বড়পুকুরিয়ায় পরিত্যক্ত ডেটোনেটর বিস্ফোরণে কবজি উড়ে গেল শিশুর
Published: 9th, July 2025 GMT
দিনাজপুরের ফুলবাড়ীর বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির পরিত্যক্ত ডেটোনেটর বিস্ফোরণে এক শিশুর ডান হাতের কবজি উড়ে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে। আহত শিশুর নাম ইলিয়াস হোসেন (১০)। সে কয়লা খনি-সংলগ্ন চৌহাটি গ্রামের আশরাফুল ইসলামের ছেলে।
জানা যায়, গতকাল দুপুরে কয়লা খনির ডাম্পিং এলাকা থেকে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী ইলিয়াস একটি ধাতব বস্তু পেয়ে খেলতে খেলতে তা বাড়িতে নিয়ে আসে। এরপর মোবাইল ফোনের নষ্ট ব্যাটারির সঙ্গে সংযোগ দিলে হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে ইলিয়াসের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাকে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আহত শিশুর বাবা আশরাফুল ইসলাম বলেন, ইলিয়াস খনির পাশ থেকে ওই ধাতব জিনিসটি কুড়িয়ে এনে বাড়িতে খেলছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ শুনে গিয়ে দেখি আমার ছেলের ডান হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে কাতরাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়লা খনির পূর্ব পাশে প্রাচীর ঘেঁষে কাঁটাতার দিয়ে ঘেরা ডাম্পিং এরিয়া রয়েছে। সেখানে খনির বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য ফেলা হয়। এলাকার লোকজন সেখানে ঢুকে এসব বর্জ্য থেকে কয়লা সংগ্রহ করে বিক্রি করে। এসব বর্জ্যের সঙ্গে মাঝেমধ্যে বিস্ফোরক ডিভাইসও মেলে। অনেক সময় শিশুরা এগুলো বাড়িতে নিয়ে খেলা করে।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির এক শ্রমিক জানান, খনির ভূগর্ভে যেসব স্থানে মেশিন দিয়ে কয়লা কাটা সম্ভব হয় না, সেখানে এসব ডেটোনেটর স্থাপন করে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে কয়লা সংগ্রহ করা হয়। এ ক্ষেত্রে ৫০ মিটার দূরত্ব বজায় রাখতে হয়।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয়রা বলছেন, খনি কর্তৃপক্ষের অসতর্কতার কারণেই এমন ঘটনা ঘটেছে। এমন দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে সেজন্য খনির ব্যবহৃত বিস্ফোরক উপাদান ও পরিত্যক্ত দ্রব্য অপসারণে প্রশাসনের আরও সাবধান হওয়া উচিত।
বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির মহাব্যবস্থাপক (মাইন অপারেশন) খান মো.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
দেশে প্রথম পুনর্ব্যবহারযোগ্য ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড এনেছে মেঘনা ব্যাংক
দেশে প্রথম পুনর্ব্যবহারযোগ্য (রিসাইকেলড) প্লাস্টিকের তৈরি ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড সেবা চালু করেছে মেঘনা ব্যাংক। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে মেঘনা ব্যাংক মোট দুই ধরনের ভিসা প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড বাজারে এনেছে। একটি হলো গ্রিন প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড ও অন্যটি উইমেন প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড।
নতুন এই উদ্যোগে একজন গ্রিন প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ডধারী বছরে দুই লাখ টাকার বেশি সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। অন্যদিকে উইমেন প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারী একজন নারী গ্রাহক বছরে এক লাখ টাকার বেশি সুবিধা পাবেন।
মেঘনা ব্যাংক জানায়, প্রচলিত কার্ডের তুলনায় ১০০ শতাংশ পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপাদানে তৈরি এসব কার্ড উৎপাদনের ফলে পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব কমেছে। কার্ড এনভায়রনমেন্টাল ক্যালকুলেটর অনুযায়ী, এ ধরনের কার্ড উৎপাদনে শক্তির ব্যবহার ৪১ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া কার্ড উৎপাদনে যেসব বর্জ্য হয়, তা–ও পুনরায় কার্ড তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। কার্ড তৈরিতে হ্যালোজেন উপাদানের ব্যবহারও ৫২ শতাংশ কমেছে।
যেসব সুবিধা পাওয়া যাবেমেঘনা ব্যাংকের এই দুই ধরনের ক্রেডিট কার্ডধারীরা সাধারণ ব্যাংকিং সেবার বাইরে বিভিন্ন লাইফস্টাইল ব্র্যান্ডে সুবিধা ও ক্যাশব্যাক অফার পাবেন। এর পাশাপাশি ভ্রমণে বিভিন্ন হোটেল ও রিসোর্টে নানা সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
গ্রিন প্লাটিনাম ক্রেডিট কার্ড ব্যবহারকারীরা দ্য প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট, মারমেইড ইকো রিসোর্ট, রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম, ভাওয়াল রিসোর্ট অ্যান্ড স্পা, ফোর্টিস ডাউনটাউন রিসোর্ট, গ্র্যান্ড রিভার ভিউ হোটেল ও রিসোর্টে এক রাত থাকলে আরেক রাত ফ্রিতে থাকা যাবে।
এ ছাড়া আড়ং, যাত্রা বাংলাদেশ, নর্থ অ্যান্ড কফি রোস্টার্স, যাত্রাবিরতি, রুয়েন বুসাবা, বান বুসাবা, ভল্ট ঢাকা, হারলান, টাইম জোন, ব্র্যাক নার্সারি ও গ্রিন লাইন পরিবহনে গ্রিন প্লাটিনাম কার্ডধারীরা ৪৩ হাজার ও উইমেন প্লাটিনামে ৩৭ হাজার পর্যন্ত ক্যাশব্যাক সুবিধা পাবেন।
এই দুই ধরনের ক্রেডিট কার্ডধারীরা পাঁচ তারকা হোটেলে একটি খাবার কিনলে আরেকটি খাবার ফ্রি পাবেন। সেই সঙ্গে ভ্রমণে শেয়ারট্রিপ ও ওয়ান্ডার ওম্যানে ছয় মাস পর্যন্ত শূন্য শতাংশ ইএমআই সুবিধা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরসহ বিশ্বের দেড় হাজারের বেশি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের লাউঞ্জে নানা সেবা পাবে মেঘনা ব্যাংকের কার্ডধারীরা। এসব কার্ড ব্যবহারে জুয়েলারি, ফিটনেস, প্রসাধনী ও স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ছাড় পাওয়া যাবে।
মেঘনা ব্যাংকের ব্যস্থাপনা পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. সাদিকুর রহমান বলেন, ‘গ্রাহক ও পরিবেশের জন্য দায়িত্বশীল উদ্ভাবন আমাদের মূল লক্ষ্য। দীর্ঘমেয়াদি টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য মেঘনা ব্যাংক পরিবেশবান্ধব ব্যাংকিং কার্যক্রমে পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তা বুঝতে পেরেছে। দেশে প্রথম শতভাগ রিসাইকেলড প্লাস্টিক কার্ড চালু করা টেকসই ব্যাংকিংয়ের পথে আমাদের সাহসী পদক্ষেপ। এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য দায়িত্বশীল ও গ্রিন ইকোনমি গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।’
যেভাবে আবেদন করা যাবেগ্রাহকেরা এই নতুন কার্ডের জন্য মেঘনা ব্যাংকের কল সেন্টারে কলের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন। এ ছাড়া অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে অথবা যেকোনো মেঘনা ব্যাংক শাখায় গিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য ও কাগজ দিয়ে এই কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবে।
মেঘনা ব্যাংকের হেড অব কার্ডস মোকছেদুর রহমান বলেন, ‘গ্রিন প্ল্যাটিনাম ও উইমেন প্ল্যাটিনাম কার্ড কেবল প্রিমিয়াম সুবিধা নয়। এর মাধ্যমে গ্রাহকদের গ্রিন ভবিষ্যতে অবদান রাখার সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা রয়েছে। আমাদের লক্ষ্য বিশ্বমানের সেবা দেওয়ার পাশাপাশি দেশে গ্রিন ব্যাংকিং সংস্কৃতি গড়ে তোলা।’