ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার ও থ্রেডস অ্যাপের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ। বয়স মাত্র ৪১ বছর হলেও বিশ্বের সেরা ধনীদের একজন তিনি। সফল মানুষ হিসেবে পরিচিত জাকারবার্গ প্রতিদিন কর্মীদের সঙ্গে ঘন ঘন বৈঠকে বিশ্বাসী নন। প্রযুক্তি–দুনিয়ার বেশির ভাগ শীর্ষ নির্বাহী সময়সূচি মেনে চলার পাশাপাশি প্রতিদিন একাধিক বৈঠক করলেও জাকারবার্গের দৈনন্দিন কাজের ধরন একেবারেই আলাদা। তাঁর নেতৃত্ব দেওয়ার ধরন অনেকটাই নির্ভার, অনানুষ্ঠানিক ও কর্মীদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনাভিত্তিক।

সম্প্রতি স্ট্রাইপের সহপ্রতিষ্ঠাতা জন কলিসনের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় জাকারবার্গ বলেন, ‘আমি মানুষ পরিচালনা করতে পছন্দ করি না। এ জন্য নির্দিষ্ট সময় মেনে নিয়মিত বৈঠক করি না। তবে সহকর্মীদের সঙ্গে আমি প্রায়ই কথা বলে থাকি। সম্ভবত, তাদের চেয়েও বেশি। যখন কোনো বিষয়ে বলার থাকে, তখনই বলি। আর কেউ যদি আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়, আমি চেষ্টা করি সময় ফাঁকা রাখতে।’

জাকারবার্গের সাপ্তাহিক ক্যালেন্ডারে মাত্র দুটি বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা থাকে। একটি কৌশলগত পরিকল্পনা নিয়ে, আরেকটি প্রাতিষ্ঠানিক অগ্রাধিকার নির্ধারণে। বাকি সময় তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে ফাঁকা রাখেন। এর ফলে চিন্তা, বিশ্লেষণ ও প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণে যুক্ত থাকার সময় পান তিনি। এ বিষয়ে জাকারবার্গ বলেন, ‘প্রতিদিন একটা নির্দিষ্ট সময় নিজের জন্য রাখি। এই সময়টাতে আমি ভাবি, কাজ করি বা সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করি। যদি টানা কয়েক দিন এমনটা না করতে পারি, তখন আমি বিরক্ত হই।’

আরও পড়ুনমার্ক জাকারবার্গের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী০৪ অক্টোবর ২০২৪

মেটার সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে একটি ‘কোর টিম’ বা মূল দল। এই দলের সদস্যসংখ্যা ২৫ থেকে ৩০। প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিলেও এই দলের সদস্যরা সরাসরি জাকারবার্গকে প্রতিবেদন পাঠায় না। মেটার পণ্য পরিচালনা কাঠামোও ১৫টি ভাগে বিভক্ত। এর মধ্যে রয়েছে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, বিজ্ঞাপন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) অবকাঠামো ও ভার্চ্যুয়াল রিয়েলিটি। এসব বিভাগের কর্মীরাও সরাসরি জাকারবার্গকে প্রতিদিন প্রতিবেদন পাঠায় না। মেটার পুরো কাজের তত্ত্বাবধান করেন প্রধান পণ্য কর্মকর্তা ক্রিস কক্স, প্রধান পরিচালন কর্মকর্তা হাভিয়ের অলিভান ও প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু বোসওয়ার্থ।

আরও পড়ুনস্ত্রীর প্রতি যেভাবে ভালোবাসা প্রকাশ করলেন জাকারবার্গ ১৬ আগস্ট ২০২৪

জাকারবার্গের মতে, নেতৃত্ব মানে শুধু নির্দেশনা দেওয়া নয়, সহকর্মীদের সঙ্গে হাতে-কলমে কাজ করা। আর তাই মেটার পরিচালনাপদ্ধতি নিজের মতো করে সাজিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে জাকারবার্গ বলেন ‘আমি দায়িত্ব ভাগ করে দিয়ে এক পাশে সরে দাঁড়ানোর পক্ষে নই। এই কাঠামোর ফলে আমি অপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থাপনাগত কাজ এড়িয়ে চলতে পারি। একই সঙ্গে যেসব বিষয়ে আমার গভীরভাবে যুক্ত থাকা দরকার, সেখানে সরাসরি যুক্ত থাকতে পারি।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

আরও পড়ুনমেয়ের জন্য থ্রিডি প্রিন্টারে পোশাক বানালেন মার্ক জাকারবার্গ০১ মে ২০২৩.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম র ক জ ক রব র গ জ ক রব র গ র কর মকর ত ক জ কর

এছাড়াও পড়ুন:

ইউএনওর কাছে ‘নালিশ’ করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ

যশোরের মণিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে সহকর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগকারী শিক্ষকের দাবি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ করায় গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে বিদ্যালয়ের বারান্দায় মারধর করা হয়।

অভিযোগকারী শিক্ষকের নাম রবিউল ইসলাম। তিনি বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম এস এম মজনুর রহমান। তিনি আইসিটি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মণিরামপুর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি একটি জাতীয় দৈনিকের উপজেলা প্রতিনিধি ও মণিরামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি।

মারধরের ঘটনায় মজনুর রহমানের বিরুদ্ধে গতকাল রাতে মণিরামপুর থানা, জেলা প্রশাসক এবং মণিরামপুরের ইউএনওর কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রবিউল ইসলাম।

থানায় লিখিত অভিযোগে রবিউল ইসলাম উল্লেখ করেন, সহকারী শিক্ষক মজনুর রহমান বিদ্যালয়ের কোনো নিয়মনীতি মানেন না। গতকাল সকালে তিনি বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে বাড়িতে চলে যান। এরপর ইউএনও বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে এলে খবর পেয়ে তিনি আবার বিদ্যালয়ে ফেরেন। তখন বিষয়টি ইউএনওকে মৌখিকভাবে জানান রবিউল ইসলাম। ইউএনও বিদ্যালয় থেকে চলে যাওয়ার পর বেলা একটার দিকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনের সামনে সব শিক্ষক–শিক্ষার্থীর সামনে তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেন মজনুর। একপর্যায়ে পাশের কক্ষ থেকে লাঠি এনে তাঁর মাথায় আঘাত করেন। এতে তাঁর মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়।

এসব অভিযোগকে মিথ্যা দাবি করে মজনুর রহমান বলেন, ‘রবিউল ইসলাম ইউএনওর কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা নালিশ করেছেন। আমি বিষয়টি তাঁর কাছে জানতে চেয়েছিলাম। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে রবিউল মাথায় আঘাত লেগেছে।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার দাবি করেন, ইউএনওর কাছে অভিযোগ করা নিয়ে শিক্ষক রবিউল ও মজনুরের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তবে কোনো মারধরের ঘটনা ঘটেনি।

মারধরের ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ইউএনও নিশাত তামান্না ও মণিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর মোহাম্মদ গাজী। তাঁরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইউএনওর কাছে ‘নালিশ’ করায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক সহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ