শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ও তালিকাভুক্ত নয়—এমন কোম্পানির মধ্যকার করপোরেট করহারের ব্যবধান ন্যূনতম ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছেন বাজার অংশীজনেরা। পাশাপাশি আগামী বাজেটে শেয়ারবাজারে এক লাখ টাকা পর্যন্ত লভ্যাংশ আয়কে করমুক্ত রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। আজ শনিবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে এক বৈঠকে এসব প্রস্তাব করা হয়। এর আগে শেয়ারবাজার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকেও বিএসইসির পক্ষ থেকে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছিল।

শেয়ারবাজারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বাজার অংশীজনদের সঙ্গে আজ শনিবার বিকেলে বৈঠকে বসে বিএসইসি। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), ডিএসই ব্রোকারস অ্যাসোসিয়েশন (ডিবিএ), মার্চেন্ট ব্যাংকারদের সংগঠন বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ), ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। সভায় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার মোহসিন চৌধুরী, আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ, ডিএসইর চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলাম, সিএসইর চেয়ারম্যান এ কে এম হাবিবুর রহমান, ডিবিএর সভাপতি সাইফুল ইসলাম, ডিএসইর পরিচালক মিনহাজ মান্নান, শাকিল রিজভী ও রিচার্ড ডি রোজারিও, বিএমবিএর সভাপতি মাজেদা খাতুন, আইসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিরঞ্জন চন্দ্র দেবনাথ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সভা শেষে বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় শেয়ারবাজারের মূলধনি মুনাফার ওপর থেকে কর প্রত্যাহার, বেনিফিশিয়ারি ওনার্স বা বিও হিসাবের বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ মাশুল মওকুফ, ব্রোকারেজ হাউসের লেনদেনের ওপর থেকে অগ্রিম কর কমানো, ব্রোকারেজ হাউসের সমন্বিত গ্রাহক হিসাব থেকে প্রাপ্ত আয়ের ব্যবহার, সরকারি কোম্পানি ও বেসরকারি খাতের বহুজাতিক কোম্পানি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তিসহ বাজারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে যেসব বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে ব্যবস্থা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে বিএসইসি ব্যবস্থা নেবে বলে সভায় জানানো হয় বলে বৈঠক সূত্রে জানা যায়।

বিএসইসির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সভায় আইসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, চলতি অর্থবছরে সংস্থাটির আয়ের ৮০ শতাংশই বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে বিতরণ করা হবে। বাকি ২০ শতাংশ নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশনিং হিসেবে সংরক্ষণ করা হবে। এ ছাড়া সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে প্রতি মাসের শেষ বৃহস্পতিবার বাজার অংশীজনদের নিয়ে সমন্বয় সভা করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র ব এসইস র প রস ত ব

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ৮ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে (১০ থেকে ১৪ আগস্ট) সূচকের পতনের মধ্যে দিয়ে লেনদেনে শেষ হয়েছে। এ সময়ে ডিএসই ও সিএসইতে টাকার পরিমাণে লেনদেন কমেছে। একই সঙ্গে উভয় পুঁজিবাজারে বিদায়ী সপ্তাহে বাজার মূলধন কমেছে ৮ হাজার ৫৫৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকা।

শনিবার (১৬ আগস্ট) ডিএসইর সাপ্তাহিক বাজার পর্যালোচনা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

তথ্য মতে, সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স (৫৭.৯২) পয়েন্ট বা ১.০৭ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৩৫০ পয়েন্টে। অপর সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক (২৩.৮৮) পয়েন্ট বা ১.১৪ শতাংশ কমে ২ হাজার ৭৩ পয়েন্টে, ডিএসই শরিয়াহ সূচক (৭.২৬) পয়েন্ট বা ০.৬২ শতাংশ কমে ১ হাজার ১৬৩ পয়েন্টে এবং ডিএসএমইএক্স সূচক (এসএমই ইনডেক্স) ৩০.৮০ পয়েন্ট বা ৩.২৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯১ পয়েন্টে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ১১ হাজার ৬৮৩ কোটি ৩ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ১৫ হাজার ৭৯ কোটি ২২ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৩ হাজার ৩৯৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৪৪৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩ হাজার ৬৪৫ কোটি ৩১ লাখ টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে লেনদেন কমেছে ১৯৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিটের লেনদেন হয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৯৯টির, দর কমেছে ২৭৪টির ও দর অপরিবর্তিত রয়েছে ২৩টির। তবে লেনদেন হয়নি ১৭টির।

অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইর সার্বিক সূচক সিএএসপিআই (২২০.২৩) পয়েন্ট বা ১.৪৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯৭২ পয়েন্টে। সিএসইর অপর সূচকগুলোর মধ্যে সিএসই-৩০ সূচক (১.৪৮) শতাংশ কমে ১৩ হাজার ২৩৭ পয়েন্টে, সিএসসিএক্স সূচক (১.৩৫) শতাংশ কমে ৯ হাজার ১৯০ পয়েন্টে, সিএসআই সূচক (১.১৩) শতাংশ কমে ৯৪৫ পয়েন্টে এবং এসইএসএমইএক্স (এসএমই ইনডেক্স) (৪.৪৫) শতাংশ কমে ১ হাজার ৮৭৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

বিদায়ী সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ২২ হাজার ৯১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২৭ হাজার ২৫১ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। টাকায়। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন কমেছে ৫ হাজার ১৬০ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয়েছে ৭৫ কোটি ৭৮ লাখ টাকা। আর বিদায়ী সপ্তাহের আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ১১১ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে সিএসইতে লেনদেন কমেছে ৩৫ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।

বিদায়ী সপ্তাহে সিএসইতে মোট ৩১৩টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে ৮৮টির, দর কমেছে ২০৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬টির শেয়ার ও ইউনিট দর।

ঢাকা/এনটি/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিএসইতে সাপ্তাহিক দাম বাড়ার শীর্ষে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক
  • ডিএসইর পিই রেশিও কমেছে ১.৭৩ শতাংশ
  • পুঁজিবাজারে মূলধন কমেছে ৮ হাজার ৫৫৬ কোটি টাকা