গাজীপুরে বজ্রপাতে তুলার গোডাউনে আগুন
Published: 14th, May 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে বজ্রপাতে একটি তুলার গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এতে গোডাউনটিতে থাকা সব তুলা পুড়ে গেছে।
বুধবার (১৪ মে) দুপুর পৌনে ১টার দিকে শ্রীপুর পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের বেড়াইদের চালা এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মাহমুদুল হাসান বলেন, “বজ্রপাত থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।”
আরো পড়ুন:
আম কুড়াতে গিয়ে বজ্রপাতে ছেলের মৃত্যু, মা হাসপাতালে
তিন জেলায় বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার দুপুরে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এ সময় বজ্রপাত হলে স্থানীয় ব্যবসায়ী সবুজ ভূঁইয়ার মালিকানাধীন একটি তুলার গোডাউনে আগুন ধরে যায়। স্থানীয় বাসিন্দারা বৃষ্টির মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। পরে শ্রীপুর ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
গোডাউনের মালিক সবুজ ভূঁইয়া বলেন, “দুপুরে বৃষ্টি হচ্ছিল। বজ্রপাত হলে গোডাউনে আগুন ধরে যায়। আগুনে প্রায় ১০ লাখ টাকার তুলা পুড়ে গেছে।”
ঢাকা/রফিক/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আগ ন গ ড উন
এছাড়াও পড়ুন:
জুনে দুই কিস্তিতে আসবে ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে ঋণ কর্মসূচির আওতায় তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের পর্যালোচনা শেষ হয়েছে। তাতে ঋণ কর্মসূচির বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে বাংলাদেশ ও আইএমএফ। এর ফলে আগামী জুনের মধ্যে আইএমএফের কাছ থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার পাওয়ার আশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। আবার আইএমএফও ঋণের কিস্তি ছাড়ের ইঙ্গিত দিয়েছে। আজ বুধবার পৃথক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানিয়েছে আইএমএফ ও অর্থ মন্ত্রণালয়।
আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ঋণ কর্মসূচির বিষয়ে সম্প্রতি ঢাকায়, এরপর ওয়াশিংটনে আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এবং পরে অনলাইনে দুই পক্ষের মধ্যে কয়েক দফায় আলোচনা হয়। এর মাধ্যমে ঋণ কর্মসূচির তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনার পর ঐকমত্যে পৌঁছেছে উভয় পক্ষ। এখন আইএমএফ নির্বাহী বোর্ড অনুমোদন দিলে বাংলাদেশ ঋণের পরবর্তী কিস্তি পাবে। তবে এ জন্য রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি ও বিনিময় হার সংস্কারসহ কিছু শর্ত পালনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
এদিকে আইএমএফের শর্ত মেনে ডলারের বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। ডলারের বিনিময় মূল্য বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়াসহ কিছু শর্ত পালন নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে সরকারের টানাপোড়েন দেখা দেয়। তাতে ঋণের দুই কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। অবশেষে সেই জট খুলেছে।
এই কারণে ঋণের তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যালোচনা শেষ হওয়ায় আগামী জুনের মধ্যে আইএমএফের কাছ থেকে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার পাওয়ার আশা করছে অর্থ মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি জুনের মধ্যে বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি), এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি), জাপান ও ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে আরও প্রায় ২০০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা পাবে বলে প্রত্যাশা অর্থ মন্ত্রণালয়ের।
আইএমএফের সঙ্গে বাংলাদেশের ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ কর্মসূচি শুরু হয় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি। এই ঋণ কর্মসূচির আওতায় ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত ৩টি কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। এখন বাকি আছে ঋণের ২৩৯ কোটি ডলার। এর মধ্যে তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির অর্থ ছাড়ের আগে ডলারের বিনিময় হার নিয়ে প্রায় এক মাস ধরে দর-কষাকষি চলে আইএমএফ ও সরকারের মধ্যে। এর আগে তৃতীয় ও চতুর্থ কিস্তির পর্যালোচনা করতে গত ৬ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত আইএমএফের একটি মিশন ঢাকা ঘুরে যায়। তাতেও কোনো সমঝোতা হয়নি। আলোচনা গড়ায় আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠক পর্যন্ত। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল ওই বৈঠক হয়। কিন্তু সেখানেও কোনো সমঝোতা হয়নি। এরপরই বাংলাদেশ ও আইএমএফ ৫ ও ৬ মে দুই দিন ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে বৈঠক করে। তাতেও কোনো সমঝোতা হয়নি। এরপর সরকারের মধ্যে থেকে এই ঋণ না নেওয়ার বিষয়েও আলোচনা চলে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আইএমএফের ঋণ থেকে সরে না আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারই অংশ হিসেবে ডলারের দাম বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে রাজস্ব খাত সংস্কারের অংশ হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বা আইআরডি বিলুপ্ত করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গত সোমবার রাতে এনবিআর ও আইআরডি বিলুপ্ত করে ‘রাজস্ব নীতি বিভাগ’ এবং ‘রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ নামে নতুন দুটি বিভাগ গঠনের অধ্যাদেশ জারি করে সরকার।
এদিকে আজ এক বিবৃতিতে আইএমএফ জানায়, বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনায় উচ্চ মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় স্বল্পমেয়াদি কঠোর নীতি গ্রহণ, কর অব্যাহতি কমিয়ে রাজস্ব আদায় বাড়ানো ও অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমানো, বিনিময় হারকে নমনীয় করা ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করা, দুর্বল ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় আইনি সংস্কার ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, শাসনব্যবস্থা ও স্বচ্ছতা বাড়িয়ে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলা এবং জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলায় টেকসই অবকাঠামোতে বিনিয়োগ ও রাজস্ব সংস্কার প্রভৃতি বিষয়ে অগ্রাধিকার পেয়েছে। বিবৃতিতে আইএমএফ আরও জানায়, ঋণ কর্মসূচির বিষয়ে তৃতীয় ও চতুর্থ ধাপের পর্যালোচনা শেষে ঐকমত্যে পৌঁছেছে তারা। এখন আইএমএফের বোর্ডে অনুমোদন পেলে ঋণের পরবর্তী কিস্তি ছাড় হবে।
এর আগে আজ দুপুরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইএমএফের চতুর্থ পর্যালোচনা সফলভাবে শেষ হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা ও বিনিময় হার ব্যবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে অধিকতর পর্যালোচনার লক্ষ্যে চতুর্থ মিশন সম্পন্ন হওয়ার পর নির্ধারিত কিস্তির অর্থ একত্রে ছাড় করা হবে, এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় আরও বলছে, বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে সব বিষয় সতর্কতার সঙ্গে পর্যালোচনা করে উভয় পক্ষ রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, মুদ্রা বিনিময় হারসহ অন্যান্য সংস্কারকাঠামো বিষয়ে সম্মত হয়েছে। চতুর্থ পর্যালোচনার ‘স্টাফ লেভেল অ্যাগ্রিমেন্ট’ সম্পন্ন হওয়ার আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীর কাছ থেকে বাজেট–সহায়তা গ্রহণের ক্ষেত্রে যেসব সংস্কার কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে, তা সম্পূর্ণ বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব বিবেচনায় পরিকল্পিত ও জাতীয় স্বার্থে গৃহীত। এসব সংস্কার কর্মসূচির ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীদের কার্যক্রম শুধু কারিগরি সহায়তা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে।