স্বাস্থ্য কমিশনের প্রতিবেদনে নতুন কোনো দিকনির্দেশনা পাইনি বলে মন্তব্য করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও চিন্তাবিদ ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য কমিশনের যে প্রতিবেদনটা আমরা পেয়েছি, এখানে এমন কোনো দিকনির্দেশনা পাই না, যে দিকনির্দেশনার মাধ্যমে আমরা নতুন একটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে চিন্তা করতে পারি।’

শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরম খাঁ হলে ‘সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ’-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। 

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘সরকারি হাসপাতালগুলোতে সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা পাওয়ার জায়গা। কিন্তু সরকারি হাসপাতালগুলোতে আমাদের (সরকার) কোনো মনোযোগ নেই। শুধু এই উপমহাদেশ নয়, সমগ্র বিশ্বে সবচেয়ে সেরা হাসপাতাল হতে পারে এই সরকারি হাসপাতালগুলো। এটা করবার কোনো ইচ্ছে এই সরকারের নেই।’

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য ব্যবস্থা করতে হলে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মর্ম হচ্ছে জনগণের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়া।  তাহলে রাষ্ট্রের প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে জনগণ যদি সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তাহলে দেশের প্রাতিষ্ঠানিক যেসকল উদ্যোগ নেয়া দরকার, সেগুলো জনগণ নিতে পারে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্পিরিট যেসব কমিশনগুলোতে নেই, সেগুলো আমরা ছুড়ে ফেলে দিবো।  

তিনি আরও বলেন, ‘রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে, এগুলো ভুয়া কথা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এগুলোর কোনো অন্তঃসার নেই। রাষ্ট্র এখন একান্তই বহুজাতিক কোম্পানির হাতিয়ার। আপনি (সরকার) বন্দর দিয়ে দেবেন, আপনি প্রাইভেট কোম্পানিগুলোকে সব দিয়ে দেবেন। আপনি বিনিয়োগ আনবেন। বিনিয়োগ তো পরের কথা! আগে দেশটা গঠন করেন।’

ফরহাদ মজহার বলেন, ‘স্বাস্থ্য সম্পর্কে আমাদের মতাদর্শিক মারাত্মক বিভ্রান্তি রয়েছে। স্বাস্থ্য মানে মেডিকেলাইজেশন নয়। পুরো কৃষি ব্যবস্থা আমাদের স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত। ফলে কৃষি ব্যবস্থার সংস্কার জরুরি। মতাদর্শিকভাবে স্বাস্থ্য কী, সেটা আমরা জানি না। এটা আামদেরকে জানতে হবে এবং জুলাই গণঅভ্যুত্থান পর আমাদেরকে ডিফাইন করতে হবে আমরা স্বাস্থ্য বলতে কী বুঝি। একবার যদি আমরা বুঝতে পারি, তখন নিঃসন্দেহে একটা গণকমিশন, আমাদের কী ধরনের সংস্কার প্রয়োজন, কীভাবে আমরা নতুন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলব; তার একটা দিক আমরা খুঁজে পাবো।’     
    
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক ডা.

কাজী সাইফুদ্দিন বেননুর। সুস্বাস্থ্যের বাংলাদেশ-এর সদস্য সচিব ডা. মো. শামীম হায়দার তালুকদারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন, বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, তামাক বিরোধী নারী জোটের (তাবিনাজ) পরিচালক সীমা দাস শিমু, ভাববৈঠকি'র মূল সংগঠক মো. রোমেল।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফরহ দ মজহ র ফরহ দ মজহ র ব যবস থ আম দ র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। 

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সংসদ ভবনের এল. ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) আলোচনাকালে তিনি এ সব কথা বলেন।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, “ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার বিষয়টিকে আমরা একটি জাতীয় সনদে প্রতিফলিত করতে চাই। ভবিষ্যতে প্রত্যেকটা রাজনৈতিক দল এই সনদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে ভূমিকা পালন করবে।” 

বাংলাদেশে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা এদেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলোর দীর্ঘদিনের সংগ্রামের ফল উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত বছরের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানুষের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ যেমন প্রকাশ হয়েছে, তেমনি তাদের প্রত্যাশাকেও প্রকাশ করেছে। বার বার ফ্যাসিবাদের উত্থান হোক তা দেশের মানুষ চায় না। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই, যেখানে সকলের সমানাধিকার থাকবে, নাগরিকের অধিকার সুনিশ্চিত হবে এবং ভিন্ন মতাদর্শের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ থাকবে।” 

কমিশনের সহ-সভাপতি আরো বলেন, “সংস্কার কমিশনগুলো থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে কমিশন। এ দায়িত্ব কেবল জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের নয় বরং রাজনৈতিক দলগুলোকেই মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটিয়ে ভবিষ্যতের পথে অগ্রসর হতে হবে।”

সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।

বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের নেতৃত্বে দলটির সহ-সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতনসহ ১১ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন নিখিল দাশ, জনার্দন দত্ত নানটু, প্রকৌশলী শম্পা বসু, ডা. মনীষা চক্রবর্ত্তী, জুলফিকার আলী, আহসান হাবিব বুলবুল, খালেকুজ্জামান লিপন, আবু নাঈম খান বিপ্লব এবং রাহাত আহম্মেদ।

রাষ্ট্র সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার যে ১১টি কমিশন গঠন করেছে, তার মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন ও দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলো নিয়ে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করছে ঐকমত্য কমিশন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের সঙ্গে আলোচনা হয়।

ঢাকা/এএএম/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারীর ডাকে নারীর সমাবেশ
  • ‘অপশক্তিকে রুখে না দিলে গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট হবে’ 
  • জুলাই অভ্যুত্থান দীর্ঘ লড়াইয়ের ফসল: ফরহাদ মজহার
  • উদীচীর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচি
  • ধানমন্ডির পুরাতন ২৭ নম্বর রোড এখন ‘শহীদ ফারহান ফাইয়াজ’ সড়ক
  • মালয়েশিয়ায় ‘নতুন রাজনৈতিক দলের কাছে প্রবাসীদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনা
  • গণঅভ্যুত্থানে আহত ৭৯ জন পেলেন অনুদানের চেক
  • গণমাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপ করছে না সরকার
  • গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে সুনির্দিষ্ট রূপ দিতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ