালের আক্রমণভাগ সাজাতে চাইছেন। যে কারণে নতুন ঠিকানা খুঁজতে তৎপর হয়ে উঠেছেন ২৪ বছর বয়সী রদ্রিগো। ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুলের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান এ তারকার যোগাযোগ হচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক কি যুদ্ধ থামাতে পারবে, ইতিহাস কী বলছে
আলাস্কায় রাশিয়া ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যকার বৈঠক সমস্যার শেষ নয়; বরং এক দীর্ঘ যাত্রার সূচনামাত্র। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে চলমান অস্থিরতার সমাধান দিতে পারবে না এই বৈঠক। তবুও এটি সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এমন ঘটনা খুব কম ঘটেছে, যখন শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতাদের বৈঠক বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর সমাধান দিয়েছে।
এর একটি কারণ হলো, এত বেশি মাত্রায় মনোযোগ আকর্ষণ করা পরিস্থিতিও খুব বিরল। আমরা বর্তমানে ঠিক তেমনই একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার ‘কৌশলগত পরাজয়।’ আর রাশিয়া বিশ্বরাজনীতিতে পশ্চিমাদের একচেটিয়া আধিপত্যের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়।
অন্য কারণ হলো বাস্তবিক। বিশ্বের শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতারা এমন কোনো সমস্যার পেছনে সময় নষ্ট করেন না, যেগুলো তাঁদের অধীনেরাই সমাধান করতে পারেন। আর ইতিহাস ঘাঁটলেও দেখা যায়, শীর্ষ পর্যায়ের এসব বৈঠকের কারণে কদাচিৎ বিশ্বরাজনীতির গতি-প্রকৃতি বদলেছে।
আর তাই আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠককে অতীতের অনেক বিখ্যাত বৈঠকের সঙ্গে তুলনা করা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
ইতিহাসে অনেক শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে, যেগুলো যুদ্ধ ঠেকানোর বদলে পরিস্থিতিকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছে।বিশেষ করে ১৮০৭ সালে নেমন নদীতে একটি ভেলার ওপর অনুষ্ঠিত রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্রাটের মধ্যের বৈঠকের সঙ্গে আলাস্কার বৈঠকের তুলনা করা হচ্ছে। নেমন নদীর ওপর বৈঠকও যুদ্ধ ঠেকাতে পারেনি। বৈঠকের মাত্র পাঁচ বছর পর নেপোলিয়ন রাশিয়া আক্রমণ করে বসেন। আর সেই ভুলই তাঁর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এরপর ১৮১৫ সালের ভিয়েনা কংগ্রেসে রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো বড় ক্ষমতাধর দেশের নেতা নিয়মিত আলোচনায় অংশ নেননি। জার প্রথম আলেকজান্ডার তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ইউরোপের নতুন রাজনৈতিক কাঠামো দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। অন্য শক্তিগুলো তা মানেনি। যেমন হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, তাঁরা আদর্শ নয়; বরং স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করতে চাইতেন।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন