মাত্র ক’টি বই আর সীমিত পুঁজি নিয়ে শুরুটা হয়েছিল ২০০৫ সালের ১৭ জুন। চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড়ের মোড়ে একটি ঘরে যাত্রা শুরু করা বাতিঘর একে একে পেরিয়ে গেছে ২০ বছর। সেই ক্ষুদ্র পরিসরের স্বপ্ন আজ একুশ বছরে পা রেখেছে। বাতিঘর এখন শুধু একটি বইয়ের দোকান নয়; এ এক মনন ও সৃজনশীলতার আলোকদ্যুতি, পাঠকের ভালোবাসার ঠিকানা।
এই দীর্ঘ পথচলার গৌরব উদযাপনে গতকাল মঙ্গলবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে আয়োজন করা হয় ‘আলাপ, আড্ডা, আবৃত্তি ও গান’-এর। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া উপেক্ষা করে জড়ো হতে থাকে বইপাগল মানুষ। লেখক, পাঠক, শিল্পী, সাংবাদিক ও শুভানুধ্যায়ীদের মিলনে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানটি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, পণ্য হিসেবে বইয়ের বিক্রি অনেক বেশি না। তবে বইবিক্রেতা হিসেবে বাতিঘরের টিকে থাকা তো মননশীলতা-সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে অনেক বেশি আশাজাগানিয়া ঘটনা।
বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, বাংলাদেশে বইয়ের ব্যবসায় এখন দ্বিতীয় প্রজন্ম চলছে। বাতিঘর দ্বিতীয় প্রজন্মের বই ব্যবসায় নেতৃত্ব দিচ্ছে। বইয়ের দোকানও যে আকর্ষণীয় ও দর্শনীয় হতে পারে, তার একটা দৃষ্টান্ত ও মানদণ্ড তৈরি করে দিয়েছে বাতিঘর।
বইয়ের বিক্রি কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বই কতজন পড়ল, সেটি বড় বিষয় নয়। বড় বিষয় হচ্ছে, যারা বই পড়ে, তারাই দেশ-সমাজ-রাষ্ট্রকে এগিয়ে নেওয়ার কাজটা করতে পারে।
অনুষ্ঠানে বুদ্ধিজীবী বদরুদ্দীন উমর বলেন, প্রকাশক বাতিঘর অনেক ভালো বই প্রকাশ করেছে। পরেও নিশ্চয় করবে। কিন্তু বাংলা সাহিত্যকে বিকশিত করার জন্য অনুবাদের দিকে মনোযোগ দেওয়া দরকার। অনেক আগেই করা দরকার ছিল। বাতিঘরের মতো প্রকাশকরা অনুবাদে গুরুত্ব দিলে আগামী প্রজন্ম উপকৃত হবে।
পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ শুভেচ্ছাবার্তায় বলেন, বাতিঘর একটি সৃজনশীল প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। দেশের বড় শহরগুলোর সুসজ্জিত বই বিক্রয়কেন্দ্রগুলোতেও এ সৃজনশীলতার পরিচয় মেলে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, লেখক আনিসুল হক, অধ্যাপক মনসুর মুসা, সাহিত্যিক মোহিত কামাল, বাদল সৈয়দ, আলতাফ পারভেজ, আফসানা বেগম, শিল্পী শাহীনুর রহমান, সাংবাদিক দীপ্তি চৌধুরীসহ অনেকে। সন্ধ্যার আয়োজন ছিল গান ও আবৃত্তিতে পূর্ণ। ওয়ারদা আশরাফ, দীপংকর দে, গার্গী ঘোষসহ অনেকেই পরিবেশন করেন সুরের মূর্ছনা।
বাতিঘর এখন ছড়িয়ে পড়েছে দেশের চারটি বিভাগীয় শহরে–চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটে। শাহবাগ ও বাংলাবাজারেও রয়েছে দুটি বিক্রয়কেন্দ্র। ২০১৭ সালে পূর্ণাঙ্গ প্রকাশনা সংস্থা হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠানটি চার শতাধিক বই প্রকাশ করেছে।
একুশ বছরে পা রাখার এই গৌরব উদযাপনে প্রতিষ্ঠানটি ছয় মাসব্যাপী উৎসবের আয়োজন করেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী ও সিলেটের শাখাগুলোয় হবে বইমেলা, আলোচনা, পাঠ, প্রকাশনা ও নানা সাংস্কৃতিক আয়োজন।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ত ঘর স জনশ ল প রক শ ব ত ঘর বইয় র
এছাড়াও পড়ুন:
উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের প্রশিক্ষণ শুরু ২০ অক্টোবর
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ২০ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি।
নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে (ইটিআই) অনুষ্ঠিত হবে এই প্রশিক্ষণ। ইতিমধ্যে ইউএনওদের এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য অনুমতি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।
আরো পড়ুন:
চার জেলায় নতুন ডিসি
ভূমি অফিসকে আস্থার প্রতিক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে: সিনিয়র সচিব
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব নুসরাত আজমেরী হকের সই করা চিঠি নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিবের কাছে পাঠানো হয়।
এর আগে নির্বাচন কমিশন সচিবালয় অনুমতির জন্য চিঠি দেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে।
চিঠিতে জানানো হয়, আগামী ২০ অক্টোবর থেকে প্রশিক্ষণ শুরু করা হবে। যা চলবে আগামী ১১ নভেম্বর (সম্ভাব্য) পর্যন্ত। প্রশিক্ষণটি হবে ১২টি সেশনে দুই দিনব্যাপী। ২টি করে ব্যাচে মোট ৫০ জন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (প্রতি ব্যাচে ২৫ জন) অংশগ্রহণ করবেন।
চিঠিতে সংযুক্ত তালিকা অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখ ও সময়ে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকায় ব্যাচভিত্তিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশক্রমে অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি