পরিবেশদূষণ রোধে জ্বালানিসাশ্রয়ী চীনের বৈদ্যুতিক বাইক সংযোজন করে বাজারজাত করবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) নিয়ন্ত্রণাধীন এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড (এবিএল)। আগামী আগস্ট থেকে বৈদ্যুতিক বাইকগুলো বাজারজাত করা হবে। এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল করপোরেশনের (বিএসইসি) সম্মেলনকক্ষে এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড ও গ্লোবাল ইলেকট্রিক স্কুটার ও বাইক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ঝেজিয়াং লুয়ান ইলেকট্রিক ভেহিকেল কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর হয়েছে।

অনুষ্ঠানে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো.

নূরুজ্জামান বলেন, চীনের ঝেজিয়াং লুয়ান ইলেকট্রিক ভেহিকেল কোম্পানির সঙ্গে সমঝোতা স্বাক্ষর সম্পাদনের মাধ্যমে এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের দীর্ঘদিনের ব্র্যান্ড–সংকট দূর হলো। এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের কারখানায় সংযোজিত জ্বালানিসাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব এটলাস এভি ব্র্যান্ডের বৈদ্যুতিক বাইক সাশ্রয়ী মূল্যে কেনা যাবে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মু. আনোয়ারুল আলম বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব ও জ্বালানিসাশ্রয়ী হওয়ায় বর্তমানে বিশ্বব্যাপী বৈদ্যুতিক যানবাহনের চাহিদা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই ভবিষ্যৎ চাহিদার কথা বিবেচনা করে এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড নিজস্ব নামে বৈদ্যুতিক স্কুটার ও বাইক সংযোজনের যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা অত্যন্ত সময়োপযোগী। আমি আশা করছি, এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেড গুণগত মানসম্পন্ন ইলেকট্রিক স্কুটার ও বাইক সংযোজন ও উৎপাদনের মাধ্যমে আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে দেশীয় শিল্পের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম হবে।’

এটলাস বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আজিবর রহমান বলেন, ঝেজিয়াং লুয়ান ইলেকট্রিক ভেহিকেল কোম্পানি লিমিটেডের কারিগরি সহযোগিতায় প্রথম ধাপে এটলাস এভি ব্র্যান্ডের এস–১০০, এস–৯০, এস–৮০ ও এস–৭০ এই চার মডেলের বৈদ্যুতিক বাইকের উৎপাদন ও বিপণন কার্যক্রম শুরু হবে, যা পরবর্তী সময়ে পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে। আকর্ষণীয় সুবিধা থাকায় প্রতিটি মডেলই ক্রেতাদের প্রত্যাশা পূরণে সক্ষম হবে। গ্রাফিন ব্যাটারি থাকায় প্রতিটি বাইকই একবার চার্জে মাত্র ১৫ টাকা বিদ্যুৎ খরচে ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার চালানো যাবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রাষ্ট্রায়ত্ত করপোরেশন) এম এ কামাল বিল্লাহ, বিএসইসির পরিচালক মো. ওসমান গনি, মো. মঞ্জুরুল হাফিজ, বিশ্বাস রাসেল হোসেন, মো. বেলাল হোসেনসহ ঝেজিয়াং লুয়ান ইলেকট্রিক ভেহিকেল কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক ডেনিয়েল ইউসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এসইস

এছাড়াও পড়ুন:

পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসা ভিনগ্রহের বস্তু নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইলন মাস্ক

গত জুলাই মাসে শনাক্ত হওয়া রহস্যময় ‘৩আই/অ্যাটলাস’ নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুর পরিচয় নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। আমাদের সৌরজগতের মধ্যে থাকা বস্তুটি এমন আচরণ করছে, যা বিজ্ঞানীরা আগে কখনো দেখেননি। কারও ধারণা এটি ধূমকেতু, আবার কারও মতে ভিনগ্রহ থেকে আসা মহাকাশযান। উৎস ও পরিচয় সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে না পারলেও বস্তুটি পৃথিবীর জন্য কোনো হুমকি নয় বলে ধারণা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী অভি লোব অভিযোগ করেছেন, নাসা বস্তুটির বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করছে। বিশাল আকারের অতিদ্রুতগামী মহাজাগতিক বস্তুটি অস্বাভাবিক রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করছে, যা বিজ্ঞানের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। অনেকের ধারণা, ৩আই/অ্যাটলাস কোনো কৃত্রিম উৎস থেকে তৈরি হতে পারে। এবার এই বিতর্কে নাম লিখিয়েছেন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ইলন মাস্ক।

জনপ্রিয় মার্কিন পডকাস্ট দ্য জো রোগান এক্সপেরিয়েন্সে ইলন মাস্ক ৩আই/অ্যাটলাস নামের আন্তনাক্ষত্রিক বস্তু সম্পর্কে নিজের ভাবনা প্রকাশ করেছেন। বস্তুটি কোনো ভিনগ্রহের মহাকাশযান হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে ইলন মাস্ক বলেন, ‘আপনি যদি এটিকে সম্পূর্ণ নিকেল দিয়ে তৈরি করেন, তবে তা হবে একটি অত্যন্ত ভারী মহাকাশযান। এটি এমন একটি যান হতে পারে, যা একটি মহাদেশকে নিশ্চিহ্ন করে দিতে পারে। তার চেয়েও খারাপ কিছু ঘটাতে পারে। যদি আমি ভিনগ্রহের কোনো প্রমাণ সম্পর্কে জানতে পারি, তাহলে কথা দিচ্ছি আপনার অনুষ্ঠানে আসব। আর এখানেই তা প্রকাশ করব।’

অভি লোবের দাবি, আন্তনাক্ষত্রিক বস্তুটি পৃথিবীর ওপর নজরদারি করতে পাঠানো ভিনগ্রহের কোনো মহাকাশযান হতে পারে। অস্বাভাবিক লেজযুক্ত বস্তুটি প্রতি সেকেন্ডে চার গ্রাম নিকেল নিঃসরণ করছে; যদিও সেখানে কোনো লোহার উপস্থিতি নেই। ধূমকেতুর ক্ষেত্রে এমন আচরণ আগে দেখা যায়নি।

জো রোগান তাঁর আলোচনায় ধূমকেতুর রহস্যময় বৈশিষ্ট্যের ওপর জোর দেন। ধূমকেতুর গ্যাসের মেঘে নিকেলের উপস্থিতি উল্লেখ করেন। এই ধাতু পৃথিবীতে প্রধানত শিল্পক্ষেত্রে ব্যবহৃত সংকর ধাতুতে পাওয়া যায়। অন্যদিকে ইলন মাস্ক নিকেলের উপস্থিতির একটি পার্থিব ব্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, অনেক ধূমকেতু ও গ্রহাণু প্রাথমিকভাবে নিকেল দিয়ে তৈরি। পৃথিবীতে যেখানে নিকেলখনি দেখা যায়, সেখানে আসলে অতীতে নিকেলসমৃদ্ধ কোনো গ্রহাণু বা ধূমকেতু আঘাত করেছিল।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ