তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী হত্যা ও বিচারহীনতার ১৪৮ মাস উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর মিলনায়তন প্রাঙ্গণে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট আলোক প্রজ্বালন কর্মসূচির আয়োজন করে।

সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল ইসলাম কাজলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ধীমান সাহা জুয়েলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ত্বকীর পিতা রফিউর রাব্বি, শিশু সংগঠক রথীন চক্রবর্তী, নারায়ণগঞ্জ নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল হক দীপু, ন্যাপ জেলা সাধারণ সম্পাদক এড.

আওলাদ হোসেন, গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, সিপিবির শহর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুজয় রায় চৌধুরী, বাসদ জেলা সদস্য প্রদীপ সরকার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সভাপতি মাহমুদ হোসেন ও সামাজিক সংগঠন সমমনার সাবেক সভাপতি দুলাল সাহা।

রফিউর রাব্বি বলেন, শেখ হাসিনা দেশের বিচার ব্যবস্থাকে যে ভাবে ধ্বংস করে সরকার নিয়ন্ত্রিত করে রেখেগেছে তা, এখনো স্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি। তার দলের দুর্বৃত্ত, মাফিয়া, গডফাদারদের হাতে জিম্মি হয়েছিল সারা দেশের জনগণ। তার নির্দেশে সাড়ে এগার বছর ত্বকী হত্যার বিচার বন্ধ করে রাখা হয়েছে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী কালীন সরকার বিচার প্রক্রিয়া আবার শুরু করলেও তাতে এখনো পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয় নি। নারায়ণগঞ্জে ত্বকী সহ বহু হত্যায় অভিযুক্ত শামীম ওসমান পরিবার সহ পালিয়ে গেলেও তাদের দুর্বৃত্ত-সন্ত্রাসীচক্র আজকে বিএনপির বিভিন্ন দলে, গ্রুপে যুক্ত হয়েছে। নতুন করে দুর্বৃত্ত, মাফিয়া, গডফাদার তৈরি হচ্ছে।

হাট-বাজার, ঘাট, পরিবহন, প্রতিটি ক্ষেত্র নতুন করে দখলে গিয়েছে। অভ্যুত্থান উত্তর বাংলাদেশে জন-আকাঙ্খা অনুযায়ী এখনো বদল ঘটেনি। সরকার মব সৃষ্টিকারী দুর্বৃত্তদের নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে।

রফিউর রাব্বি বলেন, যারা ত্বকীকে হত্যা করেছে সেই শামীম ওসমান, তার ছেলে অয়ন ওসমান, ভাতিজা আজমেরী ওসমান, সন্ত্রসী শাহ নিজাম- তারাই গত জুলাইয়ে আন্দোলনকারী ছাত্র-শিশুদের উপর গুলি চালিয়েছে। তিনি ত্বকী, সাগর-রুনী, তুন সহ নারায়ণগঞ্জের সকর হত্যার দ্রুত বিচার দাবি করেন।    

সমাবেশে বক্তারা বলেন, আগে শেখ হাসিনা ছিলেন ত্বকী হত্যার বিচারের জন্য মূল বাধা, কিন্তু এখন বাধাটা কোথায়? এখনো ওসমার পরিবারের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় বহাল থেকে কাজ করে যাচ্ছে। সকল বক্তা ত্বকী হত্যার নির্দেশদাতা শামীম ওসমান সহ সকল ঘাতকদের আইনের আওতায় এনে দ্রুত অভিযোপত্র প্রদানের জন্য অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের কাছ দাবি জানান।  

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ রোডের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। দু’দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

ওই বছরের ১২ নভেম্বর আজমেরী ওসমানের সহযোগী সুলতান শওকত ভ্রমর আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীতে জানায়, আজমেরী ওসমানের নেতৃত্বে ত্বকীকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।

৫ মার্চ ২০১৪ তদন্তকারী সংস্থা র‌্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে তাদেরই টর্চারসেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তারা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সে অভিযোগপত্র আজো পেশ করা হয় নাই।

ত্বকী হত্যার পর থেকে বিচার শুরু ও চিহ্নিত আসামীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে প্রতি মাসের ৮ তারিখ আলোক প্রজ্বালন সহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে নারায়ণগঞ্জ সাংস্কৃতিক জোট। 
 

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: হত য ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ হত য র ওসম ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকায় বের হয়েছে তাজিয়া মিছিল

আজ ১০ মহররম, পবিত্র আশুরা। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে দিনটি শোকের। ৬১ হিজরির এই দিনে ফোরাত নদী-তীরবর্তী কারবালার ময়দানে শহীদ হন মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসেন (রা.)। শোকের দিন পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাজধানীর পুরান ঢাকায় তাজিয়া মিছিল বের করেছেন শিয়া মুসলিমরা। আজ রোববার সকাল ১০টায় হোসাইনী দালান ইমামবাড়া থেকে ১০ মহররমের প্রধান তাজিয়া মিছিল বের হয়েছে।

হোসাইনী দালান ইমামবাড়ার সুপারিনটেনডেন্ট এম.এম. ফিরোজ হোসেন জানান, তাজিয়া মিছিলটি সাজানো হয়েছে সামনে কালো ব্যানার, বেহেস্তা (লাল-সবুজ নিশান), পাঞ্জা আলম মাতম, দুলদুল ঘোড়া, খুনি ঘোড়া ও একটি জারি তাজিয়া দিয়ে।

মিছিলটি হোসাইনী দালান ইমামবাড়া উত্তর গেট থেকে বের হয়ে হোসাইনী দালান রোড, বকশীবাজার লেন, আলিয়া মাদ্রাসা রোড, বকশীবাজার (কলপাড়) মোড়, উমেশ দত্ত রোড, উর্দু রোড মোড়, হরনাথ ঘোষ রোড, লালবাড় চৌরাস্তা মোড়, গোর-এ-শহীদ মাজার মোড়, এতিমখানা মোড়, আজিমপুর চৌরাস্তা মোড়, ইডেন কলেজ, নীলক্ষেত মোড়, মিরপুর রোড, ঢাকা কলেজ, সায়েন্সল্যাব মোড়, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ২নং রোড, বিজিবি ৪নং গেট, সাত মসজিদ রোড (ঝিগাতলা বাসস্ট্যান্ড) হয়ে দুপুর আড়াইটার দিকে ধানমন্ডি লেকে (অস্থায়ী কারবালা) গিয়ে শেষ হবে।

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকার হোসনে দালান থেকে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়েছে। শনিবার মাগরিবের নামাজের পর থেকে খুতবা পাঠ ও আশুরার তাৎপর্য নিয়ে বয়ান করা হয়েছে। এদিন দিনব্যাপী দোয়া মোনাজাত, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রা.) গিলাবে (প্রতীকী) সম্মান প্রদর্শন করেন ভক্ত অনুরাগীরা। এছাড়া বিশেষ ফজিলতের আশায় অনেক ধর্মপ্রাণ মুসলমান রোজা পালন করেছেন।

এর আগে, গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রথম মিছিল বের হয়। আর শনিবার রাত ২টায় হোসাইনী দালান থেকে দ্বিতীয় মিছিল বের হয়।

এদিকে, রাজধানীর হোসাইনী দালান ইমামবাড়া ছাড়াও বড় কাটরা, মোহাম্মদপুর বিহারী ক্যাম্প, শিয়া মসজিদ, বিবিকা রওজা, মিরপুর পল্লবী বিহারী ক্যাম্পসহ অন্যান্য স্থান যেখানে ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্যের সাথে পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একুশ বছরে বাতিঘর, উৎসবে সাজবে কাল
  • হিলি স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু 
  • শিক্ষকদের ভূমিকা থেকে আমরা বিচ্যুত হয়েছি: শিক্ষা উপদেষ্টা
  • উপাচার্যরা দায়িত্ব চেয়ে নেননি, হাতে-পায়ে ধরে তাদের দায়িত্ব দিয়েছি
  • আশুরায় বেনাপোল বন্দরে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ
  • চট্টগ্রামে আশুরায় তাজিয়া মিছিল, ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ মাতম
  • হোসেনি দালান থেকে শুরু হয়েছে তাজিয়া মিছিল
  • রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে ‘জুলাই চত্বর’ ও ‘জুলাই কর্নার’, হলে বিশেষ ভোজ ‘বিজয় ফিস্ট’
  • আশুরা উপলক্ষে পুরান ঢাকায় বের হয়েছে তাজিয়া মিছিল