স্কারলেট জোহানসনের প্রথম পরিচালিত চলচ্চিত্র ‘এলেনর দ্য গ্রেট’ কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হলো। উৎসবের ‘আঁ সার্তে রিগা’ বিভাগে প্রদর্শিত ছবিটি দেখে পাঁচ মিনিট করতালিতে উষ্ণ অভিবাদন জানান হলভর্তি অতিথিরা। যা জোহানসনের জন্য এক স্মরণীয় মুহূর্ত হয়ে ওঠে।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন কিংবদন্তী জুন স্কুইব, চিউয়েটেল ইজিওফর ও এরিন কেলিম্যান। প্রদর্শনী শেষে দর্শকদের উচ্ছ্বসিত অভিব্যক্তির মাঝে স্কারলেট জোহানসন মঞ্চে এসে জুন স্কুইবকে আলিঙ্গন করেন। পরে তিনি স্কুইবকে ‘অসাধারণভাবে অনুপ্রেরণাদায়ী’ বলে উল্লেখ করেন।
‘এলেনর দ্য গ্রেট’ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে আছেন ৯৪ বছর বয়সী এলেনর মরগেনস্টিন, যিনি ব্যক্তিগত গভীর শোকের পর এক গল্প বলতে শুরু করেন, যা ধীরে ধীরে বিপজ্জনক বাস্তবতার রূপ নেয়। চরিত্রটি রূপায়ণ করেছেন জুন স্কুইব, যিনি তাঁর স্বতঃস্ফূর্ত অভিনয়ের জন্য প্রশংসিত হয়েছেন।
চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আগে জোহানসন বলেন, ‘এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করা আমার কাছে স্বপ্ন পূরণের মতো। এটি বন্ধুত্ব, শোক এবং ক্ষমা করে দেওয়ার গল্প। সিনেমায় যে অনুভূতি দেখানো হয়েছে তা আজকের দিনে বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। এটি একটি স্বাধীন চলচ্চিত্র এবং এতে জড়িত সবাই শুধুমাত্র স্ক্রিপ্টের প্রেমে পড়ে কাজ করেছেন। এটা কারও অর্থ উপার্জনের জন্য করা হয়নি।’
এরিন কেলিম্যান সম্পর্কে জোহানসন বলেন, ‘সে একেবারে আবিষ্কারের মতো। আমি খুবই রোমাঞ্চিত যে বিশ্ব এখন ওকে চিনতে পারবে।’
উৎসবে জোহানসনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন তার এজেন্ট ও সিএএ-র সিইও ব্রায়ান লর্ড, অস্কারজয়ী অভিনেতা অ্যাড্রিয়ান ব্রোডি এবং তার সঙ্গী জর্জিনা চ্যাপম্যানসহ আরও অনেকে।
এছাড়াও জোহানসন এ বছর কান-এ আরও একটি আলোচিত ছবি, ওয়েস অ্যান্ডারসনের ‘দ্য ফিনিশিয়ান স্কিম’-এ অভিনয় করেছেন। আগেও তিনি ২০০৫ সালে ‘ম্যাচ পয়েন্ট’, ২০০৮ সালে ‘ভিকি ক্রিস্টিনা বার্সেলোনা’, এবং ২০২৩ সালে ‘অ্যাস্টেরয়েড সিটি’ ছবির জন্য কানে এসেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র জ হ নসন প রদর শ র জন য কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
কান চলচ্চিত্র বিশ্ব নারী অ্যাজেন্ডা : সমতা এখন আর গল্প নয়, বাস্তবতা
কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রেক্ষাপটে প্রথমবারের মতো আয়োজিত হল ‘ওয়ার্ল্ড ওমেন কান অ্যাজেন্ডা’। যেখানে সমতার নতুন এক বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরল ওয়ার্ল্ড ওমেন ফাউন্ডেশন। এখানে উদ্বোধনী বক্তব্য দেন ব্রাজিলের সংস্কৃতি মন্ত্রী ও কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী মার্গারেথ মেনেজেস।
কানের প্রথম দিনেই চালু হয় ‘Equality Moonshot’— এর মত একটি বৈপ্লবিক উদ্যোগ। এটির লক্ষ্য: গল্প, মিডিয়া, অর্থনীতি ও সংস্কৃতিতে সমতার শক্তিশালী ভিত্তি নির্মাণ করা। আয়োজক সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এই উদ্যোগ ইতিমধ্যেই ১.৫ বিলিয়নের বেশি মিডিয়া ইমপ্রেশন অর্জন করেছে।
উদ্বোধনী দিনে ওয়ার্ল্ড ওমেন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও রূপা ড্যাশ, ফরাসি অভিনেত্রী মারিয়ান বোরগো এবং কাউন্টেস কিয়ারা মোডিকা ডোনা দালে রোজের নেতৃত্বে শুরু হয় আলোচনা পর্ব। তারা পিতৃতন্ত্রকে “বিটা ভার্সন” বলে আখ্যা দিয়ে নারী-নেতৃত্বাধীন সংস্কৃতিকে "ভার্সনসন ২.০ বলে অভিহিত করেন। যাকে একটি োর্বজনীন নতুন অপারেটিং সিস্টেম।
নারী পরিচালকদের গল্পের একটি সেশন ছিল এতে। এই সেশনে অংশ নেন পরিচালক রুসুদান গ্লুরজিদজে ও আনকা মিরুনা লাজারেস্কু। আলোচনা হয়, কীভাবে নারী পরিচালকদের গল্প এখন শুধু সিনেমা নয়, বরং সংস্কৃতির নতুন কণ্ঠস্বর হয়ে উঠছে। তথ্য বলছে, ২০২৭ সালের মধ্যে নারী পরিচালিত ছবির আর্থিক রিটার্ন ১৭% পর্যন্ত বাড়তে পারে।
এই আয়োজনের মাধ্যমে বিশ্ব নারী ফাউন্ডেশন প্রমাণ করেছে—গল্প এখন শুধু বিনোদন নয়, এটি নীতি, অর্থনীতি এবং সুস্থতার কাঠামো তৈরির একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। বিশ্ব পরিবর্তনের পথে কান চলচ্চিত্র উৎসব এখন আর শুধু সিনেমার উৎসব নয়—এটি হয়ে উঠেছে ভবিষ্যতের নকশা রচনার কেন্দ্রবিন্দুও।