Samakal:
2025-11-17@09:32:24 GMT

রিয়াল মাদ্রিদে ভাঙনের সুর

Published: 14th, May 2025 GMT

রিয়াল মাদ্রিদে ভাঙনের সুর

ব্রাজিলের কোচ হিসেবে কার্লো আনচেলত্তির নাম ঘোষণা হয়ে গেছে। ২৬ মে পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের দায়িত্ব নেবেন তিনি। তার পরও রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে কোনো সমস্যা নেই তাঁর। বার্নাব্যুতে দুই মেয়াদে তিনটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ মোট ১৫ ট্রফিজয়ী এ কোচ মৌসুম শেষ করে মাথা উঁচু করেই যাবেন বলে প্রত্যাশা। তবে তিনি ক্লাব ছাড়ার আগেই  ভাঙন শুরু হয়েছে রিয়াল মাদ্রিদে।

গত রোববার এল ক্ল্যাসিকোতে বার্সার কাছে ৪-৩ গোলের হারের পর লিগ শিরোপা লড়াই থেকে বেশ পিছিয়ে গেছে রিয়াল। বার্সার সঙ্গে তাদের পয়েন্ট ব্যবধান এখন ৭, লিগের ম্যাচ বাকি মাত্র তিনটি। আজ ঘরের মাঠ সান্টিয়াগো বার্নাব্যুতে যদি মার্য়োকাকে হারাতে না পারে তাহলে লিগ শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যাবে বার্সার। 

তবে এসব সমীকরণ মাথায় না রেখে শুধু ভালো খেলার দিকে মনোযোগী আনচেলত্তি, ‘এখানে আমি অসাধারণ সময় কাটিয়েছি। আর দুই সপ্তাহ আছি। এ সময়টুকুও চমৎকারভাবে পার করতে চাই।’ আরও যোগ করেন, ‘সবকিছুর একটা শেষ থাকে। এই ক্লাবের সঙ্গে কখনোই আমার সমস্যা ছিল না, ভবিষ্যতেও হবে না। আমি ব্রাজিলের কোচ হতে যাচ্ছি, যেটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। এর আগ পর্যন্ত আমি রিয়াল মাদ্রিদের কোচ। আমি এখানে সর্বোত্তম উপায়ে শেষ করতে চাই।’

আনচেলত্তির সঙ্গে রিয়াল ছাড়ছেন রদ্রিগোও। ব্রাজিলিয়ান এ ফরোয়ার্ড প্রিমিয়ার লিগে যাচ্ছেন বলে গুঞ্জন। তবে এর চেয়েও বড় খবর হলো, রিয়ালের ইংলিশ তারকা জুড বেলিংহাম ও কিলিয়ান এমবাপ্পের সঙ্গে দ্বন্দ্বের কারণে নাকি ক্লাব ছাড়ছেন তিনি। তাদের সঙ্গে বিরোধের কারণে নাকি গত রোববার এল ক্ল্যাসিকোতে বদলি হিসেবে মাঠে নামতে অস্বীকৃতি জানান রদ্রিগো। মায়োর্কার বিপক্ষে তাঁকে দেখা যাবে না। গতকাল অনুশীলন করেননি তিনি। 

যদিও আনচেলত্তি এসবকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছেন, ‘রদ্রিগোর গত সপ্তাহে জ্বর ছিল। যে কারণে অনেক চেষ্টার পরও সে সেরা ছন্দে ছিল না। পায়েও ব্যথা অনুভব করছিল। আমাদের চিকিৎসক দল তাঁর সমস্যাগুলো খুঁজে বের করছে। দলের সবাই রদ্রিগোকে স্নেহ করে, বিশেষ করে আমি।’ 

তবে তিনি উড়িয়ে দিলেও রিয়ালের সম্ভাব্য নতুন কোচ জাবি অলনসোর গুডবুকেও নেই রদ্রিগো। এমবাপ্পে, ভিনিসিয়ুস ও বেলিংহামকে দিয়ে নাকি তিনি রিয়ালের আক্রমণভাগ সাজাতে চাইছেন। যে কারণে নতুন ঠিকানা খুঁজতে তৎপর হয়ে উঠেছেন ২৪ বছর বয়সী রদ্রিগো। ম্যানচেস্টার সিটি ও লিভারপুলের সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান এ তারকার যোগাযোগ হচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলায় রায় হলো ৩৯৭ দিনের মাথায়

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রথম মামলা হয়েছিল গত বছরের ১৭ অক্টোবর। তারপর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল বিচার। সবশেষে রায় হতে সব মিলিয়ে লাগল ৩৯৭ দিন।

আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এর দেওয়া রায়ে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামির মধ্যে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে দেওয়া হয়েছে মৃত্যুদণ্ড। পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে সাবেক পুলিশপ্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল–মামুনকে।

সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান রয়েছেন ভারতে। তাদের দল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম রয়েছে নিষিদ্ধ।

গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার জুলাই আন্দোলনের সময়ে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করে।

পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে প্রথম মামলার কার্যক্রম শুরু হয় গত বছরের ১৭ অক্টোবর। সেদিন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রথম মামলা (মিসকেস বা বিবিধ মামলা) হয়। ওই দিনই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়।

আরও পড়ুনরাষ্ট্র কেন শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দিল০৫ নভেম্বর ২০২৫

এ মামলায় প্রথমে শেখ হাসিনাই ছিলেন একমাত্র আসামি। এ বছরের ১৬ মার্চ তাঁর পাশাপাশি সাবেক আইজিপি আল-মামুনকেও আসামি করা হয়।

একাধিকবার সময় বাড়ানোর পর চলতি বছরের ১২ মে এই মামলায় চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

আসামি হিসেবে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের নাম প্রথমবারের মতো আসে গত ১২ মে তদন্ত প্রতিবেদনে। সেদিন থেকে এ মামলায় আসামি হন তিনজন শেখ হাসিনা, আসাদুজ্জামান ও আল-মামুন।

তাঁদের বিরুদ্ধে গত ১ জুন ট্রাইব্যুনালে ফরমাল চার্জ বা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। এর মধ্য দিয়ে ‘মিসকেস’ আনুষ্ঠানিকভাবে মামলায় রূপ নেয়।

এরপর গত ১০ জুলাই আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। সেদিনই আল–মামুন ‘অ্যাপ্রুভার’ (রাজসাক্ষী) হওয়ার আবেদন করেন।

গত ৩ আগস্ট এ মামলায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এর মধ্য দিয়ে এ মামলার আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে মোট পাঁচটি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেগুলো হলো উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান; প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করে আন্দোলনকারীদের নির্মূল করার নির্দেশ; রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা; রাজধানীর চানখাঁরপুল এলাকায় আন্দোলনরত ছয়জনকে গুলি করে হত্যা এবং আশুলিয়ায় ছয়জনকে পুড়িয়ে হত্যা করা।

মামলায় প্রথম সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে গুরুতর আহত হওয়া খোকন চন্দ্র বর্মণ। তাঁর সাক্ষ্য গ্রহণের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়।

আরও পড়ুনমানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড১ মিনিট আগে

এ মামলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ মোট ৫৪ জন সাক্ষী জবানবন্দি দেন। সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় গত ৮ অক্টোবর। এরপর যুক্তিতর্ক শুরু হয় গত ১২ অক্টোবর, যা শেষ হয় ২৩ অক্টোবর।

সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল জানান, ১৭ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। সব মিলিয়ে ‘মিসকেস’ থেকে এ মামলার রায় ঘোষণা পর্যন্ত সময় লেগেছে ৩৯৭ দিন।

পলাতক শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন মো. আমির হোসেন।

ট্রাইব্যুনালের প্রসিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম আগেই বলেছিলেন, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানের সাজা হলে তাঁরা আপিল করতে পারবেন না। এর কারণ তাঁরা পলাতক। আপিল করতে হলে তাঁদের আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ