দেবীগঞ্জে দেড় কোটি টাকার বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার
Published: 16th, May 2025 GMT
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে দেড় কোটি টাকা মূল্যের একটি কষ্টিপাথরের বিষ্ণু মূর্তি উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় আবু বক্কর ছিদ্দিক নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করে নীলফামারী র্যাব-১৩ এর একটি দল। ছিদ্দিক দেবীগঞ্জের পামুলী ইউনিয়নের মাদারের ঝাড় এলাকার মোবারক শেখের ছেলে। শুক্রবার দুপুরে তাকে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
গ্রেপ্তার ছিদ্দিক মূর্তিটি ভারতে পাচার করতে দেবীগঞ্জ উপজেলার দন্ডপাল ইউনিয়নের মাটিয়ারপাড়া এলাকায় তার শ্বশুরবাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিল। বৃহস্পতিবার বিকালে গোপন সংবাদে সেখানে অভিযান চালায় র্যাব।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, ছিদ্দীক তার শ্বশুর মুকুলের বাড়িতে মূর্তিটি এনে রাখে এবং ভারতে পাচারের জন্য সুযোগ খুঁজছিল। একপর্যায়ে র্যাবের অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে প্লাস্টিকের বস্তা নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় র্যাব সদস্যরা তাকে শ্বশুরবাড়ির বাড়ির ভেতরেই ধরে ফেলেন এবং বস্তার ভেতর থেকে ৩৩ কেজি ৫০০ গ্রাম ওজনের কষ্টিপাথরের বিষ্ণু মূর্তিটি উদ্ধার করে। যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় এক কোটি ৫০ হাজার টাকা বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়। এ ঘটনায় নীলফামারী র্যাব-১৩ এর পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক বাদী হয়ে দেবীগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন।
দেবীগঞ্জ থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার সরকার বলেন, র্যাবের পক্ষ থেকে গ্রেপ্তার যুবককে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। কষ্টিপাথরের বিষ্ণু মূর্তিসহ শুক্রবার তাকে আদালতের পাঠানো হয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য বক গ র প ত র
এছাড়াও পড়ুন:
সংস্কার শুধু সাংবিধানিক জায়গায় আটকে আছে: হোসেন জিল্লুর রহমান
ত্বত্তাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বলেছেন, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সংস্কার টপ প্রায়োরিটি হওয়া দরকার। সংস্কার আলোচনা শুধু সাংবিধানিক জায়গায় আটকে আছে। জনগণের প্রাত্যহিক জীবন নির্বিঘ্ন করার বিষয়গুলো বিশেষত পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট এক পাশে ফেলে দেওয়া আছে, জনপ্রশাসন রিপোর্টটাও একই।
শুক্রবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের অধ্যাপক মোজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে 'গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সিভিল মিলিটারি সম্পর্ক' শীর্ষক এক আলোচনা সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
‘ইউনিটি ফর বাংলাদেশ' সংগঠনের আয়োজনে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন নিউ এজ পত্রিকার সম্পাদক নূরুল কবির, লেখক ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) নাঈম আশফাক চৌধুরী। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন দর্শন বিভাগের শিক্ষক সৈয়দ নিজার আলম।
হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির সংস্কার টপ প্রায়োরিটি হওয়া দরকার। এটার পলিটিক্যাল ব্যবহারের কোনো যৌক্তিকতা নেই। কক্সবাজার একজন কাউন্সিলরকে মেরে ফেলছে, অন ক্যামেরায় পাওয়া যাচ্ছে। ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির রিপোর্ট হবে ইন্টেলিজেন্ট কিন্তু অনেক রিপোর্ট শুধুমাত্র উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ইন্টেলিজেন্ট নয়। কাজে এটা সংস্কার হতে হবে। আমার মনে হয়, সংস্কার আর্মির নেতৃত্বেও এটি হতে পারে। এটা অবশ্যই হতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এটা রাষ্ট্রের জন্য জরুরি। সক্ষম রাষ্ট্রের জন্য চারটি বিষয় জরুরি। সার্বভৌমত্ব বলতে আমরা বুঝি জিওগ্রাফিক, এটার অন্যতম হলো নীতি সার্বভৌমত্ব। স্বৈরাচারের সময় দেখেছি নীতি নেওয়া হচ্ছে, তবে সার্বভৌমভাবে নেওয়া হচ্ছে না। পলিটিক্যাল সার্বভৌমত্ব আছে তবে ভেতরে অন্তঃসারশূন্য।
তিনি আরও বলেন, আমাদের গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ করতে হবে। সিভিল মিলিটারি সম্পর্ক তার একটি অংশ। রিফর্ম নিয়ে একধরনের সাংবিধানিক বিষয়গুলোর আলোচনাই প্রাধান্য পাচ্ছে। কিন্তু জনগণের প্রাত্যহিক জীবনের বিশেষ করে পুলিশ কমিশনের রিপোর্ট পাশে ফেলে দেওয়া আছে। রাজনীতিবিদদের সঙ্গে আলোচনায় রিপোর্টটাই নাই। প্রশাসন সংস্কারের রিপোর্টটাই একইভাবে পড়ে আছে।
সাংবিধানিক বিষয় গুরুত্বপূর্ণ এবং ক্ষমতার ভারসাম্য জরুরি মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নতি, শিক্ষা-স্বাস্থ্যের প্রয়োজন যদি মেটানো না যায়, আইনশৃংখলা/নিরাপত্তার বিষয়গুলো যদি মেটানো না যায়, তাহলে আজাদী মিথ্যা হয়ে উঠতে পারে এমন মনে হবে। এদিকে নজর দেওয়া দরকার।
নূরুল কবির বলেন, ‘সামরিক বাহিনীকে রাজনীতিকরণ করা ঠিক না' এটা হচ্ছে সবচেয়ে বেঠিক কথা। সেনাবাহিনী যদি রাজনীতি না বুঝে তাহলে তারা দেশের ক্রান্তিলগ্নে সিভিলিয়ানদের সাথে একযোগে কাজ করতে পারবে না। আপনারা রাজনীতিকরণ ও দলীয়করণকে এক করে মিলাবেন না।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য একটি ভালো সেনাবাহিনী দরকার কিন্তু সেনাশাসন দরকার নেই। সিভিল এবং মিলিটারি সম্পর্ক একটি বাইনারি অপজিশন। সেনাপ্রধান যখন এরশাদকে বলে মিলিটারি আর আপনার সঙ্গে নেই, তখনই এরশাদ ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়। আবার গত ৩ আগস্ট যখন বর্তমান সেনাপ্রধান জুনিয়র অফিসারদের দাবির মুখে হাসিনাকে সেনাবাহিনীর অপারগতার কথা জানিয়ে দেন, তখনই হাসিনার পতন তরান্বিত হয়। ২০১৪ সাল নির্বাচন পরবর্তী সময়েই যদি বাংলাদেশের সেনাবাহিনী অসন্তোষ প্রকাশ করতো, তাহলে জুলাইয়ে দেড় হাজার মানুষের প্রাণ দেওয়া লাগতো না।
সৈয়দ নিজার আলম বলেন, মিলিটারি সম্পর্কে একটি বাইনারি আকারে প্রকাশ করা হয়েছে। অথচ এ সম্পর্ক দ্বান্দ্বিক হওয়ার কথা না। কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষক থেকে শুরু করে মিলিটারি সবাই আমরা রাষ্ট্রের রাষ্ট্রজন। তাই সবাইকে এক কাতারে থেকে দেশের সেবা প্রদান করতে হবে।