চলছে বর্ষাকাল। এই সময়ে বৃষ্টি, মেঘ আর ঠান্ডা হাওয়ায় প্রকৃতি যেন নিজের রঙে ফিরে আসে। এ সময়টা শুধু মানুষ নয়, গাছেদের জন্যও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বৃষ্টি মানে প্রাকৃতিক পানির জোগান, ঠান্ডা পরিবেশ আর আর্দ্র মাটি। তাই গাছপালা স্বাভাবিকভাবেই বেড়ে ওঠে এ মৌসুমে। কিন্তু সঠিক পরিচর্যার অভাবে বর্ষা অনেক সময় গাছের জন্য আশীর্বাদ নয়, বরং অভিশাপও হয়ে উঠতে পারে। অতিরিক্ত পানি জমে শিকড় পচে যাওয়া, ছত্রাক বা কীটপতঙ্গের আক্রমণ, পাতায় দাগ কিংবা ফুল না ফোটা সবই হতে পারে এ মৌসুমের নেতিবাচক প্রভাব। তাই বর্ষায় গাছের যত্ন নেওয়া শুধু শখ নয়, বরং সচেতনতার অংশ। 
পানি নয়, ড্রেনেজে গুরুত্ব দিন: বর্ষায় গাছে আলাদাভাবে পানি দেওয়ার প্রয়োজন খুব একটা নেই। কিন্তু ঝামেলা শুরু হয় অতিরিক্ত পানির কারণে। অনেক সময় টব বা বাগানে পানি জমে গিয়ে শিকড় পচে গিয়ে গাছ মরে যায়।
তাই প্রতিটি টবে যেন পানি নিষ্কাশনের জন্য উপযুক্ত ছিদ্র থাকে, তা নিশ্চিত করুন। প্রয়োজনে টবের নিচে ইট বা স্ট্যান্ড ব্যবহার করুন; যাতে পানি জমে না থাকে। ছাদবাগানে ড্রেন পরিষ্কার রাখা অত্যন্ত জরুরি।
মাটি ঝুরঝুরে রাখুন: বর্ষার পানিতে মাটি শক্ত হয়ে গেলে শিকড় পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না। এতে গাছের বৃদ্ধি থেমে যেতে পারে। তাই টবের ওপরের মাটি মাঝেমধ্যে নরম করে দিন। 
ছত্রাক ও পোকামাকড়ের হাত থেকে বাঁচুন: বর্ষাকালে বাতাস ও মাটির অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে গাছে ছত্রাক (ফাঙ্গাস) দেখা দিতে পারে। প্রতিরোধে ব্যবহার করতে পারেন নিম তেল স্প্রে (সপ্তাহে ১-২ বার), রসুন-লঙ্কার জৈব স্প্রে, পোকা ধরার হলুদ স্টিকার ট্র্যাপ।
এ ছাড়া আক্রান্ত পাতা কেটে ফেলে দিন; যাতে তা অন্য পাতায় ছড়াতে না পারে।
দমকা হাওয়া থেকে সুরক্ষা: বর্ষায় হঠাৎ ঝোড়ো বা দমকা হাওয়া বইতে পারে, যা টবের গাছ ফেলে দিতে পারে বা ডাল ভেঙে যেতে পারে। ছোট গাছ বা কোমল চারাগুলো দেয়ালের পাশে রাখা ভালো। চাইলে বাঁশের খুঁটি দিয়ে গাছ বেঁধে রাখতে পারেন; যাতে সাপোর্ট পায়। 
গাছের ধরন বুঝে যত্ন নিন: সব গাছ একরকম নয়। বর্ষায় কিছু গাছ যেমন মানিপ্লান্ট, তুলসী, নিম, কলকা, পাথরকুচি, স্নেক প্লান্ট, অ্যারো হেড, ঘৃতকুমারী (অ্যালোভেরা) ইত্যাদি দ্রুত বাড়ে। কিন্তু ক্যাকটাস বা সাকুলেন্ট জাতীয় গাছগুলো খুব বেশি পানি সহ্য করতে পারে না। এগুলোকে ছাদ বা বারান্দার এমন জায়গায় রাখতে হবে, যেখানে সরাসরি বৃষ্টির পানি পড়ে না।
নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন: বর্ষাকালে প্রতিদিন অন্তত একবার গাছের দিকে নজর দিন। মাটি বেশি ভেজা কিনা, পাতায় দাগ উঠেছে কিনা, টবের নিচে পানি জমে আছে কিনা– এসব ছোট বিষয়ই বড় বিপদ এড়াতে সাহায্য করে।
পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখুন: গাছের আশপাশ পরিষ্কার রাখুন। শুকনো পাতা, আগাছা বা অতিরিক্ত পানি জমে থাকা জায়গা নিয়মিত পরিষ্কার করলে ছত্রাক বা মশার উপদ্রবও কমে যায়। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বর ষ য়

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ