সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের বাড়ি ভাড়ায় রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের নামে বাসা বরাদ্ধ নিয়ে থাকছেন দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা কর্মচারী।

সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তাদের মূল বেতনের ৩৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া প্রদানের নিয়ম থাকায় তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য গার্ড ও নাইট গার্ডের মূল বেতনের বাড়ি ভাড়া প্রদান করে বসবাস করছেন। ফাউন্ডেশনের পরিচালনা বোর্ডের ১২৭তম সভায় সরকার নির্ধারিত বাড়ি ভাড়া প্রদান করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসিক ভবনে বসবাস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

ওই সভার নির্দেশনা অমান্য করে দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তারা ফাউন্ডেশনের আবাসিক ভবনে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেয়নি। ফলে মাসের পর মাস সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ১২৭তম সভা ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবার বিকেলে ঢাকার জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে অনুষ্টিত হয়। ওই সভায় ফাউন্ডেশনের ১৩টি এজেন্ডা নিয়ে সভা হয়। সভায় ৮ নং এজেন্ডায় ফাউন্ডেশনের আবাসিক ভবনে বসবাসরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসা ভাড়া প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়। 

আলোচনায় সরকার নির্ধারিত বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য একই বছরের ৩০অক্টোবর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের তৎকালীন সহকারী সচিব মো.

মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালককে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেন। সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে দীর্ঘ ১৮মাস ধরে কর্মকর্তারা কর্মচারীরা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ফাউন্ডেশনের ৯ জন কর্মকর্তা বসবাস করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন, তাদের নামে বাসা ভাড়া বরাদ্ধ হলেও তারা ওই বাসায় বসবাস করছেন না। তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বসবাস করেন তাই প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। ছোট চাকুরী তাই তাদের সঙ্গে প্রতিবাদ করে পারবেন না।

সরেজমিনে ফাউন্ডেশনের গিয়ে জানা যায়, অফিসার্স কোয়ার্টারের দ্বিতীয় তলায় পূর্ব পাশে পরিচালকের একান্ত সহকারী মো. সারোয়ার হোসেন, স্টাফ কোয়ার্টারে প্রথম তলার উত্তর পাশে কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক দিলওয়ার হোসেন, তৃতীয় তলার উত্তর পাশে গার্ড মো. আয়নাল হক, দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ পাশে মিউজিয়াম এটেনডেন্ট কাজী মিজানুর রহমান, দ্বিতীয় তলার উত্তর পাশে গার্ড আবুল বাশার, প্রথম তলার দক্ষিণ পাশে গার্ড মো. জায়েদুল হক নয়ন, চতুর্থ তলার পশ্চিম পাশে অফিস সহায়ক সবি শংকর চাকমা, দ্বিতীয় তলার পূর্ব পাশে গার্ড মো. ইউনুস খাঁন ও দ্বিতীয় তলার পশ্চিম পাশে গার্ড মো. রানা মিয়ার নামে বরাদ্ধ রয়েছে। 

সেখানে তাদের নামে পল্লী বিদ্যুতের মিটার রয়েছে। তাদের নামে বরাদ্ধ হলেও দুজন ছাড়া কেউ বরাদ্ধকৃত বাসায় বসবাস করেন না।

সূত্র জানায়, পরিচালকের একান্ত সহকারী মো. সারোয়ার হোসেনের বরাদ্ধকৃত কোয়ার্টারে থাকেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাখওয়াত হোসেন, কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক দিলওয়ার হোসেনের কোয়ার্টারে থাকেন পরিচালকের একান্ত সহকারী মো. সারোয়ার হোসেন, গার্ড মো. আয়নাল হক কোয়ার্টারে থাকেন হিসাব রক্ষক আব্দুর রহিম, মিউজিয়াম এটেনডেন্ট কাজী মিজানুর রহমানের কোয়ার্টারে থাকেন অর্ভথনাকারী তাজমহল বেগম, গার্ড আবুল বাশারের কোয়ার্টারে থাকেন মিউজিয়াম এটেনডেন্ট কাজী মিজানুর রহমান, গার্ড মো. জায়েদুল হক নয়নের কোয়ার্টারে থাকেন পরিচালকের ব্যক্তিগত গাড়ি চালক বুলবুল ইসলাম, অফিস সহায়ক সবি শংকর চাকমার কোয়াটারে থাকে মাসুদুর রহমান, গার্ড রানা মিয়ার কোর্য়াটারে থাকেন মো. হালিম উদ্দিন।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক একে এম আজাদ সরকার বলেন, বিষয়টি আমার নজরে নেই। তবে খোঁজ নিয়ে রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ বসব স করছ ন কর মকর ত র রহম ন বর দ ধ সরক র সহক র

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে বাড়ি ভাড়ায় রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ

সোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের বাড়ি ভাড়ায় রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের নামে বাসা বরাদ্ধ নিয়ে থাকছেন দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণীর কর্মকর্তা কর্মচারী।

সরকারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তাদের মূল বেতনের ৩৫ শতাংশ বাড়ি ভাড়া প্রদানের নিয়ম থাকায় তারা সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার জন্য গার্ড ও নাইট গার্ডের মূল বেতনের বাড়ি ভাড়া প্রদান করে বসবাস করছেন। ফাউন্ডেশনের পরিচালনা বোর্ডের ১২৭তম সভায় সরকার নির্ধারিত বাড়ি ভাড়া প্রদান করে কর্মকর্তা কর্মচারীদের আবাসিক ভবনে বসবাস করার নির্দেশনা দেওয়া হয়। 

ওই সভার নির্দেশনা অমান্য করে দীর্ঘদিন ধরে কর্মকর্তারা ফাউন্ডেশনের আবাসিক ভবনে সরকারী রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কোন উদ্যোগ নেয়নি। ফলে মাসের পর মাস সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হচ্ছে।

জানা যায়, বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের ১২৭তম সভা ২০২৩ সালের ১৬ অক্টোবার বিকেলে ঢাকার জাতীয় নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে অনুষ্টিত হয়। ওই সভায় ফাউন্ডেশনের ১৩টি এজেন্ডা নিয়ে সভা হয়। সভায় ৮ নং এজেন্ডায় ফাউন্ডেশনের আবাসিক ভবনে বসবাসরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বাসা ভাড়া প্রসঙ্গে আলোচনা করা হয়। 

আলোচনায় সরকার নির্ধারিত বাড়ি ভাড়া ভাতা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য একই বছরের ৩০অক্টোবর সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের তৎকালীন সহকারী সচিব মো. মুজিবুর রহমান ফাউন্ডেশনের পরিচালককে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেন। সেই সিদ্ধান্ত অমান্য করে দীর্ঘ ১৮মাস ধরে কর্মকর্তারা কর্মচারীরা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ফাউন্ডেশনের ৯ জন কর্মকর্তা বসবাস করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন, তাদের নামে বাসা ভাড়া বরাদ্ধ হলেও তারা ওই বাসায় বসবাস করছেন না। তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বসবাস করেন তাই প্রতিবাদ করতে সাহস পান না। ছোট চাকুরী তাই তাদের সঙ্গে প্রতিবাদ করে পারবেন না।

সরেজমিনে ফাউন্ডেশনের গিয়ে জানা যায়, অফিসার্স কোয়ার্টারের দ্বিতীয় তলায় পূর্ব পাশে পরিচালকের একান্ত সহকারী মো. সারোয়ার হোসেন, স্টাফ কোয়ার্টারে প্রথম তলার উত্তর পাশে কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক দিলওয়ার হোসেন, তৃতীয় তলার উত্তর পাশে গার্ড মো. আয়নাল হক, দ্বিতীয় তলার দক্ষিণ পাশে মিউজিয়াম এটেনডেন্ট কাজী মিজানুর রহমান, দ্বিতীয় তলার উত্তর পাশে গার্ড আবুল বাশার, প্রথম তলার দক্ষিণ পাশে গার্ড মো. জায়েদুল হক নয়ন, চতুর্থ তলার পশ্চিম পাশে অফিস সহায়ক সবি শংকর চাকমা, দ্বিতীয় তলার পূর্ব পাশে গার্ড মো. ইউনুস খাঁন ও দ্বিতীয় তলার পশ্চিম পাশে গার্ড মো. রানা মিয়ার নামে বরাদ্ধ রয়েছে। 

সেখানে তাদের নামে পল্লী বিদ্যুতের মিটার রয়েছে। তাদের নামে বরাদ্ধ হলেও দুজন ছাড়া কেউ বরাদ্ধকৃত বাসায় বসবাস করেন না।

সূত্র জানায়, পরিচালকের একান্ত সহকারী মো. সারোয়ার হোসেনের বরাদ্ধকৃত কোয়ার্টারে থাকেন নিরাপত্তা কর্মকর্তা সাখওয়াত হোসেন, কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক দিলওয়ার হোসেনের কোয়ার্টারে থাকেন পরিচালকের একান্ত সহকারী মো. সারোয়ার হোসেন, গার্ড মো. আয়নাল হক কোয়ার্টারে থাকেন হিসাব রক্ষক আব্দুর রহিম, মিউজিয়াম এটেনডেন্ট কাজী মিজানুর রহমানের কোয়ার্টারে থাকেন অর্ভথনাকারী তাজমহল বেগম, গার্ড আবুল বাশারের কোয়ার্টারে থাকেন মিউজিয়াম এটেনডেন্ট কাজী মিজানুর রহমান, গার্ড মো. জায়েদুল হক নয়নের কোয়ার্টারে থাকেন পরিচালকের ব্যক্তিগত গাড়ি চালক বুলবুল ইসলাম, অফিস সহায়ক সবি শংকর চাকমার কোয়াটারে থাকে মাসুদুর রহমান, গার্ড রানা মিয়ার কোর্য়াটারে থাকেন মো. হালিম উদ্দিন।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে ক্ষুদে বার্তা দিয়ে সাড়া পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক একে এম আজাদ সরকার বলেন, বিষয়টি আমার নজরে নেই। তবে খোঁজ নিয়ে রাজস্ব ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ