নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন মহল হইতে বারংবার দাবি জানাইবার পরও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কেন নিয়ন্ত্রণে আসিতেছে না, তাহার উত্তর মিলিতে পারে চট্টগ্রামের রাউজানে। বিশেষত সাম্প্রতিককালে সেইখানে ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের বিপরীতে পুলিশের প্রায় নিষ্ক্রিয় ভূমিকার নেপথ্যে যেই কারণগুলি উঠিয়া আসিয়াছে, সেইগুলি প্রণিধানযোগ্য। মঙ্গলবার প্রকাশিত সমকালের এক প্রতিবেদন বলিতেছে, চট্টগ্রামের উত্তরের এই জনপদে গত ১১ মাসে খুন হইয়াছেন ১৪ জন। কিন্তু সকল খুনের এজাহার ও আসামি তালিকা বিশ্লেষণ করিয়া দেখা গিয়াছে, ১৩টি খুনের এজাহারভুক্ত কোনো আসামিই গ্রেপ্তার হয় নাই। এমতাবস্থায় গত রবিবার পুনরায় লাশ পড়িয়াছে ঐ জনপদে। চাচির জানাজা শেষে ঔষধ ক্রয় করিতে গিয়া স্ত্রী-শিশুসন্তানের সম্মুখেই খুন হইয়াছেন যুবদল নেতা মোহাম্মদ সেলিম। ঘাতকেরা বোরকা পরিয়া আসিয়া গুলি করিয়া নিরাপদেই ফিরিয়া গিয়াছে।

পরিস্থিতি লইয়া রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলিয়াছেন, ১১ মাসে ১৫ হত্যাকাণ্ডের মধ্যে ৬-৭টি সন্ত্রাসী হত্যাকাণ্ড। বাকিগুলির কারণ জায়গাজমি ও আধিপত্য বিস্তার-সংক্রান্ত বিরোধ। তাঁহার মতে, সন্ত্রাসীরা অঘটন ঘটাইয়া এলাকায় অবস্থান করে না; পাহাড়ে গা-ঢাকা দেয়। কারণ যাহাই হউক, হত্যাকাণ্ড মাত্রই যে আইনশৃঙ্খলার অবনতির চরমতম উদাহরণ– অস্বীকার করা যাইবে না। আসামি আটক না হইবার নেপথ্যে পাহাড়-সমতলের ন্যায় ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য, তৎসহিত যে রাজনৈতিক পরিস্থিতিও গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক– উহা উপলব্ধি করিতে বিশেষজ্ঞ হইবার প্রয়োজন নাই। খোদ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা স্বীকার করিয়াছেন, রাউজানে রাজনৈতিক চাপের কারণেই আসামি ধরিতে বেগ পাইতে হয়। ইহাকে আমরা বলিতে পারি আইনশৃঙ্খলার রাজনৈতিক আমলনামা।
রাউজানের অভিজ্ঞতায় ইহা স্পষ্ট, একদিকে স্থানীয় পুলিশের বক্তব্যে হত্যাকাণ্ডগুলির একটা অংশকে স্বাভাবিক বলিয়া ধরিয়া লইবার প্রবণতা, অন্যদিকে অতীতের ন্যায় এখনও রাজনৈতিক চাপ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে ভূমিকা রাখিয়া চলিয়াছে। অথচ গণঅভ্যুত্থান-উত্তর পরিস্থিতিতে এই সকল কারণের একটাও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের পথে প্রতিবন্ধক হইবার কথা নহে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, বালুমহাল ও ইটভাটা দখলের ন্যায় ফৌজদারি অপরাধমূলক ঘটনা বিগত সরকারের সময়ে সংবাদমাধ্যমে কী সংখ্যক শিরোনাম হইয়াছিল, তাহা আমরা জানি। প্রধানত ক্ষমতাসীন দলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সংঘটিত হইত এই সকল ঘটনা। কিন্তু বর্তমানের তো দেশে দলীয় সরকার নাই। এই আমলেও দলীয় সরকারের আমলের ন্যায় রাজনৈতিক অপরাধপ্রবণতা এতটা দৃশ্যমান কেন? বলা হইতে পারে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বাহিনী পুলিশ এখনও তাহার স্বাভাবিক ধারায় প্রত্যাবর্তন করিতে পারে নাই। তবে এই পুলিশই তো বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে আন্দোলন দেখিলে বেশ তৎপর হইয়া উঠে। এমনকি আন্দোলন দমনে ক্ষেত্রবিশেষে বিগত আমলের অনেক অপকৌশল প্রয়োগেও তাহাদের উৎসাহে কমতি দেখা যায় না। শুধু জানমালের নিরাপত্তা বিধানের প্রশ্ন আসিলেই যদি তাহারা হীনবল হইয়া পড়ে, তাহা হইলে বুঝিতে হইবে সমস্যাটি অন্যত্র। 

কারণ যাহাই হউক, সরকারকে উপলব্ধি করিতে হইবে– তাহাদের দ্বিধা বা নিষ্ক্রিয়তার ফলস্বরূপ শুধু রাউজান নহে, সমগ্র দেশেরই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ক্রমাবনতিশীল। এই অবস্থা এমন সময়ে ঘটিতেছে যখন যেই কোনো উপায়ে জনজীবনে স্বস্তি ফিরাইতে সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। তাহাকে যেই কোনো অপরাধের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান লইতে হইবে। এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করিতে হইবে যেন পুলিশ একটা হত্যাকাণ্ডকে রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ বিরোধের ফল বলিয়া উপেক্ষা করিতে; কিংবা রাজনৈতিক চাপের অজুহাত দিয়া অপরাধকর্মে সংশ্লিষ্টদের গ্রেপ্তার করা হইতে বিরত থাকিতে না পারে। রাজনৈতিক দলগুলিরও এই ক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগিতা করিতে হইবে বলিয়া আমরা মনে করি। সমাজের সচেতন মহলকেও সোচ্চার হইতে হইবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হত য ক ণ ড পর স থ ত র জন ত ক সরক র অপর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

তরুণেরা চান শিক্ষা-স্বাস্থ্যে সংস্কার, ‘মব’ ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ

দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও মব (সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা) নিয়ে উদ্বিগ্ন তরুণেরা। তাঁরা চান সাধ্যের মধ্যে আধুনিক শিক্ষা ও উন্নত স্বাস্থ্যসেবা। সংস্কারের ক্ষেত্রেও তাঁরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও শ্রমবাজারকে অগ্রাধিকারে দেখতে চান।

তরুণদের এই মনোভাব উঠে এসেছে সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) ও একশনএইডের একটি জরিপে। জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে কর্মসংস্থান, শিক্ষা ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তরুণদের ভাবনা–সম্পর্কিত এই জরিপ গতকাল সোমবার প্রকাশ করা হয়।

জরিপে তরুণদের কাছে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ‘নিচের আর্থসামাজিক অবস্থা জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে—আপনি কি একমত?’ জবাবে বারবার অগ্নিসংযোগ, দস্যুতা (ছিনতাই) ও চুরি নিয়ে উদ্বেগের ক্ষেত্রে একমত পোষণ করেছেন ৮০ শতাংশ তরুণ উত্তরদাতা। দ্বিমত পোষণ করেছেন ৮ শতাংশের কম। বাকিদের মতামত ছিল না।

‘মব’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন প্রায় ৭২ শতাংশ উত্তরদাতা। জনপরিসর নিরাপত্তাহীন (বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে)—এ বিষয়ে একমত ৬১ শতাংশের বেশি উত্তরদাতা। বিষয়টি নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন ১৬ শতাংশ। অন্যায্য ও রাজনৈতিক পক্ষপাতদুষ্ট গ্রেপ্তার ও বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন ৫৬ শতাংশ তরুণ। এ প্রশ্নে দ্বিমত পোষণ করেছেন ১৫ শতাংশ।

জরিপে তরুণদের কাছে একটি প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ‘নিচের আর্থসামাজিক অবস্থা জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করছে—আপনি কি একমত?’ জবাবে বারবার অগ্নিসংযোগ, দস্যুতা (ছিনতাই) ও চুরি নিয়ে উদ্বেগের ক্ষেত্রে একমত পোষণ করেছেন ৮০ শতাংশ তরুণ উত্তরদাতা। দ্বিমত পোষণ করেছেন ৮ শতাংশের কম। বাকিদের মতামত ছিল না।

জরিপে উঠে এসেছে, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর ৭৮ শতাংশ তরুণের ব্যক্তিগতভাবে সুনির্দিষ্ট প্রত্যাশা ছিল। সাধ্যের মধ্যে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার প্রত্যাশা ছিল প্রায় ৭৩ শতাংশ তরুণের। ৬৭ শতাংশ তরুণের প্রত্যাশা সাধ্যের মধ্যে উন্নত ও সহজলভ্য স্বাস্থ্যসেবা। এরপর রয়েছে রাজনৈতিক দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি দূর করা। এই প্রত্যাশার কথা বলেছেন ৬৫ শতাংশের বেশি তরুণ। তরুণদের প্রত্যাশার মধ্যে শক্তিশালী বিচারব্যবস্থা, জনপরিসর ও অনলাইনে নিরাপত্তা, সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও প্রতিনিধিত্বমূলক রাজনীতি, ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ ইত্যাদিও রয়েছে।

দেশের আট বিভাগের ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ২ হাজার তরুণের (নারী ও পুরুষ) ওপর জরিপটি করা হয়েছে। গত ২০ মে থেকে ৩১ মে পর্যন্ত জরিপে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এতে গ্রাম ও শহরাঞ্চল থেকে উত্তরদাতা নেওয়া হয়েছে।

সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জরিপে আমরা দেখেছি, তরুণেরা আইনশৃঙ্খলা ও মব পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটা নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার খুব একটা সফলতা দেখাতে পারেনি।’

তরুণেরা কোন সংস্কার চান

জরিপে কর্মসংস্থান, অভিবাসন, রাজনীতি, নির্বাচন, অন্তর্বর্তী সরকারের পারদর্শিতা, সংস্কার ইত্যাদি নানা বিষয়ে তরুণদের প্রশ্ন করা হয়।

জরিপে প্রশ্নের জবাবে ৫৬ শতাংশ তরুণ সংস্কার নিয়ে বিভিন্ন মাত্রায় অবহিত থাকার কথা উল্লেখ করেছেন। ৪৪ শতাংশ বলেছেন, তাঁদের এ বিষয়ে মোটেও ধারণা নেই। নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন ও পুলিশ নিয়ে সংস্কারের কথা জানার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন ৫০ শতাংশ বা তার বেশি তরুণ। বাকি ক্ষেত্রে হার ৫০ শতাংশের কম। শ্বেতপত্র কমিটি সম্পর্কে শুনেছেন সবচেয়ে কম, ৬ দশমিক ৬ শতাংশ তরুণ।

সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়িত হবে কি না, এ প্রশ্নে অর্ধেকের কম তরুণ কমবেশি আশাবাদ দেখিয়েছেন। বাকিরা তেমন আশাবাদী নন অথবা নিশ্চিত নন। তরুণেরা কোন কোন ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সংস্কার চান, সেই প্রশ্নও করা হয়েছিল। উত্তরে সবচেয়ে বেশি জোর এসেছে শিক্ষা (৯৪ শতাংশ), স্বাস্থ্য (৯২ শতাংশ), শ্রমবাজার (৯০ শতাংশ), মানবাধিকার, অর্থাৎ নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা (৮৯ শতাংশ), প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার (৮৫ শতাংশ) ইত্যাদি ক্ষেত্রে।

অনুষ্ঠানে সেলিম রায়হান বলেন, সংস্কারের একটি সুযোগ এখন এসেছে। এটা কাজে লাগাতে না পারলে বড় পরিবর্তন আনা যাবে না। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের প্রত্যাশার বাস্তবায়ন হবে না।

জরিপে আমরা দেখেছি, তরুণেরা আইনশৃঙ্খলা ও মব পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এটা নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার খুব একটা সফলতা দেখাতে পারেনি।সানেমের নির্বাহী পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সেলিম রায়হানসরকার কেমন করছে

জরিপে ১৩টি বিষয় উল্লেখ করে সে ক্ষেত্রে সরকার কেমন করছে, তা জানতে চাওয়া হয়েছিল। দেখা গেছে, তিনটি ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ বা তার বেশি তরুণ সরকারকে সফল উল্লেখ করেছেন—মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সুরক্ষা (৫৬ শতাংশ), সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা (৫৩ শতাংশ) ও অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনা (৫১ শতাংশ)।

বেশি সংখ্যক তরুণ সরকারকে ব্যর্থ বলে উল্লেখ করেছেন রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ন্ত্রণ (৪০ শতাংশ), নারীর নিরাপত্তা (৩৯ শতাংশ), কর্মসংস্থান সৃষ্টি (৩৮ শতাংশ), স্বাস্থ্য খাতে দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ (৩৮ শতাংশ) এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় (৩৫ শতাংশ)। উল্লেখ্য, সফলতা ও ব্যর্থতার প্রশ্নে বড় অংশের উত্তরদাতা কোনো মতামত দেননি।

৪০ শতাংশের কম উত্তরদাতা সরকারকে সফল বলেছেন, এমন খাতের মধ্যে আরও রয়েছে বিনিয়োগ পরিবেশ, আমলাতন্ত্রে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি।

জরিপে প্রশ্নের জবাবে ৭৭ শতাংশ তরুণ বলেছেন, তাঁরা আগামী নির্বাচনে ভোট দেবেন। আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে কি না, সেই প্রশ্নে আশাবাদের মাত্রায় ভিন্নতা রয়েছে। ৪১ শতাংশ মোটামুটি, ২৮ শতাংশ অত্যন্ত ও ১২ শতাংশ পুরোপুরি আশাবাদী। ১৩ শতাংশ আংশিক আশাবাদী। ৬ শতাংশ মোটেও আশাবাদী নয়।

জরিপের তথ্যমতে, তরুণদের ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে রাজনীতির তথ্য পান। এরপর রয়েছে টেলিভিশন (৪৮ শতাংশ), বন্ধুবান্ধব (৩৭ শতাংশ), সংবাদপত্র (১৩ শতাংশ) এবং বাকিরা অন্যান্য মাধ্যম থেকে তথ্য পান।

কোন দল কত শতাংশ ভোট পাবে, সে সম্পর্কে ধারণা জানতে চাওয়া হয়েছিল তরুণদের কাছে। উত্তরদাতাদের মতে, আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি—৩৮ দশমিক ৭৬ ভোট বিএনপি পাবে। এরপর জামায়াতে ইসলামী ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট পাবে। এ ছাড়া বর্তমানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ এবং নিবন্ধন স্থগিত থাকা আওয়ামী লীগ যদি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ পায় তাহলে ১৫ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভোট পাবে বলে ওই তরুণেরা মনে করেন। তাঁদের মতে, জামায়াতের বাইরে অন্য ইসলামিক দলগুলো ৪ দশমিক ৫৯ শতাংশ ভোট পেতে পারে। জাতীয় পার্টি পাবে ৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ ভোট।

সেলিম রায়হান বলেন, এখানে যে মতামত এসেছে, তা শুধু বাছাই করা ওই তরুণদের মতামত। এটাকে দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর বা অন্যান্য বয়সের মানুষের মতামত হিসেবে বিবেচনা করা উচিত হবে না। বিশেষ করে রাজনীতির মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলোতে তা কখনোই করা সংগত হবে না।

জরিপের তথ্যমতে, তরুণদের ৮৭ দশমিক ৪ শতাংশ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে রাজনীতির তথ্য পান। এরপর রয়েছে টেলিভিশন (৪৮ শতাংশ), বন্ধুবান্ধব (৩৭ শতাংশ), সংবাদপত্র (১৩ শতাংশ) এবং বাকিরা অন্যান্য মাধ্যম থেকে তথ্য পান।

রাজনীতিতে যেসব তরুণ আসেন, তাঁরা সুযোগ–সুবিধা পাওয়ার আশায় নাকি সত্যিকারের পরিবর্তন বা আদর্শ নিয়ে আসেন, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে।একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবিররাজনীতিতে আগ্রহ নেই

রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক সেন্টার ইনে জরিপ প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে ফলাফল তুলে ধরেন সানেমের গবেষণা সহযোগী সাফা তাসনীম। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ভূঁঞা এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ কুদ্দুছ আলী সরকার অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন।

জরিপে ৮৩ শতাংশ তরুণ বলেছেন, তাঁরা রাজনীতিতে যোগ দিতে আগ্রহী নন। এর বড় তিনটি কারণ হলো রাজনৈতিক সহিংসতা, রাজনীতিতে দুর্নীতি ও নৈতিকতার ঘাটতি এবং পারিবারিক ও সামাজিকভাবে নিরুৎসাহিত করা। পেশাজীবনে তরুণেরা সরকারি চাকরিতে বেশি আগ্রহী।

জরিপের ফলাফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, রাজনীতিতে যেসব তরুণ আসেন, তাঁরা সুযোগ–সুবিধা পাওয়ার আশায় নাকি সত্যিকারের পরিবর্তন বা আদর্শ নিয়ে আসেন, তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তিনি আরও বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব সব সময় তরুণেরাই দিয়েছেন, কিন্তু নীতিনির্ধারণে গিয়ে আর এই তরুণেরা থাকেন না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দশ মাসে ২৬ খুনের ২২টির তদন্ত শেষ, গ্রেপ্তার ৮৪
  • মামলা ডিবিতে, ৮ আসামির রিমান্ড চেয়ে আবেদন
  • আগামী নির্বাচনে পুলিশ ও প্রশাসনের ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সুযোগ দেখছেন সিইসি
  • তরুণেরা চান শিক্ষা-স্বাস্থ্যে সংস্কার, ‘মব’ ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে উদ্বেগ
  • প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হয়নি, বাদী নিরাপত্তাহীন
  • ‘মবের’ বিষয়ে সরকার অত্যন্ত কঠোর: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • টেকনাফে যৌথবাহিনীর সঙ্গে ডাকাত-অপহরণকারীদের গোলাগুলি, অস্ত্র-গোলাবারুদ উদ্ধার
  • টেকনাফের অপহরণকারীদের সঙ্গে যৌথ বাহিনীর গোলাগুলি, অপহৃত একজনকে উদ্ধার
  • অন্তরে ত্যাগের মহিমা লালন করতে হবে