যা লেখা আছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ছাত্র হৃদয় তরুয়ার ফলাফল বিবরণীতে
Published: 22nd, May 2025 GMT
সদ্য পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষার্থীরাও উৎসাহ নিয়ে একে একে খুঁজে বেড়াচ্ছেন নিজেদের ফলাফল বিবরণী (গ্রেডশিট)। পাতা ওল্টাতেই চোখ আটকাল একটি নামে, গ্রেডশিটের নিচে এক কোণে ইংরেজিতে লেখা, ‘হি স্যাক্রিফাইস হিজ লাইভস ইন অ্যান্টি–ডিসক্রিমিনেশন স্টুডেন্ট মুভমেন্ট’ (বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছে)।
ঘটনাটি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের। গতকাল বুধবার ওই বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। শহীদ হৃদয় চন্দ্র তরুয়া ওই শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তবে পরীক্ষা দেওয়ার আগেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে প্রাণ হারান তিনি। বেঁচে থাকলে হৃদয়ও পরীক্ষা দিতেন। ফল প্রকাশের দিনটিতে আগ্রহভরে নিজের গ্রেডশিট দেখতেন। পরীক্ষায় না বসলেও তাঁর স্মরণে বিশেষ গ্রেডশিট তৈরি করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর এর মধ্য দিয়ে সম্মান জানানো হয়েছে জুলাই আন্দোলনের এই শহীদকে।
পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার দরিদ্র পরিবারের ছেলে হৃদয়। বাবা রতন চন্দ্র তরুয়া পেশায় কাঠমিস্ত্রি। গত বছরের ১৮ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলনে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন হৃদয়। পরে ২৩ জুলাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কাছে হার মানেন।
ইতিহাস বিভাগের তৃতীয় বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষাটি শুরু হয়েছিল গত বছরের ৫ নভেম্বর, হৃদয়ের মৃত্যুর সাড়ে তিন মাস পর। আটটি কোর্সের ওই বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয় ২২ ডিসেম্বর। পরীক্ষা দেননি বলে গ্রেডশিটে সব পরীক্ষায় তাঁর নম্বর এসেছে শূন্য।
গতকাল রাত থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হৃদয়ের পরীক্ষার ওই ফলাফলের গ্রেডশিট ছড়িয়ে পড়েছে। অনেকেই হৃদয়ের এই ত্যাগ নিয়ে বিভিন্ন আবেগঘন পোস্ট দিচ্ছেন।
হৃদয় চন্দ্র তরুয়ার গ্রেড শিট.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ বর ষ র ফল ফল
এছাড়াও পড়ুন:
চা–বাগানের ৩৪ শতাংশ নারী শ্রমিক যৌন নির্যাতনের শিকার: গবেষণা
চা–বাগানে কাজ করা দেশের ৩৪ দশমিক ৮ শতাংশ নারী শ্রমিক কর্মস্থলে যৌন নির্যাতনের শিকার হন। ৩০ শতাংশ নারী শ্রমিক মৌখিক এবং ১৪ শতাংশ নারী শ্রমিক শারীরিক নির্যাতনের (গৃহে নির্যাতনসহ) শিকার হন।
সম্প্রতি পরিচালিত ‘নারী চা–শ্রমিকদের অধিকার, সেবাপ্রাপ্তিতে প্রবেশগম্যতা: বাস্তবতা ও আইনগত প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফলে এ চিত্র উঠে এসেছে। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় গবেষণার ফলাফল তুলে ধরা হয়।
‘অক্সফাম ইন বাংলাদেশের’ সহযোগিতায় ‘ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স’ সংগঠনের অধীন সিলেট বিভাগের ৩টি জেলার ১১টি উপজেলায় ‘স্ট্রেনদেনিং ইউমেন ভয়েসেস ইন টি গার্ডেন’ প্রকল্পের আওতায় এ গবেষণা করা হয়। প্রকল্পটি ২০২৪ সালের অক্টোবর মাস থেকে বাস্তবায়িত হচ্ছে। বেসরকারি ইনোভেটিভ রিসার্চ অ্যান্ড কনসালট্যান্সি (আইআরসি) এ গবেষণা পরিচালনা করে। সংস্থাটির লিড কনসালট্যান্ট পলিন কুমার সাহা গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন করেন।
গবেষণার ফলাফলে বলা হয়, ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ নারী কর্মক্ষেত্রকে নিরাপদ মনে করেন না। চা–বাগানে কাজ করা নারী শ্রমিকদের মধ্যে ১৬ দশমিক ১ শতাংশ সহিংসতার কারণে, ১২ দশমিক ৩ শতাংশ মালিকের কাছ থেকে হুমকি, ৮ দশমিক ২ শতাংশ অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ, ৪ দশমিক ১ শতাংশ চুরি এবং বাকিরা অন্যান্য কারণে কর্মক্ষেত্রকে অনিরাপদ মনে করেন।
৩৭ দশমিক ৭ শতাংশ নারী এসব ঘটনার প্রতিবাদ করেন বলে জানিয়েছেন গবেষণায় অংশ নেওয়া নারী শ্রমিকেরা।
গবেষণায় অংশ নেওয়া সিলেট অঞ্চলের বিভিন্ন চা–বাগানে কাজ করা ৩ শতাধিক নারী শ্রমিকের মধ্যে ২৩ জন তাঁদের ওপর হওয়া অপরাধগুলোর প্রকারভেদ বিস্তারিত জানিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৯৫ দশমিক ৭ শতাংশ নারী অশ্লীল বা অপমানজনক কথা ও অঙ্গভঙ্গির শিকার হয়েছেন, এ ছাড়া ৩০ দশমিক ৪ শতাংশ অনাকাঙ্ক্ষিত স্পর্শ, ২৬ দশমিক ১ শতাংশ যৌন হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং ১৭ দশমিক ৪ শতাংশ নারী শ্রমিক অন্যান্য নির্যাতনের শিকার হওয়ার তথ্য জানিয়েছেন।
গবেষণার ফলাফল উপস্থাপন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চা–শ্রমিকেরা। ঢাকা, ২২ মে