রোনালদো-স্টেফানোকে ছুঁয়ে প্রথম মৌসুমেই ইতিহাস গড়লেন এমবাপ্পে
Published: 15th, May 2025 GMT
রিয়াল মাদ্রিদের জন্য চলতি মৌসুমটা ছিল নানা দিক থেকে হতাশাজনক। ফাইনালে হারের বেদনা, চ্যাম্পিয়নস লিগের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায়; সব মিলিয়ে সাফল্যহীন এক মৌসুমই পার করছে স্প্যানিশ জায়ান্টরা। তবে হতাশার এই ছায়া ভেদ করে আলো হয়ে উঠেছেন একজনই—কিলিয়ান এমবাপ্পে।
পিএসজি থেকে বিনামূল্যে যোগ দেওয়া এই ফরাসি ফরোয়ার্ড নিজের প্রথম মৌসুমেই যেন ঝড় তুলেছেন স্পেনের মাটিতে। ইনজুরির কারণে যখন একের পর এক তারকা বাইরে, তখন দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়ে গোলের পর গোল করে চলেছেন তিনি। বুধবার রাতে মায়োর্কার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে জয় পাওয়া ম্যাচেও এমবাপ্পেই ছিলেন সমতাসূচক গোলের নায়ক।
এই গোলটি ছিল লা লিগায় তার চলতি মৌসুমের ২৮তম। আর এতেই পেছনে ফেলেছেন রিয়াল মাদ্রিদের কিংবদন্তি আলফ্রেদো ডি স্তেফানোকে। ১৯৫৩-৫৪ মৌসুমে রিয়ালে নিজের অভিষেক বছরেই লিগে ২৭ গোল করেছিলেন ডি স্তেফানো। ৭১ বছর ধরে অটুট থাকা সেই রেকর্ড ভেঙে এমবাপ্পে এখন দাঁড়িয়ে আছেন এক নতুন উচ্চতায়।
আরো পড়ুন:
৫০ বছরের অপেক্ষা শেষে বোলোনিয়ার ইতিহাস, রোমে উল্লাস
গোল বন্যার ম্যাচে নিষ্প্রভ মেসি, জয়বঞ্চিত মায়ামি
শুধু ডি স্তেফানোই নন, এমবাপ্পে ছুঁয়ে ফেলেছেন ব্রাজিলিয়ান আইকন রোনালদো নাজারিওকেও। ১৯৯৭ সালে বার্সেলোনার জার্সিতে রোনালদো যেমন প্রথম মৌসুমে ২৮ গোল করেছিলেন, এবার তেমনই সংখ্যায় পৌঁছে গেছেন এমবাপ্পেও। সামনে আরও দুটি ম্যাচ বাকি, অর্থাৎ এই সংখ্যাটা যে আরও বাড়তে পারে, সেটা বলাই বাহুল্য।
এমবাপ্পের অর্জন এখানেই থেমে নেই। রিয়ালের ইতিহাসে অভিষেক মৌসুমেই ৪০ গোলের মাইলফলক স্পর্শ করা প্রথম খেলোয়াড় এখন তিনিই। গোল সংখ্যার বিচারে যেমন এগিয়ে, তেমনি মাঠে দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ভরসাও হয়ে উঠেছেন।
তবে এসব ব্যক্তিগত সাফল্য সত্ত্বেও দলগতভাবে খুব একটা আনন্দের কিছু নেই এমবাপ্পের জন্য। রিয়ালে এসে এত রেকর্ড গড়েও বড় কোনো শিরোপা জিততে পারেননি। শুধুমাত্র উয়েফা সুপার কাপ ও ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপই এখন পর্যন্ত তার সান্ত্বনার পুরস্কার।
তারপরও স্পেনের ফুটবলে নিজের অভিষেকটা স্মরণীয় করে রাখতে পেরেছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। লা লিগার গোলের মুকুট জয়ের পথে তিনি এখন অপ্রতিরোধ্য।
ঢাকা/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল ক ল য় ন এমব প প ন এমব প প প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্প–পুতিন বৈঠক কি যুদ্ধ থামাতে পারবে, ইতিহাস কী বলছে
আলাস্কায় রাশিয়া ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যকার বৈঠক সমস্যার শেষ নয়; বরং এক দীর্ঘ যাত্রার সূচনামাত্র। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে চলমান অস্থিরতার সমাধান দিতে পারবে না এই বৈঠক। তবুও এটি সবার কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এমন ঘটনা খুব কম ঘটেছে, যখন শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতাদের বৈঠক বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলোর সমাধান দিয়েছে।
এর একটি কারণ হলো, এত বেশি মাত্রায় মনোযোগ আকর্ষণ করা পরিস্থিতিও খুব বিরল। আমরা বর্তমানে ঠিক তেমনই একটি পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। রাশিয়া ইউক্রেনে যুদ্ধ শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিয়েছে, তাদের লক্ষ্য হলো রাশিয়ার ‘কৌশলগত পরাজয়।’ আর রাশিয়া বিশ্বরাজনীতিতে পশ্চিমাদের একচেটিয়া আধিপত্যের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়।
অন্য কারণ হলো বাস্তবিক। বিশ্বের শীর্ষ ক্ষমতাধর দেশগুলোর নেতারা এমন কোনো সমস্যার পেছনে সময় নষ্ট করেন না, যেগুলো তাঁদের অধীনেরাই সমাধান করতে পারেন। আর ইতিহাস ঘাঁটলেও দেখা যায়, শীর্ষ পর্যায়ের এসব বৈঠকের কারণে কদাচিৎ বিশ্বরাজনীতির গতি-প্রকৃতি বদলেছে।
আর তাই আলাস্কায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠককে অতীতের অনেক বিখ্যাত বৈঠকের সঙ্গে তুলনা করা হলে অবাক হওয়ার কিছু নেই।
ইতিহাসে অনেক শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে, যেগুলো যুদ্ধ ঠেকানোর বদলে পরিস্থিতিকে যুদ্ধের দিকে নিয়ে গেছে।বিশেষ করে ১৮০৭ সালে নেমন নদীতে একটি ভেলার ওপর অনুষ্ঠিত রাশিয়া ও ফ্রান্সের সম্রাটের মধ্যের বৈঠকের সঙ্গে আলাস্কার বৈঠকের তুলনা করা হচ্ছে। নেমন নদীর ওপর বৈঠকও যুদ্ধ ঠেকাতে পারেনি। বৈঠকের মাত্র পাঁচ বছর পর নেপোলিয়ন রাশিয়া আক্রমণ করে বসেন। আর সেই ভুলই তাঁর পতনের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এরপর ১৮১৫ সালের ভিয়েনা কংগ্রেসে রাশিয়া ছাড়া অন্য কোনো বড় ক্ষমতাধর দেশের নেতা নিয়মিত আলোচনায় অংশ নেননি। জার প্রথম আলেকজান্ডার তার নিজের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ইউরোপের নতুন রাজনৈতিক কাঠামো দাঁড় করাতে চেয়েছিলেন। অন্য শক্তিগুলো তা মানেনি। যেমন হেনরি কিসিঞ্জার একবার বলেছিলেন, তাঁরা আদর্শ নয়; বরং স্বার্থ নিয়ে আলোচনা করতে চাইতেন।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন