বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চা শিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো—এই শ্রমিকরা আজও ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত। তাদের জীবনমান অত্যন্ত নিচু। এটি মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি উদাহরণ।

বর্তমানে চা শ্রমিকরা যে মজুরি পান, তা দিয়ে ন্যূনতম জীবনধারণও অত্যন্ত কষ্টসাধ্য। বাসস্থান, স্বাস্থ্যসেবা, শিশুশিক্ষা এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে তারা প্রতিদিন দারিদ্র্য ও কষ্টের সঙ্গে লড়াই করে চলেছেন। দীর্ঘদিন ধরে ন্যায্য মজুরির দাবি জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

এই পরিস্থিতিতে চা শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। প্রথমত, তাদের মজুরি এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে, যাতে তারা পরিবার নিয়ে সম্মানজনক ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। দ্বিতীয়ত, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, যাতে তাদের সন্তানরা দারিদ্র্যের চক্র থেকে মুক্ত হতে পারে। তৃতীয়ত, শ্রম আইন কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে, যেন মালিকপক্ষ শ্রমিকদের অধিকার হরণ করতে না পারে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়, তাহলে চা শ্রমিকদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে। সেটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্যও ইতিবাচক হবে।

জাফরিন সুলতানা

শিক্ষার্থী, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ওয়াশিংটনে আলোচনার পর শুল্ক কমতে পারে, আশা অর্থ উপদেষ্টার

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পরে শুল্ক কমে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) সচিবালয়ে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ বিষয়ে মন্তব্য করেন। 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত ৩৫ শতাংশ শুল্ক এখনো চূড়ান্ত নয়, ওয়ান-টু-ওয়ান আলোচনার মাধ্যমেই বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। এ লক্ষ্যে আগামীকাল ভোরে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের  সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের বাণিজ্য উপদেষ্টা ৩ দিন আগে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন। আজই বাংলাদেশের কমার্স টিমও রওনা দিচ্ছে। আগামীকাল সকালে বৈঠক। বৈঠকের পর বোঝা যাবে বিষয়টি কোন পর্যায়ে আছে।” 

তিনি আরো বলেন, “এই যে প্রেসিডেন্টের চিঠি এসেছে, এটি এখনো অফিসিয়ালভাবে চূড়ান্ত নয়। ওয়ান-টু-ওয়ান আলোচনা হবে, তারপরই সিদ্ধান্ত হবে। এটি শুধু আমাদের নয়, ১৪টি দেশকে একই ধরনের চিঠি দেওয়া হয়েছে।” 

ভিয়েতনামের সঙ্গে তুলনায় বাংলাদেশের মাত্র ২ শতাংশ শুল্ক হ্রাস পাওয়া নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি অনেক বেশি— ১২৫ বিলিয়ন ডলার, যেখানে আমাদের মাত্র ৫ বিলিয়ন। তাই তারা বেশি ছাড় পেয়েছে। আমাদের চেষ্টা থাকবে যুক্তি দেখিয়ে কম শুল্ক আদায়ে সফল হওয়া।”

তিনি আরো জানান, ৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, যা মোটামুটি ইতিবাচক ছিল বলে জানা গেছে। আগামীকালকের বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন নেতৃত্ব দেবেন।

চিঠিতে উল্লিখিত শর্তগুলো পূরণ করা সম্ভব কিনা জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা সরাসরি মন্তব্য না করলেও বলেন, আলোচনা শেষে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

রাজস্ব আদায় প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “চলতি অর্থবছরের রাজস্ব আহরণ মোটামুটি সন্তোষজনক। আগামী বছর শুধু ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়িয়ে নয়, পুরো সিস্টেম পরিবর্তনের মাধ্যমে রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। আমাদের ট্যাক্স ক্যাপাসিটি ভালো, কিন্তু তা এখনো পুরোপুরি কাজে লাগানো যায়নি।”

ঢাকা/ হাসনাত/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ