এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, কৃত্রিম আসন সংকট ও সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে সরকারের কার্যকর হস্তক্ষেপ চেয়েছে অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব)। সংগঠনটির দাবি, টিকিট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়ে তাদের চিরতরে ট্রাভেল ট্রেড থেকে বিতাড়িত করতে হবে।

বুধবার সন্ধ্যায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘আটাবের বিরুদ্ধে চক্রান্ত ও এয়ার টিকিট সিন্ডিকেটকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় এসব দাবি জানানো হয়। 

সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ এবং সঞ্চালনা করেন মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ।

সভায় আটাব নেতারা অভিযোগ করেন, কিছু অসাধু ট্র্যাভেল চক্র সিন্ডিকেট গঠন করে এয়ার টিকেটের দাম বাড়িয়ে সাধারণ যাত্রীদের ভোগান্তিতে ফেলছে। একই সঙ্গে এই চক্রটি বর্তমান বৈধভাবে নির্বাচিত আটাব কমিটির বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে চলেছে। এমনকি তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমেও অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং প্রকাশ্যে হুমকি দিচ্ছে।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন আটাবের সহসভাপতি মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান খান রেজওয়ান, সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বর্তমান ইসি সদস্য আলহাজ্ব এইচ.

এম. মুজিবুল হক সাকু, সাবেক মহাসচিব জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী দিপু, উপ-সচিব রুশো চৌধুরী, তোয়াহা চৌধুরীসহ আরও অনেকে।

আটাব কমিটি গণমাধ্যমকে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা থেকে বিরত থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকায় থাকার আহ্বান জানায়। একই সঙ্গে ট্রাভেল ট্রেডের স্বার্থ ও দেশের ভাবমূর্তি রক্ষায় তারা নিরলস কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সাম্য হত্যা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ ঢাবি উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যা

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দূর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষা ও গবেষণা বিভাগের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্রদল।

বুধবার (১৪ মে) বেলা ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি চত্বর, মধুর ক্যান্টিন, কলাভবন হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে সমাবেশ করেছে সংগঠনটি। সমাবেশ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, ঢাবি উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করেন সংগঠনটির শীর্ষনেতারা।

মিছিলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলসহ নিউমার্কেট থানা, তিতুমীর কলেজ, কবি নজরুল কলেজ, বাংলা অলেজসহ মহানগরের বিভিন্ন ইউনিটের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

আরো পড়ুন:

রাজশাহী নার্সিং কলেজ বন্ধ ঘোষণা

যবিপ্রবির সাবেক শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু, সুষ্ঠু তদন্তের দাবি

এ সময় তারা ‘আমাদের অঙ্গীকার, নিরাপদ ক্যম্পাস’, ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনী তোদের রক্ষা নাই’, ‘নয়মাসে দুই খুন, ভিসি নিয়াজের অনেক গুণ’, ‘সাম্য ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কি করে’, ‘এক দুই তিন চার, ভিসি তুই গদি ছাড়’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

বিক্ষোভে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাবি শাখার সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, “৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ঢাবিতে রক্ত ঝরবে এটা আমরা কখনো ভাবিনি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। অনতিবিলম্বে যদি আমরা কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না দেখি, তাহলে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করব।”

সমাবেশে ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, “বিভিন্ন ক্যাম্পাসে হত্যার রাজনীতি শুরু হয়েছে। ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে একজন মানসিক ভারসাম্যহীনকে হত্যা করা হয়েছে। প্রাইম বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের এক নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। আজ পরীক্ষিত নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যকে যেভাবে হত্যা করেছে, সেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন শতভাগ নিষ্ক্রিয় ছিল। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক তৈরির বদলে একটি ছাত্র সংগঠনকে বিভিন্ন হলে দখলদারিত্ব করতে সহায়তা করেছে।”

বিক্ষোভে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “গতকাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর থেকে কোনো স্পষ্ট বক্তব্য এখনো পাইনি। আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থীও যেন কোনো হামলার শিকার না হয়, আমরা সে দাবি জানাচ্ছি।”

তিনি বলেন, “আমাদের কোনো শিক্ষক যাতে ছাত্রদলের হাতে অপদস্থ না হয়, আমরা আমাদের নেতাকর্মীদের সে নির্দেশনা দিয়েছি। কিন্তু উপাচার্য স্যার কাল রাতে আমাদের নেতাকর্মীদের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন, তা কখনো গ্রহণযোগ্য নয়। আপনারা শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী সসম্মানে পদত্যাগ করুন। আগামীতে যদি ছাত্রদলের একজন কর্মীও হামলার স্বীকার হয় আর অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে আমরা এই সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলব।”

“আমরা সাম্য হত্যাকারীদের বিচার নিশ্চিত করতে সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি। এছাড়াও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হওয়ার দায় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি,” যুক্ত করেন ছাত্রদল সভাপতি।

মঙ্গলবার (১৩ মে) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় রাত ১২টার দিকে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাম্য হত্যা মামলা দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হস্তান্তর দাবি
  • কুমিল্লা মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি রানা, সম্পাদক তৃষ্ণু
  • সাম্য হত্যা: ঢাবি ভিসির বাসভবনের সামনে ছাত্রদলের অবস্থান 
  • সাম্য হত্যা: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ ঢাবি উপাচার্য-প্রক্টরের পদত্যা
  • রোটারি ইন্টারন্যাশনালের দেবে ১৩০ ফেলোশিপ, টিউশন ফি মওকুফ, আছে ইন্টার্নশিপেরও সুযোগ