৩ হাজারের বেশি গোরখোদক মনু মিয়া হাসপাতালে, মৃত ঘোড়াটি মিলল কাটখালে
Published: 19th, May 2025 GMT
যে কারও মৃত্যু সংবাদ কানে আসা মাত্রই খুন্তি, কোদাল, ছুরি, করাত, দা, ছেনিসহ সহায়ক সব যন্ত্রপাতি নিয়ে ছুটে যান কবরস্থানে। মানুষের অন্তিম যাত্রায় তিনি বাড়িয়ে দেন তার আন্তরিক হাত।
নিঃস্বার্থ সেবার অনন্য দৃষ্টান্ত হওয়া মনু মিয়া কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার জয়সিদ্দি ইউনিয়নের আলগা পাড়া গ্রামের প্রবীণ মুরুব্বি। মনু মিয়া কবর খননের কাজ করে তিনি পার করে দিয়েছেন তার ৬৭ বছরের জীবনের সুদীর্ঘ ৪৯টি বছর।
কোনো ধরনের পারিশ্রমিক কিংবা বখশিস না নিয়ে তিনি এ পর্যন্ত খনন করেছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর। দূরের যাত্রায় দ্রুত পৌঁছাতে নিজের ধানীজমি বিক্রি করে বেশ কয়েক বছর আগে কিনেছেন একটি ঘোড়া। এই ঘোড়ার পিঠে তিনি তুলে নেন তার যাবতীয় হাতিয়ার-যন্ত্র। সেই ঘোড়ায় সওয়ার হয়েই শেষ ঠিকানা সাজাতে মনু মিয়া ছুটে চলেন গ্রাম থেকে গ্রামে।
তবে তার অসুস্থতায় চলার সাথী ঘোড়াটি মেরে ফেলেছে দুর্বৃত্তরা। গত শুক্রবার (১৬ মে) ঘোড়াটিকে মিঠামইন উপজেলা কাঠখাল ইউনিয়নের হাসিমপুর গ্রামে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ সময় ঘোড়াটির শরীরে জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। বিষয়টা জানাজানি হলে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে এলাকায়।
মুনু মিয়ার পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার অসুস্থতার সুযোগে চলার পথে সাথী ঘোড়া বাহাদুরকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে কে বা কাহারা। এই বিষয়টা জানাজানি হলে তীব্র নিন্দার ঝড় উঠেছে এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এই ঘোড়াটি দুইদিন কাটখাল গ্ৰামের আশেপাশে দেখা গেছে। কিন্তু কে হত্যা করেছে সঠিকভাবে জানা যায়নি। ঘোড়ার হত্যাকারীকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।
মনু মিয়ার স্ত্রী রহিমা বেগমের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ হলে তিনি জানান, তারে (মনু মিয়া) তাড়াতাড়ি করে ঢাকা নিয়ে আসলে ঘোড়াটিকে দেখার মতো কেউ ছিল না। হয়তো রশি ছিঁড়ে চলে গেছে এখন খবর পেয়েছি, ঘোড়াটাকে মেরে ফেলেছে। তার (মনু মিয়া) কাছে ঘোড়াটা সন্তানের মতো ছিলো। নিজের থেকে বেশি আদর যত্ন করেছে। আমরা বিচার চাই।
মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির বলেন, বিষয়টি শুনেছি। খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক শ রগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
স্মরণকালের ভালো নির্বাচন করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার: জ্বালানি উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তী সরকার স্মরণকালের ভালো নির্বাচন করতে চায় বলে জানিয়েছেন জ্বালানি মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, ভালো নির্বাচন মানে যে ভোটার ভোট দিতে যাবেন, সে ভোট দিতে পারবেন।
শুক্রবার দুপুরের দিকে উপজেলার বালিজুড়ি ইউনিয়নের তারতাপাড়া এলাকায় গ্যাস অনুসন্ধান কূপ খনন কার্যক্রম পরিদর্শনের সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
জ্বালানি উপদেষ্টা এ সময় আরও বলেন, প্রার্থীদের পোলিং এজেন্টার থাকতে পারবেন। সবার সামনে উন্মুক্তভাবে ভোট গণনা করা হবে। যে নির্বাচিত হয়ে আসবেন তাকেই আমরা স্বাগত জানাব।
তিনি বলেন, আপনারা এমন লোককে নির্বাচিত করবেন যিনি উন্নয়ন প্রকল্পটা সঠিকভাবে ব্যয় করবেন, সঠিক প্রকল্পে ব্যয় করবেন। তিনি এমন কোনো কাজ করবেন না, যাতে তাকে পালিয়ে যেতে হয়। তিনি যেন থাকেন। পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করবেন। যাকে খুশি তাকে ভোট দিতে পারবেন। আশা করি আমরা একটা সফল নির্বাচন করতে সক্ষম হবো। আমাদের যাত্রায় বিঘ্ন ঘটেছে, সেই বাধা কাটিয়ে নতুন যাত্রা শুরু করতে পারবো।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় সচিব মো. সাইফুল ইসলাম, বাপেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. ফজলুল হক, জেলা প্রশাসক হাছিনা বেগমসহ অনেকেই। পরে জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান মাদারগঞ্জ সোলার প্ল্যান পরিদর্শনে যান।